বাড়িতেই হোক বা অফিসে আমরা মাঝে মাঝে খুবই হতাশায় ভুগি। বাড়িতে সুস্বাদু রান্না করেও প্রশংসা না পেলে খুব মন খারাপ হয়। খুব সুন্দর করে সাজগোজ করার পর স্বামী যদি প্রশংসা না করেন তখন খারাপ লাগে।
আজ এই লেখায় অফিসের মন খারাপ নিয়ে আলোচনা করব। সারা বছর ধরে কাজ করে আসছেন খুব খেটে, কিন্তু বছরের শেষে দেখলেন অ্যাপ্রাইজালের সময় আপনার মাইনে সে ভাবে বাড়ল না। হয়তো ভেবেছিলেন এই বছর প্রোমোশন হবে, কিন্তু হল না।
এমনটা হলে কী করবেন? ব্যর্থতাকে এমনি এমনি মেনে নেবেন, নাকি আত্মবিশ্লেষণ করার চেষ্টা করবেন।
আমি দুই দিকেই আলোকপাত করার চেষ্টা করব। এক দিকে রয়েছেন আপনি অর্থাৎ অধস্তন কর্মী। অন্যদিকে রয়েছেন আপনার হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট বা বস।
কর্মীদের দৃষ্টিকোণ থেকে
প্রোমোশন না পেলে কী করবেন? মাইনে না বাড়লে বা কী করবেন?
১) ভেবে দেখুন একবার। আপনি সারা বছর কাজ করেছেন কিন্তু কাজের মধ্যে কোনও গোছ ছিল না হয়তো। এমনও হতে পারে বিভিন্ন প্রজেক্টের পেছনে আপনি দীর্ঘ সময় ব্যয় করেছেন কিন্তু কাজের ফলাফল আশানুরূপ হয়নি। পরের বছর থেকে প্রজেক্টগুলোতে বুদ্ধিমানের মতো সময় ব্যয় করুন। স্মার্টলি কাজ করুন, যাতে কাজের ফল আশানুরূপ হয়, এবং আপনার মাইনেও বাড়ে।
২) বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসাইনমেন্ট ফেলে অপ্রয়োজনীয় ছোটখাটো কাজের পেছনে সময় নষ্ট করেছেন। এটা করবেন না এ বার থেকে। কোন কোন কাজে গুরুত্ব দেবেন তার একটা তালিকা তৈরি করুন। কিছু কিছু কাজ যেগুলো আপনি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করতেন কিন্তু আসলে গুরুত্বপূর্ণ নয় সেগুলো কাজের তালিকা থেকে বাদ দিন।
৩) আপনার ইমিডিয়েট বসের সঙ্গে কী সঠিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পেরেছেন? সম্পর্ক এমন ভাবে গড়ে তুলবেন যাতে তিনি আপনার সমস্যাগুলো বুঝতে পারেন। আপনার হয়তো মনে হচ্ছে আপনারই এক সহকর্মীকে বেশি পছন্দ করছেন বস। এবং তাঁর ভাল প্রোমোশন হয়েছে বা মাইনে বেড়েছে—কারণ সেই সহ কর্মী সব সময় বসের ছোটখাটো কাজ করে দেন। দেখুন এই ধরনের সাহায্য করার মধ্যে দোষের কিছু নেই। আপনিও নিজের চেনা পথের বাইরে বেরিয়ে বসকে সাহায্য করার চেষ্টা করুন। তবে হ্যাঁ যাই করুন না কেন নিজের নীতিবোধের বাইরে বেরোবেন না।
৪) বসকে তেল দেওয়ার কথা বলছি না। আমি এটা বলছি যে আপনার বস আপনার কাছে কিছু কিছু কাজে প্রশংসা দাবি করেন। সেই প্রশংসা করলে কোনও ক্ষতি নেই। আর এটাও ভাববেন না বস সব সময় আপনার কাজের জন্য পিঠ চাপড়াবেন।
বসের দৃষ্টিকোণ থেকে
১) ‘কী রেজাল্ট এরিয়া’র তথাকথিত ছক মেনে মূল্যায়ন করবেন না। যদি দেখেন আপনার অধস্তন ঠিক যতটা কাজ দেওয়ার দরকার ততটা দিতে পারছেন না তা হলে মাঝে মাঝে তাঁদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলবেন। সমালোচনা এবং প্রশংসা কর্মীদের কাজের উন্নতিতে সাহায্য করতে পারে।
২) কী ভাবে কর্মীদের অনুপ্রাণিত করা যায় তা ভাবুন। কর্মীদের মধ্যে একদল আছেন যাঁরা নিজেরাই নিজেদের অনুপ্রাণিত করতে পারেন। কেউ কেউ আবার বাড়িতে নানা সমস্যার সময় ছুটি চান। অন্য কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে পারলে তাঁদের ছুটি দিন। কোম্পানির নিয়মে যদি থাকে তো ভাল কাজের জন্য কর্মীদের আর্থিক পুরস্কার দিন।
৩) কর্মীদের উন্নতিকল্পে সুপরামর্শ দিয়ে সাহায্য করুন। কেরিয়ারের লক্ষ্য স্থির করে দিন। যাতে তাঁরা অর্থপূর্ণ ভাবে অগ্রসর হতে পারেন। কর্মীরা যাতে অন্যের কাজের সঙ্গে তুলনা করে আত্মমূল্যায়ন করতে পারেন সে দিকে নজর রাখুন।
৪) কর্মীদের কাজ কী ভাবে কোম্পানির উপকারে আসে সেটা তাঁদের বুঝিয়ে দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy