জিৎ
শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় বা টালিগঞ্জের মেট্রো স্টেশন, দৃশ্যের কোনও রদবদল নেই। দু’জায়গাতেই বাংলা ছবির পোস্টারের ছড়াছড়ি। কোথাও দেবের ‘চ্যাম্প’ তো কোথাও জিতের ‘বস টু’। প্রচারের এত রমরমা দেখে মনে হতেই পারে এ যেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির হানিমুন পিরিয়ড। কিন্তু সত্যি কী তাই?
একই দিনে মুক্তি পাওয়া এই দুই ছবি নিয়ে উত্তাল ছিল সোশ্যাল মিডিয়া। মাল্টিপ্লেক্সে দুটো ছবিই মোটামুটি ব্যবসা করলেও সিঙ্গল স্ক্রিনে ‘বস টু’ অনেকটাই এগিয়ে। ইন্ডাস্ট্রি সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে, ‘বস টু’ প্রথম সপ্তাহে ১ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা রোজগার করেছে। অনেকটাই পিছনে দেবের ‘চ্যাম্প’। প্রথম সপ্তাহে রোজগার ৪১ লক্ষ টাকা। বাংলাদেশেও ভাল ব্যবসা করছে জিতের ছবি।
তবে ইন্ডাস্ট্রির বিশেষজ্ঞরা কনটেন্টের বিচারে দেবকে এগিয়ে রাখছেন। অনেকের মতে, দেব নতুন কিছু করার চেষ্টা অন্তত করেছেন। আর সেটা করতে গিয়েই হয়তো ব্যবসার অঙ্কে পিছিয়ে পড়েছে ‘চ্যাম্প’। গ্রাম বা শহরতলির দর্শকের দেবের কাছে যেটা প্রত্যাশা সেটা ‘চ্যাম্প’ থেকে মেলেনি। বিষয়টা দেব নিজেও জানেন। বললেন, ‘‘আমার ছবির যা বিষয়, সেটা ধরতে কিছুটা সময় লাগবে। ‘বস টু’-র গল্প ইদে অনেকটা বাজার টানতে সাহায্য করেছে। ‘চ্যাম্প’ কিন্তু হায়দরাবাদে হাউসফুল হচ্ছে। একটু সময় দিন। আমার প্রথম প্রোডাকশন তো!’’
দেব
আর জিৎ কী বলছেন? ‘‘নম্বর নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নই। তবে সকলেই বলছে, ‘বস টু’ গ্রাম-শহর দু’দিকেই সাড়া ফেলেছে। এমন দর্শকও পেয়েছি যাঁরা দু’-তিন বার এই ছবি দেখতে যাচ্ছেন। আর সেই কারণেই বোধহয় আমার আগের ছবি ‘অভিমান’-এর চেয়ে ‘বস টু’-র স্কোর এত ভাল।’’ অনেক দিন ধরেই বাণিজ্যিক ঘরানার ছবিতে মন্দা চলছিল। ‘বস টু’ সে দিক থেকে নির্মাতাদের খানিকটা স্বস্তি দিয়েছে। জি়ৎ যে কারণে পরবর্তী সিক্যুয়েলের কথাও ভাবছেন।
চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ‘চ্যাম্প’ মুক্তি পাওয়ার কথা বাংলাদেশে। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্তবাণিজ্য চুক্তি-সাফটার আওতায় ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে প্রতিবেশী দেশে। পরিবেশনার দায়িত্বে জাজ মাল্টিমিডিয়া। ওই সংস্থার এক কর্মকর্তা বললেন, ‘‘দেবের ছবির বিনিময়ে ‘মস্তানি’ যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে।’’
‘চ্যাম্প’-এর ব্যবসার উপর দেবের পরবর্তী ছবিগুলোর রিলিজ নির্ভর করছে। ‘ধূমকেতু’-র প্রযোজক রানা সরকার যেমন জানালেন, তিনি নভেম্বরেই ছবিটি রিলিজ করতে চান। ‘‘দেব অগস্টের মধ্যে ছবির ডাবিং না করলে, আমি অন্য কাউকে দিয়ে ডাব করিয়ে রিলিজ করে দেব। এ ব্যাপারে আর্টিস্ট ফোরাম এবং ফেডারেশনকে চিঠিও দিয়েছি।’’
‘চ্যাম্প’ নিয়ে জিতের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘চ্যাম্প’ তাঁর দেখা হয়নি। কিন্তু দেব যে প্রচুর খেটে ছবিটা তৈরি করেছে, তা নিয়ে একদিন দেবের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। তবে সেই কথোপকথনে দেব ‘বস টু’ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি বলে জানান জিৎ। আমেরিকায় বঙ্গ সম্মেলনে যাওয়ার আগে দেব অবশ্য আনন্দ প্লাসকে বলেন, জিতের ‘বস টু’ যে ভাল চলছে, সে খবর তিনি জানেন।
তা হলে কি জিৎ-ই বক্স অফিস অফিসে চ্যাম্প হলেন? ব্যবসার অঙ্ক অন্তত তাই বলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy