দেবোত্তম
যে সব বাঙালির ড্রয়িং রুমের সন্ধেগুলো আলোকিত করে রাখে মেগা তারকারা, তাঁদের সকলেই প্রায় একডাকে চেনেন ‘ঋদ্ধি’কে। মানে দেবোত্তম মজুমদারকে। ‘মায়ার বাঁধন’-এর হাত ধরেই যিনি বাঙালিকে জড়িয়ে রেখেছেন টিভির বাঁধনে। কিন্তু এই বাঁধনটা মোটেও আজকের নয়। নয় নয় করে বেশ কয়েকটা বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কেটে গিয়েছে দেবোত্তমের।
আশুতোষ কলেজের পাঠ চুকিয়ে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের বাঁধা, মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে ঝাঁপ দিয়েছিলেন অনিশ্চয়তার জগতে। কারণ, যে সময়টায় তিনি কাজ শুরু করেছিলেন, তখন দাপটে অভিনয় করছেন শঙ্কর চক্রবর্তী, কুশল চক্রবর্তীরা। অভিনয়ের প্রতি ভাল লাগার সূত্রপাত থিয়েটারের হাত ধরেই। ‘‘বন্ধুদের দল, তমাল রায়চৌধুরীর ক্যালকাটা পারফর্মার্সে অভিনয় করতাম। কিন্তু পরদায় আসার টানটা ছিল ভীষণ। আর ভাবতাম, যদি দশ বছর পরে কেউ জিজ্ঞেস করে কোনও আক্ষেপ আছে কি না, তা হলে পরদায় অভিনয় করার ইচ্ছেটা তো অপূর্ণই থেকে যাবে। আক্ষেপটাও রয়ে যাবে। তাই চাকরি ছেড়ে দিলাম,’’ অকপট দেবোত্তম।
পরদায় অভিনয়ের শুরুয়াত স্নেহাশিস চক্রবর্তীর ‘কখনও মেঘ, কখনও বৃষ্টি’ দিয়ে। তবে পরিচিতি এসেছে ‘কেয়া পাতার নৌকো’র হাত ধরেই। সেই পরিচিতির সুবাদেই খুঁজে পেয়েছেন তিরিশ বছর ধরে প্রায় বিচ্ছিন্ন আত্মীয়স্বজনদের হাত। ‘‘বাংলাদেশের রাজবাড়ির এক ভদ্রলোক ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলেন। আমরাও আসলে ওখানকারই। তার পর যা হয়, এখানে আমাদের পরিবার চলে আসার পরে ওখানকার আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল। ওঁর সূত্র ধরেই আবার এত দিন পরে আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ হল!’’ হাসতে হাসতে বললেন দেবোত্তম।
থিয়েটারের অভাব বোধ করেন? ‘‘ঠিক তা নয়। তবে রিহার্সালের মজাগুলো মিস করি। আমি একদমই লাউড অ্যাক্টিংয়ে বিশ্বাস করি না। তাই একসঙ্গে মেগা আর থিয়েটার চালিয়ে যেতে পারতাম না,’’ বলছেন দেবোত্তম। কাজের চাপে জিমেও যেতে পারেন না মাঝেমাঝে। তাই স্টুডিয়োয় জিমের বন্দোবস্ত হলে বেশ ভালই হয় বলে মত অভিনেতার। কারণ ‘‘সিরিয়ালের কাকারাও এখন ইয়ং! ভুঁড়ি থাকলে মোটেও চলবে না।’’
বেশ ঠান্ডা মাথার মানুষ দেবোত্তমকে না রাগানোই ভাল। অবসরে গান শুনতে আর গাছপালার যত্ন নিতে ভালবাসেন। অত্যন্ত ভাল ছবি না হলে মেগাতেই থাকতে চান তিনি। কারণ, সিনেমার প্রতি তেমন মোহ নেই দেবোত্তমের। আর স্টুডিয়ো থেকে ধাক্কা মেরে বের করে দেওয়ার মতো ছোটখাটো দুঃখ পাওয়াও জরুরি। তা হলেই মাথা উঁচু করে সেখানে নিজের যোগ্যতায় কাজ করার আনন্দটা উপভোগ করা যায়, স্বীকার করলেন দেবোত্তম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy