পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে কিছু নকশাল সংগঠন ভাঙড়ে গোপনে আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করছে বলে ইতিমধ্যেই দাবি করেছে পুলিশ। কিন্তু ফের অশান্তির আশঙ্কায় পুলিশ এখনও সে ভাবে তল্লাশি শুরু করেনি। এ বার সেই আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের আশ্বাস দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার এবিপি আনন্দে এক সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কিছু অতি-বাম নেতা তিনটি গ্রামে ঘাঁটি গেড়ে মিথ্যা প্রচার করে আন্দোলন শুরু করেছে। বোমা-বন্দুক মজুত করেছে। বোমা-বন্দুক উদ্ধার করব।’’
ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের সাব-স্টেশন তৈরির কাজ শেষ হওয়ার মুখে গত ১৭ জানুয়ারি প্রকল্পের বিরোধিতায় তেতে উঠেছিল ভাঙড়। গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল দুই যুবকের। আক্রান্ত হয়েছিল পুলিশ। তার পর থেকে বেশ কিছুদিন ভাঙড় কার্যত ‘মুক্তাঞ্চল’ হয়ে ছিল। যেখানে পুলিশ ঢুকতে পারছিল না। ঘটনার ময়না-তদন্তে নেমে পুলিশ জানিয়েছিল, প্রথমে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী এবং স্থানীয় জমি-মাফিয়াদের মদতে গ্রিড বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। পরে আন্দোলনের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় নকশাল নেতাদের হাতে। প্রচার করা হয়, প্রকল্প হলে গ্রামবাসীদের স্বাস্থ্যহানি হবে। গোলমালে জড়িত অভিযোগে চার নকশাল নেতা-সহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ১০টি কুকুর কিনতে চায় রেল পুলিশ
তবু এখনও ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিডের কাজ শুরু হয়নি। মানুষের সুবিধার জন্যই যে ওই প্রকল্প এ দিন তা মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে জমি-মাফিয়াদের রুখতে তিনি যে কড়া অবস্থান নিয়েছেন তা-ও জানিয়ে দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওটা কেন্দ্রীয় প্রকল্প। প্রকল্পটি রূপায়িত হলে ওই এলাকা-সহ আরও কয়েকটি জেলা আলোকময় হয়ে যেত। আমি সে জন্যই প্রকল্পে সাহায্য করেছিলাম। কিন্তু কিছু জমি-মাফিয়া টাকা দিয়ে আন্দোলন করিয়েছে। ওখানে জমি-মাফিয়াদের যাতে সুবিধা না হয়, সে জন্য কৃষিজমির চরিত্র বদল করা (মিউটেশন) বন্ধ করে দিয়েছি।’’
কিন্তু প্রকল্পের ভবিষ্যৎ? মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি ওখানকার লোকদের বিষয়টি বিবেচনা করতে বলেছি। তিনটি গ্রামের লোকের জন্য অন্যেরা কেন বঞ্চিত হবেন? যদি অন্যায় কিছু হয়, নিশ্চয়ই দেখে নেব। কিন্তু প্রকল্প করতে দেব না, এটা ঠিক নয়।’’
পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে আন্দোলন থেকে গ্রামবাসীরা পিছু হটায় নকশাল নেতারা কিছুটা কোণঠাসা। তাঁদের সভা-সমাবেশে তেমন লোক হচ্ছে না। সেই কারণে বহিরাগতদের এনে আন্দোলন সংঘটিত করার চেষ্টা করছেন নকশাল নেতারা। কিছুদিন ধরে গ্রিড সংলগ্ন খামারআইট ও মাছিভাঙা গ্রামে হিন্দিভাষী লোকজনের আনাগোনা শুরু হয়েছে। তাঁরা গোপন বৈঠকও করছেন। সেখানে গ্রামবাসীদের থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। বুধবার রাতে মোটরবাইকে বাড়ি ফেরার পথে কাঁঠালিয়া এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন তৃণমূলের ভাঙড়-২ ব্লক সভাপতি ওইদুল ইসলাম। নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে নকশাল নেতারা ওই হামলা করে থাকতে পারেন বলে তদন্তকারীদের সন্দেহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy