পিচগলা রাস্তায় ঠায় দাঁড়িয়ে। চাঁদিফাটা রোদ্দুর। একটা ছাতা পর্যন্ত সঙ্গে নেয়নি। সানগ্লাস, টুপি, জলের বোতল তো দূর অস্ত। চল্লিশ ডিগ্রিতেও নো টেনশন। গরম বাড়লেই প্রেমও জমে ক্ষীর। রোদ্দুরের সঙ্গে রাস্তার প্রেম যতই জমুক, যতই ঘেমো থাকুক দৈনন্দিন— তা বলে তো আর স্টাইলে পিছিয়ে থাকা যায় না বলুন। ওয়ার্ড্রোব সাজিয়ে ফেলুন খাদি, মলমল, লিনেনে। আর র্যাপিং, লেয়ারিংয়ের যুগলবন্দিতে বন্দিশ শুরু করুক বৈশাখি ফ্যাশন।
প্রচলিত মিথকে ছক্কা মেরে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পাল। তাঁর কথায়,‘‘ঠিক ফ্যাব্রিক বেছে নেওয়াটা আসল কাজ। সুতি, লিনেন, মলমলের কাপড়ের লেয়ারিং হলে মোটাদেরও একটু রোগা লাগে। বাল্কি ফিগার হলে কটন প্রিন্টেড লেয়ারিং জ্যাকেট পরুন, দারুণ মানাবে। খুব সাধারণ ড্রেসের ওপরও একটা ডেনিমের জ্যাকেটের র্যাপিং আলাদা করে কমপ্লিমেন্ট করার পক্ষে যথেষ্ট।’’
সিঙ্গল ড্রেস
পোশাকে লেয়ারিং বা র্যাপার মানেই বিচ-ওয়্যারের কথা মনে হয় ফ্যাশন ডিজাইনার চন্দ্রাণী সিংহ ফ্লোরার। কিন্তু ডেলি রুটিনেও কী ভাবে লেয়ারিং দিয়ে ফ্যাশনেবল হয়ে ওঠা যায় তার উপায় শেয়ার করলেন তিনি। জানালেন, র্যাপ স্কার্টের সঙ্গে পরুন ডিজাইনার শার্ট। র্যাপ পালাজো ট্রাই করুন লুজ প্যান্ট দিয়ে। স্লিভলেস ড্রেস পরলে একটা ডিজাইনার স্টোল র্যাপারের মতো করে নিতে পারেন। ভেতরে ওভারকোট পরে ম্যাক্সি ড্রেস দিয়ে র্যাপ করতে পারেন লিনেন, হ্যান্ডলুম, সুতির কোনও সিঙ্গল র্যাপ ড্রেস।
স্টোল লেয়ার
গরমের জন্য কটন, লিনেন, খাদির মতো সফট মেটিরিয়াল বেছে নিন। সঙ্গে পরুন চাইনিজ কলারের সাদা স্লিভলেস ব্লাউজ। যেটা আপনাকে গরম থেকেও বাঁচাবে আর দেবে এলিগ্যান্ট লুক। কোমরবন্ধের মতো করে একটা স্টোল র্যাপ করে নিন। শাড়ির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে পরতে ভুলবেন না যেন।
ব্রাঞ্চ লেয়ারিং
মেয়ে মহলের ব্রাঞ্চ বা বাচ্চাদের নিয়ে ডে-আউট দু’টোতেই কমফর্ট মাস্ট। তার জন্য বেছে নিন ঢিলেঢালা জ্যামিতিক নকশার লম্বা পোশাক। সঙ্গে ভেজিটেবল প্রিন্টের বোতামহীন কোট। ফর্মাল লুকের জন্য একই সাজ চলতে পারে। শুধু প্রিন্ট আর গাঢ় রঙ বাদ দিন।
ব্লেজারে টুইস্ট
ক্রিয়েটিভ লেয়ারিং মানেই শুধু মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ নয়। বিভিন্ন রকম ফ্যাব্রিক আর চেনা ছকের বাইরে বেরিয়ে পোশাক ডিজাইনিং করুন। সেক্ষেত্রে দর্জিকে দিয়ে ভারতীয় টেক্সটাইল ব্যবহার করে ব্লাউজের মতো ফর্মাল ব্লেজার বানিয়ে নিন। সঙ্গে পরুন ফ্লোরাল স্কার্ট। পুরো সাজটাই টুইস্ট আনতে কোমরে বেল্টের মতো জড়িয়ে নিন সুতির দোপাট্টা।
ধোতি ফিউশন
পশ্চিমী আপার ওয়্যারের সঙ্গে ট্রাই করুন ধোতি প্যান্ট বা শারারা। স্টোল দিয়ে লেয়ার করে তার ওপর চাপিয়ে নিন এথনিক জ্যাকেট। সাজে ফিউশন এফেক্ট আনতে পিপ-টো পাম্পশু মাস্ট।
বোহো লুক
নিজেকে বোহেমিয়ান লুকে সাজাতে গরমের মতো আদর্শ সময় আর দু’টো হয় না। সঙ্গে ক্রপ টপের ওপর চাপিয়ে নিন মাল্টিকালার ক্রপ জ্যাকেট। প্রিন্টেড কুলোটেস ট্রাউজার্স লুকটাকে কমপ্লিট করবে। অথবা পরতে পারেন স্বচ্ছ জ্যাকেট। এই আউটফিটে ব্যান্ডেনা ট্রাই করুন। ইভনিং আউটের আলাদা মস্তি দেবে। আবার সফিস্টিকেটেড লুক পেতে চাইলে জাস্ট খুলে ফেলুন।
শাড়ি রংবাহারি
শাড়ি পরলেও সুন্দর ভাবে পোশাকে লেয়ারিং করা যায়। কী ভাবে? মুশকিল আসানে অগ্নিমিত্রা জানালেন, ধরুন কেউ বাটিক, ব্লক বা ডাবু প্রিন্টের একটা স্মার্ট শাড়ি পরেছে, যার কোথাও হালকা মেরুন ডট রয়েছে। এর সঙ্গে ম্যাট মেরুন স্ট্রাইপড জ্যাকেট পরলেই কেল্লাফতে।
স্কার্ফ
চন্দ্রাণীর মতে, স্লিভলেস জাম্পসুটের সঙ্গে স্কার্ফ র্যাপ করতে পারেন। লুজ স্কার্টের সঙ্গে লম্বা বেল্ট দিয়ে পরুন র্যাপার অন টপ। শাড়ির সঙ্গে সাধারণ ব্লাউজ না পরে ট্রাই করুন র্যাপ অন জ্যাকেট। স্লিভলেস টি-শার্ট পরলে লেয়ারিংয়ের জন্য লম্বা ওড়না নিতে পারেন ।
রঙমিলান্তি
গরমের জন্য আদর্শ যে কোনও প্যাস্টল শেড। সাদা, বেজ, ধূসর, অলিভ সবুজ, হলুদ, নীল, পাউডার পিঙ্কের মতো বেসিক রং ট্রাই করুন। দিন বা রাতের সাজ আলাদা করতে বদলে ফেলুন অ্যাক্সেসেরিজ।
টিপস
• শাড়ির সঙ্গে সাধারণ ব্লাউজ পরলে ক্যারি করুন লম্বা জ্যাকেট বা লম্বা কেপ।
• ব্লাউজ না পরে শার্টও পরতে পারেন। সেক্ষেত্রে শাড়িটা প্লিট করে নিয়ে কোমরে বেল্ট দিয়ে পরুন।
• পালাজোর ওপরে পরুন মিড লেন্থের র্যাপার অন স্কার্ট। যাতে হাঁটলে পালাজো দেখা যায়। আর ওপরে একরঙা ইনারের ওপর থাকুক প্রিন্টেড জ্যাকেট।
• স্কার্ট র্যাপ করে কোমরে সিলভার জুয়েলারি ঝুলিয়ে নিন।
• জিপসি স্কার্ট বা বাউন্সি স্কার্টের সঙ্গে হাতে ফ্রিল দেওয়া টপ ট্রাই করতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy