Advertisement
২৪ মে ২০২৪

হিংসা থামছে না হুগলিতে

ভোট পরবর্তী হিংসা বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর শপথের পরেও সেই হিংসা বন্ধ হল কই? হুগলির কোথাও

আগুনে পুড়ে গিয়েছে চাঁপদানির সিপিএম অফিস। নিজস্ব চিত্র।

আগুনে পুড়ে গিয়েছে চাঁপদানির সিপিএম অফিস। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৬ ০২:০৫
Share: Save:

ভোট পরবর্তী হিংসা বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর শপথের পরেও সেই হিংসা বন্ধ হল কই? হুগলির কোথাও

সিপিএমের পার্টি অফিসে আগুন, আবার কোথাও ঘরছাড়া সিপিএম কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর-সহ নানা ঘটনায় অভিযোগের তির সেই শাসক দলের বিরুদ্ধেই। যদিও অভিযোগ না মেনে তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, শনিবার সকালে বিধানসভায় যাওয়ার পথে সিপিএম কর্মীদের হাতে ‘হেনস্থা’ হয়েছেন চুঁচু়ড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার।

শুক্রবার চাঁপদানিতে তৃণমূলের বিজয়-মিছিলের পরে রাতে সিপিএমের লোকাল কমিটি অফিসে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুড়ে যায় দলীয় নথি, আসবাবপত্র, পাখা, মোটরবাইক। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

সিপিএমের চাঁপদানি লোকাল কমিটির সম্পাদক ধ্রুব নারায়ণ সুরের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই পেট্রোল দিয়ে আমাদের অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে চাঁপদানির প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক মুজফ্ফর খানের পাল্টা দাবি, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের জোট মানতে পারেননি সিপিএম কর্মীরা। তাঁরাই নিজেদের অফিসে আগুন লাগিয়েছে।’’ শনিবার সকালে দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সিপিএম কর্মীরা জিটি রোড অবরোধ করেন। ভদ্রেশ্বর থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। একই সময়ে নর্থব্রুক চটকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জিটি রোড অবরোধ করে শ্রমিকেরা। ফলে জিটি রোডে যানজট ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময়ে ওই এলাকা দিয়ে বিধানসভায় যাচ্ছিলেন চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। কয়েকজন সিপিএম কর্মী অসিতবাবুর গাড়িতে হামলা চালায় বলে পাল্টা অভিযোগ করেছে তৃণমূল। বিধায়কের উপর হামলার প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে চুঁচুড়ায় পাল্টা মিছিল করে তৃণমূল।

শুক্রবার রাতেই আরামবাগের পুইন গ্রামে দুই ঘরছাড়া সিপিএম নেতার বাড়ি ভাঙচুর এবং লুঠ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই রাতেই বনমালীপুরে এক সিপিএম কর্মীর খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দু’টি ঘটনাতেই অভিযুক্ত তৃণমূল। সিপিএমের আরামবাগ জোনাল কমিনিটর সম্পাদক পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এখনও পর্যন্ত শাসক দলের সন্ত্রাসে আরামবাগ বিধানসভা এলাকার মোট ৪৫ জন ঘরছাড়া হয়েছেন।’’ শুক্রবার রাতেই গোঘাটের শ্যামবাজারে সিপিএম নেতা সনৎ পাঁজাকে বাড়িতে না পেয়ে তাঁর ভাইকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এছাড়াও হামলার অভিযোগ উঠেছে হয়েছে খানাকুলের ঘোষপুর, পিলখাঁ, ঠাকুরানীচকে। যদিও সব অভিযোগ ‘সাজানো’ বলে দাবি করেছেন আরামবাগ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী। তাঁর দাবি, “বিরোধীদের তোলা মারধরের অভিযোগ মিথ্যা। আমাদের ছেলেরাই নিজের নিজের বুথে বিরোধীদের আগলে রেখেছে।”

হামলার অভিযোগ এসেছে জাঙ্গিপাড়া থেকেও। শনিবার দুপুরে স্থানীয় রহিমপুরে তৃণমূলের বিজয় মিছিল থেকে এক সিপিএম সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এ দিকে, গত কয়েক দিনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে জাঙ্গিপাড়ার জঙ্গলসুফি, বাহানা প্রভৃতি এলাকায় কয়েকজন ঘরছাড়া হয়েছেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনার জেরে জঙ্গলসুফি এলাকায় একটি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার হয়েছে। পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওখানে নিজেদের মধ্যেই একটা সমস্যা হয়েছে। মেটানোর চেষ্টা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE