নুসরত, পরমব্রত, পার্নো, তনুশ্রী
শীতের রাত, আধো আলো, ক্রমশ বাড়তে থাকা মিউজিকের পারদ... তার তালে পা মেলাচ্ছে অনেকে... শুষে নিচ্ছে প্রতিটি মুহূর্তের আনন্দ, কেউ আবার পানীয়ের গ্লাস হাতে উপভোগ করছে পরিবেশ... আর ওই তো ওখানে রয়েছে আপনার প্রিয় সেলেব! দেখতে পাচ্ছেন? বছরের শেষ দিন পার্টি মোড ফুল অন হলেও ডিসেম্বর জুড়েই চলে উৎসবের সিজন। কী ভাবে আনন্দে মাতেন টলি সেলেবরা... পরদা সরিয়ে দিলাম। জেনে নিন তাঁদের পার্টিসার্টির গল্প।
অন্দর কী বাত
ইদানীং টলিউডের অভিনেতারা হাউজ পার্টিই বেশি পছন্দ করছেন। যেখানে ভিড় হওয়ার চান্স, সেখানে তাঁদের দেখা নাই রে। তবে এমন তারকাও আছেন যাঁরা সত্যিই পার্টি থেকে দূরে থাকেন (পড়ুন অঙ্কুশ)। অনেক সেলেব স্মোক বা ড্রিঙ্ক কিছুই করেন না, থাকেন শুধু আড্ডা মারার জন্য। কেউ আবার এককোণে বসে পড়েন ড্রিঙ্কের গ্লাস হাতে নিয়ে... কারও কাছে নাচানাচিই মুখ্য। তবে এক কথায় বললে টলিউডের পার্টি মূলত আড্ডাকেন্দ্রিক। বাঙালি আর আড্ডার যুগলবন্দি নানা রূপে নানা জায়গায় বহাল তবিয়তে বিরাজমান...
অভি তো পার্টি শুরু হুয়ি হ্যায়
মিমি, সায়ন্তিকা, নুসরত এবং তনুশ্রী— এই চার কন্যের দারুণ বন্ধুত্ব। তাঁরা নাকি জমিয়ে পার্টিও করেন। তাই সেলেবদের পার্টি অভিযান শুরু করা হল মিমি চক্রবর্তীকে দিয়ে। ‘‘দু’-তিন বছর আগেও আমি খুব পার্টি করতাম। কিন্তু এখন হাউজ পার্টিই করি। নুসরত-সায়ন্তিকারা পার্টি করলেও আমার সে ভাবে হয় না। আসলে আমি স্পয়েল স্পোর্ট, বেশি রাত অবধি জাগতে পারি না। দুটোর পর একটা কোণে চুপচাপ বসে পড়ি, এত ঘুম পায়।’’ শুনেছি আপনি নাচতে খুব ভালবাসেন? হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘ভীষণ। তবে ওয়ান্স ইন আ ব্লু মুন। আমার বার্থ ডে হল একমাত্র দিন, যে দিন আমি পার্টি করি। সে দিনও পারতপক্ষে ড্রিঙ্ক করি না। অ্যালকোহল ইজ নট গুড ফর হেল্থ।’’ মিমির বন্ধু নুসরতও একটা সময় চুটিয়ে পার্টি করতেন, কিন্তু এখন কাজের চাপে, সে সব পুরানো সেই দিনের কথা! তবে বছরের শেষ দিন পার্টির জন্য বরাদ্দ থাকে। বললেন, ‘‘ওই দিন পার্টি করতেই হবে। আমার কলেজের বন্ধু ও ইন্ডাস্ট্রির কিছু বন্ধু সেখানে থাকে। এ বছর কী হবে জানি না। দেখুন না, জ্বরে কাবু হয়ে পড়েছি। তার উপর কাজের চাপ।’’
বনি-কৌশানী ও রুক্মিণী
টলিমহলে পার্টি প্রসঙ্গ উঠলে এক নম্বরে যাঁর নাম আসে, তিনি অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। নিজেই স্বীকার করেন, দশ বছরে তাঁর মতো পার্টি ক’জন করেছে, আতস কাচ দিয়ে খুঁজতে হবে। ‘‘আমরা রুফটপ, বার্বিকিউ, হাউজ পার্টি করি। গত বছর সাহেবের বাড়িতে করেছিলাম। পার্নো (মিত্র) সল্টলেকে থাকার সময়ে ওখানে পার্টি করতাম। তবে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বরের প্ল্যানিং এখনও হয়নি। আমি মদ খাই না, তাই অন্যদের মদ্যপ অবস্থায় দেখতে মজা লাগে। আর পার্টিতে কত কিছু হয়! সেই নিয়ে বলে অহেতুক বিতর্কে জড়াতে চাই না,’’ হাসলেন অনিন্দ্য। অনিন্দ্যর মতোই পার্নোর পার্টিও হবে ক্লোজড ডোর। এই সিজনটা অবশ্য শ্যুটিং করেই কাটবে। তাই নো পার্টি।
হাউজ পার্টি অর্গানাইজ করায় খুব নাম যিশু সেনগুপ্তর গিন্নি নীলাঞ্জনার। জানালেন, ‘‘হাউজ পার্টিতে আমাদের দুটো গ্রুপ আছে। একটায় রাহুল, ইন্দ্রাশিস, প্রান্তিক, শরদিন্দুদা আর যিশুর ছোটবেলার বন্ধুরাও থাকে। অন্যটায় রুদ্রনীল, সৃজিত, ইন্দ্রদীপ, শ্রীজাত ও দূর্বা। রেস্তোরাঁ থেকে চিলি পর্ক, মশালা চিপস আনাই। ডিপস আমি তৈরি করি। মেন কোর্সে বিরিয়ানি, চাপ, ফিরনি। সঙ্গে কাজু, পেস্তা। কখনও আলু-ডাল-ডিম সেদ্ধ আর ভাত থাকে। মাসের সেকেন্ড সানডে টলিউডে ছুটি থাকায় শনিবারটা পার্টি করি।’’ তবে পার্টিতে ঝগড়াঝাঁটিও লাগে। ‘‘একটা গেম নিয়ে একবার রাহুলের সঙ্গে আমার ফাটাফাটি ঝগড়া। ইন্দ্রাশিস খাবার নিয়ে এসেছিল। ঝগড়া দেখে বেচারা না খেয়েই চলে গেল! তবে এ ভাবে আমাদের বন্ডিংটাও স্ট্রং হয়েছে,’’ বললেন নীলাঞ্জনা। একেই বলে, সব ভাল যার শেষ ভাল।
যিশু-নীলাঞ্জনা, মিমি, অনিন্দ্য
রুক্মিণী মৈত্র আবার কোনও দিনই ডিস্কে গিয়ে পার্টি করতে ভালবাসেন না। তাঁর বার্থ ডে পার্টিও কোনও দিন বাড়ির বাইরে হয়নি। সেটাও শুধু বন্ধু, আত্মীয়দের নিয়ে। আর নাচেও কি নো নো? ‘‘আই লাভ ইট। মিউজিক চললে আই জাস্ট গো ম্যাড। হাউজ পার্টিতে নাচ, তার পর গিটার নিয়ে গান, সকালে বেরিয়ে দুধকোলা, জিলিপি... উফ, মজাই আলাদা!’’ রুক্মিণীর গলায় উচ্ছ্বাস। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এ বছর ক্রিসমাসের ছুটি ইউরোপে কাটাবেন। ফিরে এসে জানুয়ারিতে থাকবেন বাংলাদেশে। ‘‘কলকাতার পার্টি সিজন এ বার মিস করব। যদিও এখন আর ক্লাবিং ভাল লাগে না,’’ বললেন পরমব্রত।
আরও পড়ুন: মীনাকুমারীর বায়োপিকে সানি লিওন?
টলিউডের নতুন তারাদের মধ্যে পার্টি ভালবাসেন ঋদ্ধি সেন। ‘‘গত দু’ বছর ধরে বছরশেষে আমি, ঋতব্রত, সুরঙ্গনা, রাজর্ষি, মেঘলা ও পুরনো বন্ধুরা মিলে আমাদের বাড়িতে পার্টি করি। গত বছর রোস্টেড কোয়েল-চিকেন, ম্যাশ় পটেটোর সঙ্গে মায়ের তৈরি ক্যারামেল পুডিংও ছিল। এ বার আমি কেক বানাব। সঙ্গে কফি আর রেড ওয়াইন। তবে গত বছরে এক বন্ধু এমন ঝামেলা করেছিল যে, ও চলে যেতে সকলে হাঁফ ছেড়েছে।’’
বনি সেনগুপ্তও বছর শেষে চুটিয়ে পার্টি করেন গার্লফ্রেন্ড কৌশানী ও পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে। ‘‘২৪ ও ২৫-এ ক্লাবে পার্টি, পরদিন ফ্যামিলি পিকনিক, তার পর ৩১-এর পার্টি। ওই দিন খাওয়ায় বিধিনিষেধ থাকে না। লুচি থেকে শুরু করে বিরিয়ানি সব খাই। আগে অকেশনালি ড্রিঙ্ক করতাম। তবে বিক্রম-সনিকার দুর্ঘটনার পর আর ড্রিঙ্ক করি না। কারণ, নিজেকে ড্রাইভ করতে হয়। তবে কৌশানীর সঙ্গে সম্পর্কের পরে এখন আর পার্টিতে মেয়েদের ঝারি মারতে পারি না। কৌশানী দেখলেই সমস্যা,’’ মন খুলে বললেন বনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy