Advertisement
০৪ মে ২০২৪

‘জাতীয় পরিচিতিটা আকর্ষণ করে’

ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে আবিষ্কার করছেন আবির চট্টোপাধ্যায়। আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি অভিনেতাভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে আবিষ্কার করছেন আবির চট্টোপাধ্যায়। আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি অভিনেতা

আবির। ছবি: সুদীপ্ত চন্দ

আবির। ছবি: সুদীপ্ত চন্দ

অন্তরা মজুমদার
শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

প্র: ‘নিরামিষ’ তকমাটা আপনার কবে যাবে বলুন তো?

উ: আমাকে ডাক্তার স্ট্রিক্টলি বারণ করেছেন নিরামিষ খেতে! নেমন্তন্ন বাড়িতেও কেউ আমাকে নিরামিষ সার্ভ করে না!

প্র: এখানেও সাবধানী! কবে একটা বিতর্ক হবে আপনাকে নিয়ে?

উ: কেন এত খারাপ চান বলুন তো! আমাকে নিয়ে বিতর্ক কিন্তু কম নেই। সেগুলো অ্যাফেয়ার-ঘটিত বিতর্ক হয়তো নয়। কিন্তু আমার ফ্র্যাঞ্চাইজি করা নিয়ে বিতর্ক আছে, না করা নিয়েও আছে... এখন কাজ যত দিন থাকবে, এগুলোও থাকবে।

প্র: ‘বিদায় ব্যোমকেশ’-এ আপনি বৃদ্ধ ব্যোমকেশ। ইমেজ ভাঙাটা একটু ঝুঁকির মনে হচ্ছে না?

উ: এক্সপেরিমেন্ট না করাটাই বরং সবচেয়ে ঝুঁকির! পাঁচটা ব্যোমকেশ করে ফেলেছি ইতিমধ্যে। কিন্তু এই ব্যোমকেশকে অন্য ভাবে দেখা হয়েছে। যেটা দর্শকের ব্যোমকেশকে দেখার অভ্যেসের বাইরে।

প্র: কিন্তু ব্যোমকেশের যে পরিচিত ব্র্যান্ডিং, সেখান থেকে বেরিয়ে গেলে ছবির ভবিষ্যৎ নিয়েও তো আশঙ্কা থাকে?

উ: আসলে দেবালয় (ভট্টাচার্য, পরিচালক) যেটা করেছে, সেটা সৎ সাহস আর দুঃসাহসের মাঝামাঝি! ‘বিদায় ব্যোমকেশ’ কিন্তু ব্যোমকেশকে ভালবেসেই... ইটস আ ট্রিবিউট টু হিম। বিদেশে তো আমরা এ রকম দেখেছি, চেনা আইকনিক চরিত্রগুলোকে ভেঙে অন্য ভাবে ইন্টারপ্রেট করা হয়েছে। রিস্কটাও সেই কারণেই নেওয়া। ব্যবসার দিকটা আমি একেবারেই বুঝি না। সেটা প্রযোজকদেরই সিদ্ধান্ত।

প্র: ওই মেকআপ নিয়ে সমস্যা হতো না?

উ: যে দিন শেষ বারের মতো প্রস্থেটিক মেকআপ নিয়ে শুটিং শেষ করলাম, প্রিন্সেপ ঘাটের ধারে দাঁড়িয়ে দেবালয়কে বলেছিলাম, ‘চল, গঙ্গায় একটা ডুব মেরে আসি’! সাড়ে তিন-চার ঘণ্টা ধরে মেকআপ করতে হতো, সেটা তোলারও একটা বিশেষ কায়দা ছিল। না হলে মুখে র‌্যাশ বেরিয়ে যেতে পারত। এ সব নিয়ে মুডও খিঁচড়ে যেত মাঝেমধ্যে!

প্র: এত গোয়েন্দার মধ্যে আরও এক গোয়েন্দা যোগ হল— সোনাদা। আর সেই চরিত্রেও আপনি!

উ: এটা আমি সকলকে বলছি, সোনাদা কিন্তু গোয়েন্দা নয়। সুবর্ণ সেন ছবিতে হয়তো একটা কিছুর সন্ধান করছে। কিন্তু সে ইতিহাসের অধ্যাপক। ইংল্যান্ডে পড়াত। পরে দেশে ফিরে আসে এবং বাংলার ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, এমন একটা ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সে।

প্র: ড্যান ব্রাউনের রবার্ট ল্যাংডনের মতো চরিত্র?

উ: ল্যাংডনের খুব কাছাকাছি। বা নিকোলাস কেজের ‘ন্যাশনাল ট্রেজার’-এর মতোও বলতে পারেন। তবে এখানে গুপ্তধন বলতে সোনাদানা নয়। বাংলার পুরনো ইতিহাস...

প্র: আপনি এমনিতে তো খুবই সাবধানী। সেই জন্যই কি এই রহস্যে মোড়া, রোমাঞ্চকর চরিত্রগুলো আপনাকে বেশি টানে?

উ: মনে হয় না। ফেলুদা করেছিলাম চরিত্রটা আমার ছোটবেলার হিরো বলে। শুটের দিক থেকে দেখলে, ব্যোমকেশ আমার সেকেন্ড ছবি। আর ছোটদের জন্য তো খুব বেশি ছবি এখানে হয় না... সোনাদার চরিত্র খানিকটা সেই অভাব পূরণ করতেই। তবে ছবিটা বড়দেরও ভাল লাগবে। তা ছাড়া সোনাদার গল্পটা সিনেমার জন্যই লিখেছে ধ্রুব (বন্দ্যোপাধ্যায়)। ফলে নতুন গল্পের মজাটাও রয়েছে।

প্র: পরমব্রত, যিশুরা চুটিয়ে বলিউডে কাজ করছেন। আপনি এখনও হিন্দি ছবিতে নেই কেন?

উ: সে রকম ব্যাটে-বলে হচ্ছে না আর কী। চরিত্র বা সময় বা গল্প...

প্র: এতে একটু পিছিয়ে যাচ্ছেন বলে মনে হয়?

উ: পরম বা যিশুও যে সব ভুলে হিন্দি ছবিই করছে, তা কিন্তু নয়। পিছিয়ে পড়ছি না। কিন্তু জাতীয় পরিচিতিটা আকর্ষণ করে।

প্র: আপনার সঙ্গে সৃজিতের ঝামেলাটা বেশ বিখ্যাত। আবার সৃজিতের এই মুহূর্তের ফেভারিট যিশু। পুরো বিষয়টায় অস্বস্তি হয়?

উ: একদমই না। ওরা সত্যিই ভাল বন্ধু। এবং কাজের ক্ষেত্রেও আমার মতে, ওই ধরনের কমফর্ট জোনটা দরকারি। সে ভাবে দেখতে গেলে আমিও কৌশিকদার (গঙ্গোপাধ্যায়) সঙ্গে পরপর কাজ করেছি। অরিন্দমদার (শীল) সঙ্গে একের পর এক কাজ কর‌ছি। এখানে কিন্তু ফেভারিটিজমের ব্যাপার সত্যিই নেই। আর সৃজিতের সঙ্গেও ‘চৌরঙ্গী’ করছি তো... ওর প্রথম প্রযোজনায় কাজ করতে পেরে ভালই লাগছে।

প্র: আপনার ব্যোমকেশে ঋত্বিক আর অজিত নন। আপনাদের কথা হয়েছে এই নিয়ে?

উ: দু’জনেই তো প্রচণ্ড ব্যস্ত। ফলে কথা বলার সময় হয়নি। তবে কোনও চরিত্র কারও আর ভাল না লাগলে জোর করে তো সেটা করার কোনও মানেও হয় না।

প্র: অনেক দিন পর পাওলির সঙ্গে কাজ করছেন...

উ: হ্যাঁ, ‘তৃতীয় অধ্যায়’। মৈনাকের (ভৌমিক) ‘বেডরুম’-এর পর। আর ‘তৃতীয় অধ্যায়’-এর প্রায় পুরোটাই আউটডোরে শুটিং হয়েছে। তাই আমরা ইয়ার্কিও করছিলাম যে, বেডরুম থেকেই আমরা সোজা আউটডোরে (হাসি)!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE