Advertisement
১১ মে ২০২৪

গর্ভবিজ্ঞান সঞ্চার যোজনা নিয়ে রাজ্যে আসছে আরএসএস

গর্ভবিজ্ঞান সঞ্চার যোজনা! বাৎস্যায়নের আগের কামশাস্ত্রকারদের নিদান তো আছেই। রয়েছে বিভিন্ন শাস্ত্রে পাওয়া আয়ুর্বেদ গবেষণার নির্যাস।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৭ ০৩:৫৭
Share: Save:

গর্ভবিজ্ঞান সঞ্চার যোজনা! বাৎস্যায়নের আগের কামশাস্ত্রকারদের নিদান তো আছেই। রয়েছে বিভিন্ন শাস্ত্রে পাওয়া আয়ুর্বেদ গবেষণার নির্যাস। যোগগুরু রামদেব এখনও এই বিষয়ে কোনও দাওয়াই দেননি বটে, তবে আরএসএস-এর স্বাস্থ্য শাখা ‘আরোগ্য ভারতী’ গুজরাত ও মধ্যপ্রদেশের পরে এ বারে তাদের এই প্রকল্প বড় করে আনতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গে।

কী এই গর্ভবিজ্ঞান সঞ্চার যোজনা? এর মূলমন্ত্র হল, সঙ্গমের আগে স্বামী এবং স্ত্রীকে বিচার করে নিতে হবে সেই মুহূর্তের গ্রহ-নক্ষত্রের সমাবেশ। অথবা বলা ভাল, ঠিকঠাক নক্ষত্র সমাবেশের মুহূর্তে মিলিত হতে হবে তাঁদের। তবেই নাকি আসবে উন্নততর সন্ততি! বাবা-মায়ের বোধবুদ্ধি সাদামাটা হলেও, এই মাহেন্দ্র-সঙ্গমের ফলে যে সন্তান আসবে সে বুদ্ধিতে হবে তুখোড়! শুধু রক্তই উজ্জ্বল হবে না, এই দাওয়াইয়ে সন্তান হবে গৌরবর্ণ!

সময় নির্বাচন নিয়েও ভাবতে হবে না। ‘আরোগ্য ভারতী’র এই যোজনার সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞ শাস্ত্রকারেরাই গ্রহনক্ষত্রের সমাবেশ এবং স্বামী-স্ত্রীর জন্মকুণ্ডলী মিলিয়ে আঁক কষে বাতলে দেবেন, উন্নততর সন্তানলাভে কোন সপ্তাহের কোন সময়টি তাঁদের মিলনের মাহেন্দ্রক্ষণ!

আরও পড়ুন:‘গুড বাই’ বলে সাগরের পথেই স্কুলের সৌমিত্র

নাৎসি জমানায় উজ্জ্বল আর্য রক্তের নিমিত্ত হিটলারের জারি করা ফরমানের কথা মনে পড়ছে? কিংবা গন্ধ পাচ্ছেন বর্ণবিদ্বেষের? এ সব ফুৎকারে উড়িয়ে দিচ্ছেন আরএসএস-এর শাস্ত্রবিদেরা। বরং তাঁরা আশাবাদী, এই পথেই মানুষের ক্রমমুক্তি হবে। যোজনার আহ্বায়ক মোহনদাস নারওয়ানী বলছেন, ‘‘আমাদের মূল লক্ষ্য উত্তম সন্ততির মাধ্যমে সমর্থ ভারত গড়ে তোলা। ২০২০-র মধ্যে কয়েক হাজার উত্তম সন্তানের জন্ম আমাদের লক্ষ্য।’’ ২০১৫-এ এটিকে তাদের জাতীয় কর্মসূচি হিসেবে তুলে ধরে আরোগ্য ভারতী। গুজরাত এবং মধ্যপ্রদেশে ১০টি শাখা গড়েছে তারা। পশ্চিমবঙ্গ তাদের পরবর্তী আঁতুড়ঘর। সম্প্রতি কলকাতায় এই নিয়ে একটি কর্মশালাও হয়ে গিয়েছে। ওই কর্মশালার আগে পশ্চিমবঙ্গের ‘কমিশন ফর প্রোটেকশান অব চাইল্ড রাইট’ বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে একটি মামলাও করে। শেষ পর্যন্ত আদালত শর্তসাপেক্ষে ওই কর্মশালাটি করার অনুমতি দেয়।

দিল্লি এবং মুম্বই ছাড়াও কর্নাটকের উদিপি, কেরলের কাসারগড়, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম এবং বিজয়ওয়াড়াতেও সম্প্রতি এমন কর্মশালা হয়েছে আরোগ্য ভারতীর উদ্যোগে। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, আশাতীত সাড়া পাওয়া গিয়েছে। নারওয়ানীর মতে, ‘‘স্বাভাবিক মিলনের পরিপন্থী নয় এই নিয়ম। তা ছাড়া শুধু মিলন-মুহূর্তই নয়। গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্য, চিন্তা এবং শাস্ত্রপাঠের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছে শিশুর ভবিষ্যৎ।’’ আরোগ্য ভারতীর অন্যতম সম্পাদক সঙ্ঘ প্রচারক অশোক বার্ষ্ণেয় এ-ও জানাচ্ছেন, ‘‘গর্ভাবস্থায় মিলন শাস্ত্রমতে বিপজ্জনক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE