Advertisement
E-Paper

‘হাত পেতে টাকা নিচ্ছি, চরিত্রটা করতে পারছি তো?

অন্দরমহল থেকে অভিনয়, নিজের জীবনের কথা বললেন তুলিকা বসু অন্দরমহল থেকে অভিনয়, নিজের জীবনের কথা বললেন তুলিকা বসু

ঊর্মি নাথ

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:২৫
তুলিকা বসু

তুলিকা বসু

আজ না কাল, কাল না পরশু, কিছুতেই আনন্দ প্লাসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় বের করে উঠতে পারছিলেন না তুলিকা বসু। অবশেষে সময় হল। ‘কে আপন কে পর’ এবং নতুন একটি সিরিয়াল নিয়ে তিনি ভারী ব্যস্ত। শুধু সিরিয়াল নয়, এ বছর ‘অন্তরসত্তা’, ‘বাবলি’, ‘রংরুট’, ‘আদর’... বেশ কয়েকটা ছবিও করেছেন। সেগুলো মুক্তির অপেক্ষায়। রোজ রোজ এই লম্বা শেডিউল ভাল লাগে? ‘‘আমি চাইছি বলেই তো করছি। তাই সেটা নিয়ে কান্নাকাটি করি না। প্রায় ১৯-২০ বছর অভিনয় করছি। অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জানেন, অভিনেত্রী হব সে চিন্তা ত্রিসীমানাতেও ছিল না আমার। অভিনয়ে এসেছি ছেলে হওয়ার পর!’’

১৯৯৬ সালে তুলিকা ডেবিউ করেন ‘এ বার জমবে মজা’ সিরিয়ালে। একজন আটপৌরে গৃহবধূর কাছে সুযোগটা এল কী করে? ‘‘আমি অবশ্য পুরোদস্তুর গৃহবধূ ছিলাম না। স্কুলে পড়াতাম। আমার মেসোমশাই প্রিতম মুখোপাধ্যায় ছিলেন স্ক্রিপ্ট রাইটার, পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ছোটবেলায় প্রায়ই বুদ্ধদেববাবুর ছবির শ্যুটিংয়ে তিনি নিয়ে যেতেন। তিনি বোধহয় চাইতেন বুদ্ধদেববাবুর ছবির কোনও একটা চরিত্রের সঙ্গে যদি আমি খাপ খেয়ে যাই‍! কিন্তু হয়নি। পরে উনিই ‘এ বার জমবে মজা’র সুযোগটা করে দেন।’’ এই সিরিয়ালের বেশ কিছু দিন পরে দেবাংশু সেনগুপ্তর কাছ থেকে অফার পান ‘মহাপ্রভু’র জন্য। ‘‘নিমাইয়ের মাসির চরিত্রটি করতে হবে শুনে প্রথমেই দেবাংশুকে বলেছিলাম, বেশি দিনের জন্য নয় তো! কারণ তখন আমার ছেলে অর্ক বড্ড ছোট। উত্তরে দেবাংশু বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ, বেশি দিনের জন্য’।’’ ম্যানেজ করলেন কী করে? ‘‘সেই সময় স্বামী, শ্বশুরবাড়ির লোক খুব সাহায্য করেছিলেন। ওঁরা না থাকলে সম্ভব হত না।’’ সাধারণত লোকে নাটক থেকে পরদায় আসে, আপনার তো উল্টো! ‘‘একদিন ‘মহাপ্রভু’র সেটে রনিদাকে (রজতাভ দত্ত) বললাম, ‘হাত পেতে টাকা নিচ্ছি। কিন্তু চরিত্রটা ঠিক মতো করতে পারছি তো?’ রনিদা প্রস্তাব দিয়েছিলেন থিয়েটার করার। তখন ‘নাট্যআনন’-এর সঙ্গে যুক্ত হলাম। ‘দরদী’, ‘বাসনা বৃক্ষমূলে’, ‘সুনেত্রা’ ইত্যাদি বেশ কিছু নাটক করলাম। সত্যিই আত্মবিশ্বাস বাড়ল।’’ আপনার জন্য নাকি ব্যাক স্টেজে বালতি থাকত, বমি করবেন বলে? প্রশ্ন শুনে সশব্দে হেসে বললেন, ‘‘এত লোকের সামনে যেতে হবে ভেবেই ভয় করত, বমি পেত।’’ কিন্তু ২০০৭-এ থিয়েটারে ইতি টানলেন কেন? ‘‘আসলে যাঁরা একদিন সাহায্য করেছিল নাম যশ হতে, তাঁদের সঙ্গে মনোমালিন্য শুরু হল। সরে এলাম। টাকার দরকারটা বাড়ল। যা থিয়েটার থেকে সম্ভব নয়। আর রোজ থিয়েটার আছে বলে সিরিয়াল ছেড়ে বেরোনো যায় না। তাই ছাড়তে হল।’’ কিন্তু ‘মেরি পেয়ারি বিন্দু’র অফার ছাড়লেন কেন? ‘‘যশ রাজ প্রোডাকশন থেকে অফারটা আসতেই ওদের বলেছিলাম, শেডিউল অন্তত এক-দেড় মাস আগে জানাতে। ওরা জানাল ১৫ দিন আগে। চেষ্টা করলে হয়তো ম্যানেজ করতে পারতাম। কিন্তু মূল্যবোধে আটকে গেলাম। মনে হল, ওরা কি কলকাতার লোককে বড় বেশি সহজলভ্য মনে করছে? তাই ‘না’ করেছিলাম।’’

আরও পড়ুন: ‘সলমনের ছত্রচ্ছায়ায় কে না আসতে চায়’

ঘর ও কাজ সবই তো একা হাতে সামলে যাচ্ছেন! ‘‘কল্পনা আর চৌধুরীজির জন্য এখনও সব দিক সামলে যাচ্ছি।’’ কারা এঁরা? ‘‘কল্পনা আমার পরিচারিকা। ও না থাকলে চোখে সর্ষে ফুল দেখি। চৌধুরীজি আমার আইটির ফাইলটা দেখেন, গাড়িও চালান এবং কল্পনা না এলে বাসনটাও মেজে দেন! আর আছে অর্ক। দারুণ সব ডিশ রান্না করে আমাকে প্রায়ই খাওয়ায়।’’

ডাক পড়ল তুলিকার, শটের জন্য নয়, ডিনার টেব্‌লে। সেখানে অর্ক অপেক্ষা করছেন তাঁর মায়ের জন্য পছন্দসই খাবার সাজিয়ে। সুতরাং যবনিকা টানতে হল কথায়।

Celebrity Interview Tulika Basu Tollywood Mega Serial তুলিকা বসু
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy