Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রুদ্রনীল মামলার রায় ঘোষণা ২২শে

প্রায় এক দশক আগে টালিগঞ্জের নামী অভিনেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন এক উঠতি অভিনেত্রী। শুক্রবার সেই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। ২২ জুলাই রায় ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছেন বিচারক। তবে অভিযোগকারিণীর দাবি অভিযুক্ত শাসক দলের ঘনিষ্ঠ, প্রভাবশালী ব্যক্তি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৪ ০৪:০৪
Share: Save:

প্রায় এক দশক আগে টালিগঞ্জের নামী অভিনেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন এক উঠতি অভিনেত্রী। শুক্রবার সেই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। ২২ জুলাই রায় ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছেন বিচারক।

তবে অভিযোগকারিণীর দাবি অভিযুক্ত শাসক দলের ঘনিষ্ঠ, প্রভাবশালী ব্যক্তি। সম্প্রতি সরকারি পদও পেয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁর উপরে হামলা হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। এ জন্য রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিনেত্রী। বিজেপিও বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে।

অভিযোগের তির, অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের দিকে। টালিগঞ্জের পরিচিত মুখ রুদ্রনীল অধুনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সম্প্রতি তাঁকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মনোনীত করা নিয়েও বিতর্ক মাথা চাড়া দিয়েছিল। রুদ্রর বিরুদ্ধে অভিযোগ যিনি এনেছিলেন, তিনিও বাংলা টিভি সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন। আগামী ২২ জুলাই আলিপুর আদালতে মামলাটির রায় ঘোষণার কথা। ঠিক তার আগে ফের সরব হয়েছেন ওই তরুণী। অভিযোগকারিণীর বক্তব্য, “প্রচণ্ড ভয়ে রয়েছি। অভিযুক্ত সরকারি পদে থাকায় যে কোনও সময় আমার উপর হামলা হতে পারে। সেই কারণে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। বিজেপির কাছে গিয়েও আমি নিরাপত্তা চেয়েছি।”

রুদ্রনীল অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “বিষয়টি বহু বছর ধরে আদালতের বিচারাধীন। বিচারব্যবস্থার উপরে আমার আস্থা আছে। ওই তরুণীর অভিযোগ নিয়ে কিছু বলব না।”

শুক্রবার আলিপুর আদালতে এই ধর্ষণ মামলার শুনানি ছিল। শুনানি মিটতেই রাজ্য বিজেপি-র সম্পাদিকা দেবশ্রী চৌধুরীকে ফোন করে নিরাপত্তা চেয়েছেন অভিযোগকারিণী। দেবশ্রীর কথায়, “নির্যাতিতা মহিলাকে সব রকমের সহায়তা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে জাতীয় মহিলা কমিশন কিংবা দিল্লিতে নিয়ে গিয়েও তাঁর জন্য দরবার করব।”

মুখ্যমন্ত্রীকে বিজেপি নেত্রীর পাল্টা কটাক্ষ, “উনি (মমতা) তো কথায় কথায় বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতির কথা বলে থাকেন! ধর্ষণে অভিযুক্তকে শিক্ষা দফতরের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোই কি তাঁর সংস্কৃতির পরিচয়?” বিজেপি যে বিষয়টিকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করবে, এ দিন দেবশ্রীর কথাতেই তা স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, “পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করা না হলেও স্রেফ একটি ব্লগের বয়ানের ভিত্তিতেই মানবাধিকার কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের অপসারণের দাবি তুলেছিল তৃণমূল। এখন ধর্ষণে অভিযুক্তকে কেন সরকারি পদে বসানো হয়েছে, তা জানতে চাই।”

রুদ্রনীলের বিরুদ্ধে এই মামলায় অভিযোগকারিণী এবং তাঁর মা ছাড়াও এক জন ম্যারেজ রেজিস্ট্রার, চিকিৎসক, পুলিশ সকলেই সাক্ষ্য দিয়েছেন। অভিযোগকারিণীর তরফে আইনজীবী শান্তনু সিংহ এ দিন দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে বিচারক গৌরসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে ২০ পাতার একটি লিখিত সওয়াল পেশ করেন। তাতে বলা হয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত ২০০৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ ২০০৫ সালে ৩ মে (৩/২০০৫) এফআইআর রুজু করে। এর জেরে গ্রেফতার হয়ে ২৯ দিন জেলে ছিলেন রুদ্রনীল। ওই বছরের ১৭ জুন ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগ এনে পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করে।

এ দিন মামলাটির শুনানি শেষ হয়েছে। সরকারি আইনজীবী এবং অভিযুক্তের আইনজীবী অমিতাভ গঙ্গোপাধ্যায় সওয়াল শেষ করেছেন। অভিযুক্ত আদালতে গরহাজির থাকলেও আদালতে এসেছিলেন অভিযোগকারিণী। ২২ জুলাই, মামলার রায় ঘোষণার দিনে বিচারক রুদ্রনীলকে আদালতে অবশ্যই উপস্থিত থাকতে বলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

verdict actor rudranil 22june
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE