Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

টি উইথ কর্ণ

কফিখোর! নিজের কোম্পানি ধর্মা প্রোডাকশনের নীচেও বিশাল কফি আউটলেট। কিন্তু এই ইন্টারভিউ চলাকালীন কফি নিষিদ্ধ। চা-ই যে একমাত্র সার্ভ করা হবে, আগে থেকে ঠিক আছে। কলকাতা থেকেও তাঁর জন্য উপহার হিসেবে নিয়ে আসা দার্জিলিং চায়ের প্যাকেট। ইন্টারভিউয়ের শর্তসাপেক্ষে অবশ্য ওটা তাঁর হাতে আগাম তুলে দেওয়া যাবে না। কারণ আনন্দplus-এর জন্য ‘টি উইথ কর্ণ’ ইন্টারভিউটা আজ ধর্মা প্রোডাকশনের খারের অফিসে বসে হচ্ছে হুবহু ‘কফি উইথ কর্ণ’র নিয়ম মেনে। যেখানে বাজ়ার রাউন্ড আছে। র‌্যাপিড ফায়ার আছে। গিফ্ট হ্যাম্পারও রয়েছে। কলকাতা থেকে আগত সেই গিফ্ট হ্যাম্পার, যার ভিতর শৈলনগরীর চায়ের একাধিক প্যাকেট। কিন্তু পাওয়ার জন্য কর্ণ জোহর-কে মনের কথা অকপটে বলতে হবে গৌতম ভট্টাচার্য-কে। নইলে হ্যাম্পার হাতছাড়া... কফিখোর! নিজের কোম্পানি ধর্মা প্রোডাকশনের নীচেও বিশাল কফি আউটলেট। কিন্তু এই ইন্টারভিউ চলাকালীন কফি নিষিদ্ধ। চা-ই যে একমাত্র সার্ভ করা হবে, আগে থেকে ঠিক আছে। কলকাতা থেকেও তাঁর জন্য উপহার হিসেবে নিয়ে আসা দার্জিলিং চায়ের প্যাকেট। ইন্টারভিউয়ের শর্তসাপেক্ষে অবশ্য ওটা তাঁর হাতে আগাম তুলে দেওয়া যাবে না। কারণ আনন্দplus-এর জন্য ‘টি উইথ কর্ণ’ ইন্টারভিউটা আজ ধর্মা প্রোডাকশনের খারের অফিসে বসে হচ্ছে হুবহু ‘কফি উইথ কর্ণ’র নিয়ম মেনে। যেখানে বাজ়ার রাউন্ড আছে। র‌্যাপিড ফায়ার আছে। গিফ্ট হ্যাম্পারও রয়েছে। কলকাতা থেকে আগত সেই গিফ্ট হ্যাম্পার, যার ভিতর শৈলনগরীর চায়ের একাধিক প্যাকেট। কিন্তু পাওয়ার জন্য কর্ণ জোহর-কে মনের কথা অকপটে বলতে হবে গৌতম ভট্টাচার্য-কে।

ছবি: সাত্যকি ঘোষ।

ছবি: সাত্যকি ঘোষ।

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০০:১৭
Share: Save:

চারজন পরিচালককে তাঁদের যোগ্যতা অনুযায়ী র‌্যাঙ্ক করুন তো প্লিজ। আদিত্য চোপড়া, ফারহান আখতার, সুজিত সরকার, কর্ণ জোহর। কেন র‌্যাঙ্ক করলেন সেটাও বলতে হবে।

এক, আদিত্য চোপড়া। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে সবচেয়ে আইকনিক লাভস্টোরি বানিয়েছে। আদি একনম্বর।
এর পর সুজিত সরকার। সুজিতকে আমি দারুণ পছন্দ করি। আজ নয়, সেই ‘ইয়াঁহা’ যখন বানিয়েছিল তখন থেকে। ‘ইয়াহাঁ’তে টেকনিক্যালি দুর্ধর্ষ কাজ করেছিল ও।
তিন নম্বর আমি।
চার ফরহান আখতার। আমি ফরহানের দারুণ ভক্ত। যদিও আমার ধারণা, পরিচালকের চেয়ে অভিনেতা হিসেবে বড়। ওর স্ক্রিন প্রেজেন্সটা দুর্দান্ত। ‘দিল ধড়কনে দে’র ট্রেলরে ফরহান শুধু শুধু এসে দাঁড়াচ্ছে তাতেই মনে হচ্ছে কী দারুণ। ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ বা ‘রক অন’য়ে ওর অ্যাকটিং তো বাদই দিচ্ছি। যদিও ‘দিল চাহতা হ্যায়’তে ফরহান পরিচালক হিসেবে একটা ট্রেন্ড তৈরি করেছিল।

দুইতে সুজিত সরকার, তিনে আপনি— র‌্যাঙ্কিংটা ব্যাখ্যা করবেন?

সিম্পল। সুজিত আমার চেয়ে অনেক ভার্সেটাইল। ‘ম্যাড্রাস ক্যাফে’তে ও দারুণ কাজ করেছিল। এ বার যে বিষয়টা বেছেছে সেটা একেবারে চমকপ্রদ। আমি তো ‘পিকু’ দেখে জাস্ট ভেসে গিয়েছি। সুজিত আর স্ক্রিপ্ট রাইটার জুহি চতুর্বেদী মিলে দুর্দান্ত একটা টিম তৈরি করে নিয়েছে। কী বানিয়েছে ছবিটা! দেখতে দেখতে সত্যি বলছি আমার বাবাকে ফিরে পাচ্ছিলাম। চোখে জল এসে গিয়েছে ‘পিকু’ দেখে। আমার বাবারও ঠিক পেট নিয়ে এ রকম সমস্যা ছিল। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা। আর আমাদের বাবা-ছেলের কথোপকথন অবিকল এই লাইনে চলত। এই বয়সি মানুষেরা অনেক সময় ঠিক এ রকমই আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েন।

আমি পুরুষ-নারীর সম্পর্ক, তাদের মানসিক গঠন নিয়ে, তাঁদের আবেগ নিয়ে নিশ্চয়ই ছবি বানাতে পারি। কিন্তু এর পরের সীমান্তটা আমার কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে যায়। সুজিতের বহুমুখিতা আমার নেই। ‘ভিকি ডোনর’ যেমন! কী বানিয়েছিল! সেরা ডিরেক্টরদের র‌্যাঙ্কিংয়ে তাই নিঃসন্দেহভাবে ও আমার আগে থাকবে।

টক শো হিসেবে র‌্যাঙ্কিং করতে হবে। সিমি গারেওয়ালের ‘র‌্যঁদেভু উইথ সিমি’, কর্ণ থাপারের ‘ডেভিলস অ্যাডভোকেট’ আর অবশ্যই ‘কফি উইথ কর্ণ’।

(একটু ভেবে) ‘কফি উইথ কর্ণ’, ‘ডেভিলস অ্যাডভোকেট’, ‘র‌্যঁদেভু উইথ সিমি’।

তিনজন ক্রিকেটারের নাম বলছি— এঁরা মনে করা যাক আপনার পরিচালনায় বলিউডে অভিনয় করবেন। রাহুল, সৌরভ, সচিন। নায়িকা হিসেবে কাকে কাকে বাছবেন?

উঁউউ... সচিনের জন্য ক্যাটরিনা। দ্রাবিড়ের জন্য করিনা। কে বাকি থাকল?

সৌরভ...

সৌরভের এগেনস্টে কাজল। (শোনা মাত্র এতক্ষণে নীরবে ছবি তোলায় ব্যস্ত ফোটোগ্রাফার সাত্যকি চেঁচিয়ে ফেলল, ‘‘এটা দারুণ পেয়ার’’)

এই সিলেকশনগুলো কী ভাবে করলেন?

কোনও কিছু ভেবে করিনি। যেটা যে ভাবে মনে হল, সে ভাবে বললাম। মাথার মধ্যে ঝলক দিল সৌরভ আর কাজল একসঙ্গে।

এ বার ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে পরোপকারী স্টারদের র‌্যাঙ্কিং করে দিন। মিঠুন, সলমন, সঞ্জয় দত্ত...

নম্বর ওয়ান হ্যাজ টু বি সলমন। সলমনের চেয়ে বড় হার্ট ইন্ডাস্ট্রিতে আমি দেখিনি। ওর মতো দিলদরিয়া মানুষ আমি দেখিনি। কত লোককে যে সাহায্য করেছে কোনও ইয়ত্তা নেই। আমি নিজে জানি, কত বার আমায় ফোন তুলে বলেছে, ‘‘একে একটু চান্স দাও... ওকে দেখো...’’ চেনে না, জানে না, কেউ একজন এসে বলল, অমুকটা দরকার। করে দিয়েছে। এমনি হয়তো হেল্থ ক্লাবে কোনও মোটা মহিলাকে দেখল, যিনি রোগা হওয়ার প্রাণান্তকর চেষ্টা করেও পারছেন না। ব্যস, সলমন গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল। ওকে আমি এক নম্বরে এই জন্যই রাখব যে, উপকার করে ও নিজে কী পাবে তার চিন্তা কখনও করেনি। ও হয়তো দারুণ একটা ঘড়ি পরেছে, আমি খুব প্রশংসা করলাম। সলমন এমন টাইপের যে, ঘড়িটা খুলে মুহূর্তের মধ্যে আপনাকে দিয়ে দিতে পারে। ব্যস্ত লোকেদের সবচেয়ে দামি জিনিস হল সময়। সেই সময় বস্তুটাই সলমন অকাতরে মানুষকে বিলিয়ে থাকে।

এত দিলদার বলছেন, অথচ ‘কফি উইথ কর্ণ’‌য়ের শুরুর দিকের বছরগুলোতে আপনি তো সলমনকে একটা এপিসোডেও আনতে পারেননি।

তার কারণ সলমন শোয়ের চরিত্রটার ব্যাপারে সন্দিগ্ধ ছিল। ওর মনে হয়েছিল এটায় বড় বেশি গসিপ হয়। লোকে আলগা সব কথাবার্তা বলে। একে তাকে দুমদাম আক্রমণ করে।

তার পর?

তার পর আমি ওকে বোঝালাম শো-টা মোটেও কেবল প্রাইভেট কথাবার্তা নয়।

এটা একজন মানুষকে কাছ থেকে দেখানো। আমি বললাম সেলিম আঙ্কলকেও তোমার সঙ্গে নিয়ে এসো। আমার তো মনে হয়, সলমনের এপিসোডটা ‘কফি উইথ কর্ণ’‌য়ের সেরাগুলোর একটা। যেখানে লোকে দেখতে পেল দেশের সবচেয়ে বড় সুপারস্টারও নিজের বাবার সামনে কেমন ভিতু ভিতু, ভালনারেবল আর নতজানু।

মিঠুন?

মিঠুনদার ব্যাপারে আমি অতটা জানি না। আমার বাবা ওকে খুব ভাল জানতেন। আর দারুণ সম্মান করতেন। বলতেন, মিঠুনের মতো বড় দিল পাওয়া যায় না। আমার সঙ্গে দেখা হলেও মিঠুনদা সব সময় আদুরে কাকুসুলভ।

সঞ্জয় দত্ত আরেক জন। এক্সেপশনাল হার্ট। লাভ ক্ষতির হিসেবই করে না। দিন হোক রাত হোক সব সময় আপনার জন্য আছে। আমার বাবাকে সঞ্জয় বলত, গুড্ডা আঙ্কল। আমি মানুষ হয়েছি সঞ্জয়ের চোখের সামনে। বাবা এই তিন জনকেই খুব ভালবাসতেন। তার সঙ্গে শাহরুখকে। শাহরুখও খুব বড় মনের মানুষ। ভীষণ উদার। তবে সলমনের সঙ্গে ওর উদারতার ধরনে কিছু তফাত আছে।

যেমন?

দু’জনে দু’ধরনের। শাহরুখ জীবনের সব কিছু ছেড়ে দিতে পারে স্রেফ একটা দুর্দান্ত ফিল্ম বানানোর জন্য। একটা দারুণ সিন তৈরি করতে সর্বস্ব দিয়ে দিতে পারে। আপনি যদি নিজে গিয়ে বলেন আপনার হাতে দারুণ একটা স্ক্রিপ্ট আছে, কিন্তু আপনার পেমেন্ট করার মতো টাকা হাতে নেই, তখন ও বলবে, ঠিক আছে টাকাটা আমি বিয়ে বাড়িতে নেচে তুলে নেব। ইভেন্ট থেকে তুলে নেব। দরকার হলে অ্যাঙ্করিং করে নেব। আপাতত চলো, তোমার ফিল্মটা কম পয়সায় করে আসি।

দীপিকা-সোনম বনাম রণবীর

কর্ণ: রণবীরকে কী উপহার দেবেন?

দীপিকা: ওকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি। এক প্যাকেট কন্ডোম দেব।

কর্ণ: (বিস্ফারিত) ক্যাটরিনাকে কী বলবেন?

দীপিকা: বলব, তোমার পাসপোর্টটা আমি একটু দেখতে চাই।

অন্য টক শো গুলোতে লোকে এত সতর্ক। অথচ আপনার কাছে এমন স্বতঃস্ফূর্ত— এর রহস্যটা কী? ব্যক্তিগত সম্পর্ক?

হ্যাঁ ওরা আসে আমার সঙ্গে আড্ডা মারতে। ওদের কাছে এই আড্ডাটা আমার বাড়িতে বসে আড্ডা মারার মতো। বা কর্ণের সঙ্গে লাউঞ্জে বসা। কফি শপে বসা। আমিও সেই মেজাজটাই রাখতে চাই। ওদের সামনে পিছনের ক্যামেরাগুলো আমি লুকিয়ে রাখি। যাতে ইনহিবিশন এসে না যায়। যাতে বডিটা রিল্যাক্সড থাকে। আমি ওদের সঙ্গে কথাবার্তায় বেয়াড়া লাইনে চলে যেতে পারি, কারণ আমার সেই সম্পর্কটা আছে। বাকি মিডিয়া হয়তো একই প্রশ্ন করবে। কিন্তু আমি বেশিক্ষণ ঘ্যানঘ্যান করে ঠিক উত্তরটা আদায় করে নিতে পারব।

এ রকম হয় না যে, কেউ কিছু বলে ফেলে পরে আপনাকে ফোন করে বলেছে, ‘‘প্লিজ কর্ণ, ওই জায়গাটা এডিট করে দাও।’’

প্রচুর হয়। নিয়মিত হয়। ইন ফ্যাক্ট হয় না এমন এপিসোড সংখ্যায় কম।

আপনি তখন সেই অনুরোধ রাখেন?

অবশ্যই রাখি। আমি চাই না আমাকে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে কেউ বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ুক। অনেক সময় আমি নিজেও এডিটিং টেবিলে কোনও সেন্সিটিভ জায়গা থাকলে ফোন করে জিজ্ঞেস করি, ‘‘এটা কেটে দিচ্ছি। বড় বাড়াবাড়ি করে ফেলেছ।’’ আমি যদি সত্যি ইন্ডাস্ট্রিতে কে কার সঙ্গে প্রেম করছে লিখি, কে কী করছে বলি— তা হলে আমার শো-টা ভারতীয় টেলিভিশনের সফলতম শো হবে। কিন্তু তার পরের দিন আমার স্টুডিয়োয় কেউ আসবে না। (হাসি)

এত সব গোপন খবর জেনেও উদার হওয়ার দরকার কী?

কারণ, এটা আমার প্রধান জীবিকা নয়। আমি নিছক টক শো হোস্ট নই। আমি মূলত একজন ডিরেক্টর। একই লোকগুলো যদি এসে আমায় বলে, ফিল্মের অমুক সিনটা কেটে বাদ দাও, আমি শুনব না। শুনবই না। কিন্তু এখানে আমার অসুবিধা নেই। আর একটা কথা মাথায় রাখবেন, ‘কফি উইথ কর্ণ’‌য়ে যারা আসে, সবাই জেনেই আসে যে এটা ঠিক মন্দিরে আরতি চড়ানোর মতো কিছু হতে যাচ্ছে না। ‘কফি উইথ কর্ণ’ মানে গ্ল্যামার। স্ক্যান্ডাল। পরচর্চা। ফ্যাশন। স্টাইল। প্রাইভেট সব প্রশ্ন। ওরা সেটা জেনেই শো-তে আসে।

আপনার সবচেয়ে বিতর্কিত শো বোধহয়, রণবীরের বিরুদ্ধে দীপিকা আর সোনম।

ও গড! ওটা যা হয়েছিল! দু’টো মেয়ে তো (দীপিকা আর সোনম) সারাক্ষণ খিল্লি করে, ইয়ার্কি মেরে চলে গেল। আমার হল কেলো। শো-টা এয়ার হওয়া মাত্র চারিদিকে ঝড়। ঋষি আঙ্কল (কপূর) তো চটে লাল। আমাকে ওঁর কাছে ক্ষমা চাইতে হল। আমাদের কিন্তু রণবীরকে ছোট করে দেখানো মোটেও উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু বিতর্কটা কন্ট্রোলের বাইরে চলে যায়।

এ বার বা‌জ়ার রাউন্ড শুরু করছি। কোনও বাজ়ার আমার সঙ্গে আনিনি। মুখে বলব। লাস্ট র‌্যাপিড ফায়ার রাউন্ড।

অ্যাবসোলিউটলি ওকে।

কর্ণ জোহর ‘বোম্বে ভেলভেট’‌য়ে ভিলেনের রোলে অভিনয় করেছেন কারণ:

১) তিনি নতুন কোনও চ্যালে়ঞ্জ খুঁজছিলেন

২) তিনি জাস্ট বসে বসে বোরড হয়ে যাচ্ছেন

৩) কর্ণের হাতে অনেক সময় কারণ শাহরুখ খান অন্য পরিচালকের কাজে শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত

প্রথম কারণটা। আমি চ্যালেঞ্জ নিতে খুব ভালবাসি। সব সময় নিজেকে নিজে ধাক্কা দিতে নতুন কিছুর পিছনে ছুটতে ভালবাসি। সেটা রিয়েলিটি শো-র বিচারক হওয়া হতে পারে। অ্যাওয়ার্ড শো স়ঞ্চালনা হতে পারে। এমনকী কখনও বোরড হলে আমি জামাকাপড়ের ডিজাইন করতেও বসে যাই। এসআরকে অন্যত্র এনগেজড তো কী। সেই সময় অনুরাগ কাশ্যপের আমাকে ভিলেন ভেবে ছবি বানাতে চাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। আমার মনে হয়েছিল, আর কি কখনও কেউ আমাকে ভিলেন ভেবে ছবি অফার করবে? এই জীবনে কি আর কখনও আমি আবার ফিল্মে অভিনয় করব? তাও অনুরাগ কাশ্যপের মতো ডিরেক্টরের ফিল্মে? অনেক ভেবে দেখলাম, আমি যদি ব্যর্থ হই। আমার কোর ব্যবসা তো তাতে বিপন্ন
হচ্ছে না রে বাবা। যা হল, ফিল্ম পরিচালনা। আমায় বড়জোর লোকে বলবে ফেলড অ্যাক্টর। বলুক না। ইটস ওকে উইথ মি। বরং অনুরাগ কাশ্যপের সেটে গিয়ে অনেক কিছু শিখলাম। নিজেকে মনে হচ্ছিল ফিল্ম স্কুলের শিক্ষার্থী।

তিনটে জুটির নাম বলছি। সবচেয়ে বেশি চর্চিত কারা, অর্ডারে সাজিয়ে দিতে হবে:

অমিতাভ-রেখা

শাহরুখ-প্রিয়ঙ্কা

দীপিকা-রণবীর কপূর

(সভয়ে) ওরে বাবা। না না, এই সব সম্পর্ক নানা ধারণা আর মতবাদ প্রসূত। কে জানে এই সব সত্যি কি না! আমি এর মধ্যে ঢুকতেই চাই না। ছাড়ুন ছাড়ুন।

আরে প্রশ্নটাই তো শুনলেন না।

না, না, আমি এর মধ্যে ঢুকতে চাই না। মানুষের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কেচ্ছা। যার সততা নিয়ে ঘোরতর সন্দেহ আছে। এটার উত্তর দেওয়া মানে বিষয়টাকে সম্মান জানানো। প্লিজ পরের প্রশ্ন।

অভিষেক বচ্চনের মুম্বই ইন্ডাস্ট্রিতে ভবিষ্যৎ কী?

ভবিষ্যৎ খুব উজ্জ্বল।

সিরিয়াস না ইয়ার্কি?

সিরিয়াস। এমন একটা সময় আসবে যে দিন লোকে ওকে বংশ নয়, অভিনয় দিয়ে চিনবে।

কর্ণ জোহরের বয়স পঞ্চাশ এবং... সেনটেন্সটা শেষ করুন।

এবং কর্ণ জোহর একই কাজ করে যাচ্ছেন, যা এত কাল করেছিলেন। আর কর্ণ জোহরের ষাট বছর বয়সেও উনি ঠিক তা-ই করে যাবেন যা করে যাচ্ছিলেন প়ঞ্চাশে। কর্ণের হয়তো কাজের আওতা বাড়বে, হয়তো আরও নাম হবে। কিন্তু কাজ করে যে এক্সাইটমেন্টটা উনি পান সেটা তখনও একই রকম থাকবে।

একটা প্রশ্ন করছি। সত্যি উত্তর দেবেন।

সত্যিই তো দিচ্ছি।

মাঝেমাঝে এড়িয়ে যাচ্ছেন। এটা এড়াবেন না। প্রশ্নটা হল, অ্যাওয়ার্ড ফাংশন মানে স্রেফ সময় নষ্ট আর সাজানো।

একদম ঠিক। যদি না সেই ফাংশনে যাওয়ার জন্য আপনি ভাল টাকা পান।

তাই?

হ্যাঁ, জাভেদ আখতার আমায় শিখিয়েছেন, সেই অ্যাওয়ার্ড ফাংশনটাই সিরিয়াসলি নেবে যেটায় তুমি নিজে অ্যাওয়ার্ড পাবে।

র‌্যাপিড ফায়ার শুরু করছি

হুঁ।

একটা শব্দে তিন খান-এর নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক।

ওরে বাবা! একটা শব্দে ওদের নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক... কী বলি... কী বলি...

অসুবিধা হলে একটা গোটা সেনটেন্স নিন। হঠাৎ করে আপনি কিন্তু স্লো হয়ে যাচ্ছেন কর্ণ...

তিন জনেরই জন্ম ১৯৬৫-তে। একই বছরে জন্ম হওয়াটাই বোধহয় ওদের একসূত্রে বেঁধে রেখেছে।

শূন্যস্থান পূরণ করুন প্লিজ। কর্ণ জোহর ইজ সিঙ্গল বিকজ...

বিকজ, বিয়েতে তার কোনও ইন্টারেস্ট নেই বলে।

ইন্ডাস্ট্রির কয়েকটা বহু পরিচিত মন্তব্যের ব্যাখ্যা করুন, আমি পরপর বলব।

শিওর।

যে দিন ঠিক স্ক্রিপ্টটা হাতে আসবে সে দিন আমি ওর কাছেই যাব

তার মানে সেই স্ক্রিপ্টটা আমার আছে। এবং আমি অলরেডি ওর কাছে ‘না’ শুনেছি।

আমরা খুব ভাল বন্ধু।

মানে, আমরা নিছক বন্ধু নই। তবে এই লাইনটা আজকাল আর কেউ বলে না। এইটিজে চলত।

আমার স্বামী খুব আন্ডারস্ট্যান্ডিং আর আমাদের মধ্যে দারুণ প্রেম।

মানে, আমি অবধারিত এ-ধার ও-ধার করে বেড়াচ্ছি।

ইন্ডাস্ট্রিতে কাস্টিং কাউচ আছে, তবে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, আমাকে তার মধ্যে যেতে হয়নি।

আমার ঠিক কাস্টিং কাউচটায় বিশ্বাস হয় না। আমার মনে হয় না, বড় বড় যে সব ছবি, সেই লেভেলে এই ব্যাপারটা চালু আছে। বরং আমার মনে হয় যারা সেক্স করতে চায়, তারা সেক্স করে। জব অ্যাজেন্ডা নয়, সেক্স অ্যাজেন্ডায়।

আর সেটাকে কাস্টিং কাউচ নাম দিয়ে দেয়...

এটাকে বোধহয় ক্যাজুয়াল সেক্স বলে। বা ক্ষেত্র বিশেষে কমিটেড সেক্স। সেক্স-এর ইচ্ছেই তার কারণ।

আই অ্যাম সিঙ্গল, নট রেডি টু মিঙ্গল... মানে কী?

মানেটা কি কাগজে খোলাখুলি বলাটা ঠিক হবে!

বলুন না।

মানে মার্জিত ভাষায়—আমি সব জায়গাতেই ঘুরে ঘুরে মধু খাচ্ছি।

ও কে। এ বার তিনজন সুপারস্টারের অভিনেতা হিসেবে র‌্যাঙ্কিং করতে হবে। আমির, শাহরুখ, হৃতিক।

এই রে, এটা পারব না। চাপ হয়ে গেল। তা ছাড়া আমার মনে হয়, অভিনেতাদের র‌্যাঙ্কিং হওয়া উচিতও নয়। লেজেন্ডদের এ ভাবে এক, দুই, তিন করে বিচার আমি সমর্থন করি না।

তাতে কী আছে?

(অনিচ্ছা সত্ত্বেও) হৃতিক এই দু’জনের চেয়ে অনেক জুনিয়র। আমির আর শাহরুখ ওর তুলনায় দীর্ঘ এত বছর ধরে কনসিস্টেন্ট। এতগুলো বছর ফাটিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তবে কেউ যদি এই ইন্ডাস্ট্রিতে ওদের অ্যাক্টর-স্টার হিসেবে মহড়া নিতে পারে, সেটা হৃতিক। আর অবশ্যই রণবীর।

আমাকে বলছেন, আমির শাহরুখ র‌্যাঙ্ক করা যায় না। অথচ ‘কফি উইথ কর্ণ’‌য়ে রানি মুখোপাধ্যায়কে ঠিক এই প্রশ্নটাই আপনি করেছিলেন! রানি উত্তর দেন, আমির।

রানি ওর মতো উত্তর দিয়েছে। ওর ব্যাপার। আমি তর্কে ফাঁসতে চাই না।

ইন্ডাস্ট্রির বহুল প্রচারিত পাঁচটা মিথ্যে কী কী?

আমি পাঁচ মিনিট দূরে।

সরি তোমার ফিল্মের জন্য ডেট বার করতে পারছি না গো।

আমি অন্যের ভাল কাজ দেখলেও ভীষণ অনুপ্রাণিত হয়ে পড়ি।

ইঁদুর-দৌড়ে নাম লেখানোর কোনও বাসনা আমার নেই।

ওই সব পুরস্কার-টুরস্কারে আমার কোনও আগ্রহ নেই।

এই যে নায়িকাদের সঙ্গে আপনার এত ভাল সম্পর্ক বলে শোনা যায়। কখনও এমন কিছু কি এঁদের কারও সঙ্গে ঘটেছে, যা ভাবলে এখন আফসোস হয়?

দু’টো ঘটনা। দু’টোই আমার দোষ। একবার ‘কাল হো না হো’র সময় করিনার সঙ্গে আমার ঝগড়া হল। আমি সেই সময় একটু বাচ্চাদের মতোই ব্যবহার করে ফেলেছিলাম। এমনিতে আমাদের মধ্যে ভাইবোনের মতো খুনসুটি চলে। কিন্তু সেই সময় রাগ করে আমি টানা এক বছর ওর সঙ্গে কথা বলিনি। রেগে গুম হয়ে ছিলাম। সেটা ভেবে আক্ষেপই হয় যে করিনার সঙ্গে সম্পর্কের পুরো একটা বছর ভুল বোঝাবুঝিতে চুপ করে থাকলাম।

আর একবার প্রিয়ঙ্কার মন্তব্য সম্পর্কে আমি ওপেনলি ফেটে পড়ি। ও কাগজে এমন একটা নিন্দাব্যঞ্জক কথা বলেছিল, যেটা আমার কাছে অসহ্য মনে হয়। আমি সেই রাগে তৎক্ষণাৎ অন রেকর্ড ওকে এক হাত নিই। এটা আমার স্বাভাবিক প্রবৃত্তি মোটেই নয় যে, প্রকাশ্যে কাউকে এক হাত নেব। আই ডোন্ট ওয়াশ ডার্টি লিনেনস ইন পাবলিক। বিশেষ করে কোনও মহিলা জড়িত থাকলে তো নয়ই। আমার উচিত ছিল, ওই উত্তেজিত অবস্থায় ফোনটা তুলে ফোনেই গালাগাল-টালাগাল দিয়ে প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে এসপার-ওসপার করে নেওয়া। সেটা না করাটা খুব ভুল হয়েছিল। আসলে এমন গনগনে হয়ে ছিলাম যে, কন্ট্রোল করতে পারিনি। আজ অবশ্য দু’জনের সঙ্গেই আমার বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে।

এই বিবৃতিটা সত্যি না মিথ্যে বলতে হবে। ‘মিথ্যে’ বললে আপনার গিফ্ট হ্যাম্পার গেল। আমার ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলব।

ডান।

এসআরকে-র সঙ্গে কর্ণ জোহরের সম্পর্ক আগের মতো নেই। সত্যি না মিথ্যে?

মিথ্যে।

আপনি বলতে চান, আপনাদের বন্ধুত্বটা এক জায়গায় আছে। টানা পাঁচ বছর আপনারা একসঙ্গে কাজ করছেন না। আপনার নতুন সিনেমাও রণবীর-ঐশ্বর্যাকে নিয়ে। শাহরুখ নেই।

আরে দু’টো লোক একসঙ্গে কিছু দিন কাজ না করলেই তাদের সম্পর্ক খারাপ হয়ে গেল নাকি? আমার আর শাহরুখের ইমোশনাল ডায়নমিক্স এখনও একই জায়গায় রয়েছে। দু’টো খুব কাছের লোকের মধ্যে একটা ব্রেক নেওয়া আর সাময়িক দূরত্ব অনেক সময় বেটার। আমি সিচ্যুয়েশনটা এ ভাবে ব্যাখ্যা করব— ঝড় আসার আগে নিস্তব্ধতা।

কর্ণ আপনি আনন্দplus-এর গিফ্ট হ্যাম্পারটা পাবেন আগের অনেক প্রশ্নের চাঁচাছোলা জবাবের জন্য। কিন্তু শেষের দিকে ওটা প্রায় হারাতে বসেছিলেন।

জানি (হা হা হা)। দু’টো প্রশ্নের পলিটিকালি কারেক্ট উত্তর দিয়েছি। দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। বোঝেন তো, আমাকেও ইন্ডাস্ট্রিতে থাকতে হবে। (হাসি) থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ ফর দ্য হ্যাম্পার।

আনাচে কানাচে

তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা: সম্মানপ্রদান অনুষ্ঠানে প্রসেনজিৎ ও সন্ধ্যা।

যদি হই চোরকাঁটা: আশা ও শর্মিলা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE