সাজাপ্রাপ্ত: তমলুক জেলা আদালতে শিক্ষক।ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
ভাবলেশহীন মুখ। দেখে বোঝা দায়, কিছুক্ষণ আগেই তাকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছেন বিচারক।
নাবালিকা পরিচারিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় বুধবারই দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল তমলুক শহরের শালেগেছিয়ার বাসিন্দা প্রণব রায়। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের চাঠরা কুঞ্জরানি বাণীভবন হাইস্কুলের জীববিদ্যার শিক্ষক প্রণবের সাজা ঘোষণা হয় বৃহস্পতিবার। শিক্ষকের ভাগ্যে কী শাস্তি ঝুলছে, তা জানতে সকাল থেকেই ভিড় ছিল তমলুক আদালত চত্বরে। দুপুর আড়াইটে নাগাদ পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (দ্বিতীয়) সঞ্চিতা সরকার মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। যা শুনে নিহতের বাবা বলেন, ‘‘কঠিন শাস্তি চেয়েছিলাম। ফাঁসির আদেশ দেওয়ায় মনে হচ্ছে সুবিচার পেলাম।’’
সরকারপক্ষের আইনজীবী নবকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘ঘটনার ভয়াবহতা, মৃত্যু-যন্ত্রণা, মৃতের পরিবারের দুঃখ-কষ্ট আদালতে তুলে ধরা হয়েছিল। এ ধরনের নৃংশস অপরাধে যাতে নমনীয় পদক্ষেপ না করা হয়, সে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সামনে রেখে সর্বোচ্চ শাস্তির আর্জি জানানো হয়েছিল।’’ আইনজীবী মহলের একাংশের মত, শিক্ষকতার মতো পেশার একটা আলাদা মর্যাদা রয়েছে। ফলে, একজন শিক্ষক এমন ঘৃণ্য কাজ করলে, সমাজে তার প্রভাব পড়ে। তাই এ ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোট কবে? আজই চূড়ান্ত রায় দেবে কোর্ট
প্রণবের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করত উত্তরচড়া শঙ্করআড়ার বাসিন্দা ১২ বছরের মেয়েটি। ২০১২ সালের ২৩ মে তাকে আহত অবস্থায় তমলুকের নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। পরে তমলুক জেলা হাসপাতালে মারা যায় সে। প্রণবের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মেয়েটির বাবা। ধর্ষণ করে খুন এবং শিশুশ্রম প্রতিরোধ আইনে মামলা রুজু করে ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। চার্জশিটেও ধর্ষণ এবং শ্বাসরোধ করে খুনের কথা জানিয়েছিল পুলিশ।
যদিও প্রণবের দাবি ছিল, মেয়েটি বিষ খেয়েছে। এ দিন আদালত চত্বরেও সে জানায়, তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত হয়েছে। প্রণবের আইনজীবী গৌতম চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা উচ্চ আদালতে যাব। ঘটনার দিন প্রণব নিজেই মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকও ময়না-তদন্তের রিপোর্ট ছ’মাস পরে দিয়েছিলেন। সব উচ্চ আদালতে জানানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy