একই ধরনের সাজতে সাজতে একঘেয়ে লাগছে? মনে হচ্ছে সব লুকস তো পুরোনো! অথচ সামনেই কিটি পার্টি থেকে অ্যানিভার্সারি, একগুচ্ছ অকেশন। কোন লুকে ধরা দেবেন?
বলিউডের নায়িকাদের মতো ব্র্যান্ড নিউ লুকে ধরা দিতে আপনিই বা পিছিয়ে থাকবেন কেন?
নিজেকে সাজিয়ে তুলুন ফুলের সাজে।
মেহেন্দির দিন ফুলের সাজে তাক লাগিয়েছেন বিপস। একেবারে সেই ‘শকুন্তলা’র মতোই হাতে ফুলের বালা। মাথায় ফুলের বাহারি সাজ । শুধু বিপস কেন, মেহেন্দির দিন ফুলকেই ফ্যাশন স্টেটমেন্ট করেছিলেন ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন। পিছিয়ে ছিলেন না বিদ্যা বালনও।
ডিজাইনার অভিষেক দত্তের মতে ফ্যাশনে ‘ফ্লাওয়ার জুয়েলারি’ নতুন ট্রেন্ড তো বটেই। মুম্বই ও দিল্লিতে ধীরে ধীরে বেশ জনপ্রিয়ও হচ্ছে ফুলের গয়না। ফুল-নকশার জাঙ্ক জুয়েলারির চাহিদা বাড়ছে কলকাতাতেও।’’ অবাঙালিদের মধ্যে তো বটেই, বাঙালিরাও ধীরে ধীরে ঝুঁকছেন ফ্লাওয়ার জুয়েলারিতে। অভিনেত্রী মিমি যেমন মাথায় ফুলের ব্যান্ড পরে ফেলেছেন বছর আটেক আগেই। এমনকী বিদেশে একবার শ্যুটিংয়ের সময় মাথায় ফুলের ব্যান্ড পরেই শপিং সেরেছিলেন। অনুষ্ঠান অনুযায়ী আসল ফুলের সাজ তার বেশ পছন্দের।
কেমন পোশাকে মানানসই
ফ্যাশন ব্যাপারটাই এমন, আজ যা আউট অফ ট্রেন্ড, কাল তাই ইন। ফলে প্রচলিত মিথকে মিথ্যে করে, নয়া লুকে সাজুন। দেখবেন ওটাই ‘হিট’ পাড়া-পড়শিদের চোখে। তবে সব ধরনের পোশাকের সঙ্গে ফ্লাওয়ার জুয়েলারি মানাবে এমন নয়, বলছেন ডিজাইনার অভিষেক দত্ত।
তার মতে ‘‘পুরোপুরি ওয়েস্টার্ন পোশাকের চেয়ে ইন্দো-ওয়েস্টার্ন পোশাক অর্থাৎ ফিউশন পোশাকে ফুল বেশি মাননসই।’’ ফুলের গয়না পরতে গেলে পোশাকের রঙে বাড়তি সচেতনতা জরুরি। ‘‘উজ্জ্বল প্যাস্টেল কালার যেমন ক্যানেরি ইয়ালো, রোজবেরি রেড, পিঙ্ক, লাইল্যাকস-এর সঙ্গে ফুলের গয়না ভাল যাবে’’, মনে করিয়ে দিয়েছেন অভিষেক।
রোগা-মোটায় যায় আসে না
‘‘মোটা হলেও চিন্তা নেই, ফুলের গয়না মানিয়ে যাবে,’’ বলছেন মেক আপ আর্টিস্ট অনিরুদ্ধ চাকলাদার। বরং রোগা গ়ড়নের থেকে ‘‘লম্বা সুন্দর চেহারা বা ভারী গড়নেই ফুলের গয়না বেশি মানায়’’। ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পল বলছেন,‘‘মাথায় ফুলের ব্যান্ড ব্যবহারের যে চল শুরু হয়েছে তা যে কেউ করতে পারেন। দেহের গড়ন যাই হোক না কেন। ষোল থেকে পঁয়ষট্টি, চলতে পারে সব বয়সেই। ক্যারি করাটাই আসল। রেট্রো লুকে শাড়ি পরে মাথায় ফুলের ব্যান্ড লাগিয়ে নেওয়া যেতেই পারে।’’
কোন অনুষ্ঠানে পরা যাবে
ডিজাইনার প্রণয় বৈদ্যের মতে মেহেন্দি সহ নানা অনুষ্ঠান, এমনকী থিম পার্টিতেও অনায়াসেই চলতে পারে ফ্লাওয়ার জুয়েলারি। তবে শুধু ফুল নয়, ফুলের মধ্যে মুক্তো বা পাথরের বিট্স রাখতেই পছন্দ করেন প্রণয়। বললেন, ‘‘গোয়ার সমুদ্র পা়ড়ের পার্টি, গ্রীষ্মে পুল সাইড পার্টিগুলিতেও ফ্লাওয়ার জুয়েলারি ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে।’’ মুম্বই, দিল্লির পাশাপাশি কলকাতাতেও থিম পার্টির চল হচ্ছে। এই ধরনের পার্টিগুলিতে আমন্ত্রিতদের ফুলের গয়নায় সাজানোর ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে, বলছেন ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পল।
ফুলের গয়নার ট্রেন্ড আদ্যিকালের
ভারতীয় সাজে ফুল ব্যবহারের চল বরাবর। বিয়েতে মোটা ফুলের মালা, বা সিঁথিতে লম্বা করে ফুল দেওয়ার রীতি বহু পুরনো। এমনকী অফিস যাওয়ার সময় এক টুকরো ফুল মাথায় না গুঁজলে যেন চলেই না দক্ষিণী ভারতীয় মেয়েদের। এই ট্রেন্ডই এখন জেন ওয়াই-এর সামনে। কেউ কেউ আবার মনে করছেন পকেট ফ্রেন্ডলি অথচ বাহারি সাজে ফুলের গয়নার জুড়ি মেলা ভার। ফুলের একটা নিজস্ব ভাষা আছে, প্রিয় মানুষকে সেজন্যই তো আমরা গোলাপ বা অন্য ফুল দিয়ে থাকি। অনেক না বলা কথাও যে বলে দেয় ফুল।
‘হটকে’ ট্রেন্ডে লুক বদল
আসল ফুল হোক বা নকল ফুল দুটোতেই সাজতে পছন্দ করেন অভিনেত্রী সোহিনী সরকার। ইন্দো-ওয়েস্টার্ন দু’ধরনের পোশাকের সঙ্গেই ফুলের সাজ ‘লুক’ বদলে দেয় বলে মনে করেন তিনি। বিশেষ করে গরমের সকালে কোনও অনুষ্ঠান থাকলে ফুলের গয়নাই তাঁর একমাত্র পছন্দের। ‘‘পুল পার্টি, দোলের অনুষ্ঠানে গাঁদা ফুলের মালা দারুণ যায়। পলাশের সাজে নিজেকে মোহময়ী করে তোলা যায়। রাবীন্দ্রিক সাজ চাইলে শাড়ির সঙ্গে বেল ফুল বা জুঁই পরি। মাধবীলতা ফুলের ক্রাউন করা শিখেছি। শিউলি ফুল গেঁথে পরতেও ভালবাসি’’, বলছেন সোহিনী।
সোনা, হিরে, প্ল্যাটিনামের দাম আকাশছোঁয়া। তা পরে রাস্তায় বেরোনোও বিপজ্জনক। তাই আর দেরি নয়। সোনা বা হিরের চিরন্তনী সাজ ভুলে টলিউ়ড-বলিউডের
অভিনেত্রীদের মতো শুধু ফুলের সাজে আপনিও হয়ে উঠুন অনন্যা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy