Advertisement
E-Paper

কহানি’র লাস্ট শটের পর বিদ্যা বালন জড়িয়ে ধরেছিলেন

ছবির কাজ কমানোটা এখন টার্গেট! কী প্ল্যান ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়ের?একশো আট না হলেও গোটা আষ্টেক নাম তো ওর আছেই! কচিবেলায় মা ডাকত লাড্ডু, এখন বাড়িতে ঋক, বন্ধুমহলে ঋত, নাটকপাড়ায় ঘেঁটকু! আর পরদায় ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়।

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৭ ০০:৫৩
ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়

ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়

একশো আট না হলেও গোটা আষ্টেক নাম তো ওর আছেই!

কচিবেলায় মা ডাকত লাড্ডু, এখন বাড়িতে ঋক, বন্ধুমহলে ঋত, নাটকপাড়ায় ঘেঁটকু! আর পরদায় ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়।

বেজায় অফার থাকলেও অভিনেতা-বাবা শান্তিলা‌লের একমাত্র পুত্তুর কিন্তু এই মুহূর্তে একটু-আধটু কাজ ছেঁটে দেওয়ার তালে। ২০১৮-তে আইএসসি যে!

ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলের গুডিবয় জানে, নামে যা-ই হোক, পরীক্ষায় লাড্ডু মানে বাকি সব ফুস্‌! মনে আছে, ছোট্টবেলায় বলে দেওয়া বাবার কথা, ‘‘বড় হয়ে তুমি বাসে চড়বে না প্লেনে, ভাড়াবাড়িতে থাকবে না বাংলোয়, ঠিক করবে তুমি নিজেই!’’ এমন এক-একটা কথা ওর পায়ের তলার জমিটা যেন একটু বেশিই পোক্ত করে দিয়েছে।

তবে রাত জেগে একটা করে সিনেমা দেখার অভ্যেস এখনও ছাড়েনি। বড় ভরসা বাবা আর চন্দনকাকুর (সেন) দেওয়া গামা গামা জিবিওয়ালা দুটো হার্ডডিস্ক!

গত সপ্তাহে ওর বায়োস্কোপিক-রুটিনে যা ছিল, তার কয়েকটা যেমন— ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’, ‘ম্যান ফ্রম দি আর্থ’, ‘লা লা ল্যান্ড’, ‘টোয়েন্টি ওয়ান গ্রামস্’... শুধু দেখা তো নয়, দেখার পর নেট-সার্চ করে রিভিউ পড়াটাও হ্যাবিট। ফলে প্রায়ই রাত দুটো-আড়াইটে-তিনটে। আবার কিছু সিনেমা দেখার পর কেমন যেন ধাঁধাঁ লেগে যায়, তখন ঘুমের তেরোটা! ‘ইনসেপশন’ দেখার পর ঘরের মধ্যে কেবল হেঁটেই সাবাড় হয়ে গিয়েছিল আধটা ঘণ্টা। ‘বার্ডম্যান’ দেখে মনে হচ্ছিল, এর সঙ্গে কি ‘কারুবাসনা’ আর ‘অদ্য শেষ রজনী’র মিল আছে?

সিনেমা দেখাটা ছাড়েনি। গল্পের বইটাও নয়। সদ্য ‘শেষের কবিতা’য় আঠা। সঙ্গে গিটার বাজানোটাও চলছে। দুটো নাটকের অভিনয় আছে। ছবির কাজে ‘রংবেরঙের কড়ি’ আর ‘পর্ণমোচী’র ডাবিং বাকি। এর বাইরে অবশ্য এক্ষুনি বড় ধামাকায় যেতে চায় না বেহালা সরশুনার গ্ল্যামার বয়! তবে চ্যাটার্জি পাড়া’র নাটকের দল ‘নাট্যটেনমেন্ট’ চলছে ছ’বছর ধরে। সেখানে ‘হসন্তপুরের হাসি’ নামে একটা নাটকের মকশো হচ্ছে। তাতে একটুআধটু ‘বুড়ি’ না ছুঁলে ম‌ন মানে না! তবে এখন থেকেই পাখির চোখ, ইংলিশ বা কমপ্যারেটিভে অনার্স। সঙ্গে সিনেম্যাটোগ্রাফি। পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন হবে কিন্তু ‘কালাপানি’র ও পারেই!

‘কহানি’র লাস্ট শটের পর বিদ্যা বালন জড়িয়ে ধরেছিলেন। সেই যে সেই শট, যেখানে চা-বয় বিষ্ণু, তার বিদ্যাদিদিকে ট্রানজিস্টর রেডিয়োটা হাতে তুলে দেবে! অথচ এই ছবিরই প্রথম টেক কিনা সাতাশ বার দেওয়ার পর ‘ওকে’ হয়!

‘ওপেন-টি-বায়োস্কোপ’-এর শ্যুটিংয়ের শেষ দিন এতটাই মন খারাপ করছিল যে, ভেউ ভেউ করে কেঁদে ফেলেছিল, হাওড়া স্টেশনের কাছে ভাঙাচোরা বাড়িটার চাতালে।

সদ্য ‘বেস্ট এডুকেশন ফিল্ম ফিকশন’ সেকশনে জাতীয় পুরস্কার পাওয়া ‘দ্য ওয়াটার ফ‌ল’-এর শ্যুটের কথাই বা ভোলে কী করে! রৌরকেল্লায় সাতটা দিন। কো-অ্যাক্টর সোহম মৈত্র আর ঋতব্রত এক ঘরে।

সারাটা রাত কী হুল্লোড়, কী হুজ্জতি! সোহমের বিচ্ছু বিচ্ছু ইনস্ট্যান্ট ছড়া বলা, ভোজপুরি উৎপটাং গান চালিয়ে নাচ। গলা ফাটিয়ে হো হো হি হি! কিন্তু ভোরেই আবার ফ্লোরে গিয়ে প্রচণ্ড সিরিয়াস ছবির শট। সংলাপও যেখানে বানিয়ে বানিয়ে প্লট মাফিক বলাটা ছিল ‘ডেমোক্রেটিক রাইট’!

‘রংবেরঙের ছবি’-তে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে কাজ করাটাই একটা ব্যাপক জার্নি হয়ে গেল ওর কাছে। প্রত্যেকটা শটে ‘ঋতুপিপি’র কাজ, ওঁর ক্যামেরা বা লাইট নেওয়া দেখে তবে মগজে ঢুকেছে, কেন ওই মহিলার চারপাশে একটা ‘অ্যরা’ জ্বলজ্বল করে!

সদ্য শ্যুটিং শেষ হওয়া ‘পর্ণমোচী’র কথা তুলতেই ‘ওফ্’ বলে বড় একটা শ্বাস! তার পরই নীচের দিকে মাথা ঝোঁকানো। তবে প্রথম বার এতটা কালো চরিত্র পেয়ে যে খুব উত্তেজিত, মুখ-চোখ-কথাতেই তা ঠিকরে বেরোয়। ঋতব্রত দেখতে চায়, এত দিনে তার ‘মিষ্টি দুষ্টু’ স্ক্রিন-ইমেজের ঠিক উল্টো দিকে হেঁটে যাওয়ার পর লোকে কী বলে! দশ দিনের শিডিউল। সবাই নাকি গরু-গাধার মতো খেটেছে। সে খাটনি গিয়েছে ওরও। বাড়তি ছিল, অনলের মতো বেয়াড়া বিকৃত ছেলেকে হজম করে নিজের মধ্যে বুনে দেওয়া! তাতে যে অ্যাদ্দিনে নিজে ছরকুটে যায়নি, এই রক্ষে!

ঠিক উল্টো অভিজ্ঞতা ‘দুর্গা সহায়’-এ। ছবি না পিকনিক, কী ছিল কে জানে! ইউনিটের খাবার খেয়েই আইঢাই, তার ওপর প্রায় দিন সোহিনী (সরকার), তনুশ্রী (চক্রবর্তী), নয় দেবযানীর (চট্টোপাধ্যায়) প্যাকিং-প্যাকিং হোম মেকিং! এর ওপর আন-এন্ডিং আড্ডা তো ছিলই! রাত আড়াইটেতেও প্যাকআপ করে লোকজন ওখানেই থেকে যেতে চাইত। কারণ আড্ডা জমে ক্ষীর! এক্কেবারে ছবির ‘বসাক পরিবার!’

সরশুনার গলি, তস্য গলির ভেতর এই মুখুজ্জে পরিবারটা ক’দিন আগেও এমনই ছিল। দোত‌ল‌া বাড়ি। চারটে মাত্র প্রাণী। হইহই আর চইচই।

হঠাৎ করে ছ’মাসের রোগভোগে ‘আম্মা’ চলে গিয়ে তাঁর ঋক-কে যেন খাঁ-খাঁ করে দিয়ে গিয়েছে! বাবা-মায়ের আগে আম্মাই তো ছিল ওর দিনের অনেকটা সময় জুড়ে।

দেবশঙ্কর মুখোপাধ্যায়

Ritobroto Mukherjee Tollywood Actor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy