Advertisement
১৯ মে ২০২৪

শিল্প আনুন সব সাহায্য দেব: মমতা

বণিকমহলের একাংশের মতে, সরকার বছর বছর শিল্প-সম্মেলন করছে, রোড-শো হচ্ছে। তবু জমি আর ভাবমূর্তি — মূলত এই দু’টি কারণে বড় শিল্পের লগ্নিকারীরা এখনও এ রাজ্যকে বিনিয়োগের আদর্শ জায়গা বলে মনে করছেন না।

নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০৩:৪০
Share: Save:

সরকারের বয়স ছ’বছর হয়ে গেল। অথচ বড় শিল্পের দেখা প্রায় নেই! পরিস্থিতি বুঝেই শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে শিল্প-প্রতিনিধিদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর একান্ত আর্জি, শিল্প নিয়ে আসুন। চর্ম অথবা উৎপাদন শিল্প — আমরা সবাইকে জায়গা দেব।

বণিকমহলের একাংশের মতে, সরকার বছর বছর শিল্প-সম্মেলন করছে, রোড-শো হচ্ছে। তবু জমি আর ভাবমূর্তি — মূলত এই দু’টি কারণে বড় শিল্পের লগ্নিকারীরা এখনও এ রাজ্যকে বিনিয়োগের আদর্শ জায়গা বলে মনে করছেন না। তাঁদের মতে, বড় লগ্নি আসছে না দেখে রাজ্য মাঝারি ও ছোট শিল্প-স্থাপনে অগ্রাধিকার দিলেও কোনও রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে উৎপাদনভিত্তিক শিল্প দরকার। মুখ্যমন্ত্রীও তা বোঝেন। তাই ভাবমূর্তি ফেরাতে লগ্নি আনার মরিয়া আর্জি শোনা গেল তাঁর মুখে।

কলকাতার লাগোয়া পৈলানে শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে বিষয় ধরে ধরে আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এক সময় ঢুকে পড়েন শিল্পে। তাঁকে চর্মশিল্পের প্রতিনিধি তপন নন্দী জানান, বানতলার চর্মনগরীতে ৯৯টি প্লট খালি পড়ে রয়েছে। সেখানে ১০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হতে পারে। কিন্তু চর্মনগরীর নিকাশির উন্নয়নের জন্য আর্থিক সাহায্য প্রয়োজন। পাশাপাশি, রফতানির জন্যও সরকারের সাহায্য চাই। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি দেখার জন্য শিল্প দফতরের বিশেষ সচিব মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়িত্ব দেন।

এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীকে তপনবাবু জানান, গবাদি-বিধি চালু হওয়ায় তামিলনাড়ু, কানপুর, বুন্দেলখণ্ড থেকে অনেক চর্মশিল্প ব্যবসায়ী চলে আসতে চাইছেন। কথাটা লুফে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনি আমন্ত্রণ জানান। ওঁদের বলে দিন, আমরা বিধি মানছি না। যা জায়গা লাগবে, দিয়ে দেব। সব সাহায্য করব।’’

মাঝারি ও ছোট শিল্পের প্রতিনিধি গৌতম রায় উৎপাদন শিল্পের প্রসঙ্গ তোলেন। মমতা তাঁকে বলেন, ‘‘আপনারা উৎপাদন শিল্প নিয়ে আসুন না। আমাদের তো ১০০০ একর জমি রেডি আছে গোয়ালতোড়ে। কোনও অসুবিধা হবে না।’’ গৌতমবাবু এ প্রসঙ্গে চিনের কথা তুললে মমতা বলেন, ‘‘চিন তো উৎপাদন শিল্পে ভাল। আপনারা চিনকে বলুন না। এখানে কোনও অসুবিধা হবে না। আমরা সব করে দেব।’’

এ দিনই রাজ্যে শিল্পের বিবর্ণ চেহারা তুলে ধরে মমতা সরকারকে তোপ দাগেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস। দুর্গাপুরে ‘মোদী মেলা’র সূচনা করে তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে অরাজকতা চলছে। তাই কেউ লগ্নি করেন না। আমার ডাকে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যে এই রাজ্যের লগ্নিকারীরা ঝাড়খণ্ডে যেতে শুরু করেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE