Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

উত্তরবঙ্গের মানুষ, পরিবারের কাঠের ব্যবসা। ঘন জঙ্গল মুড়িয়ে কাটা হচ্ছে রাশি রাশি গাছ, দেখে কষ্ট হত। স্বপ্নের বীজটাও সেখানেই ছিল, নইলে কলেজে ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করা, দেবব্রত বিশ্বাসের কাছে গান শেখা ছেলে কেনই বা পড়ে থাকবেন ‘কাঠের বিকল্প’ কী হতে পারে, সেই নিয়ে?

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০০:৩৮
Share: Save:

বংশজ: নতুন পথের দিশা

উত্তরবঙ্গের মানুষ, পরিবারের কাঠের ব্যবসা। ঘন জঙ্গল মুড়িয়ে কাটা হচ্ছে রাশি রাশি গাছ, দেখে কষ্ট হত। স্বপ্নের বীজটাও সেখানেই ছিল, নইলে কলেজে ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করা, দেবব্রত বিশ্বাসের কাছে গান শেখা ছেলে কেনই বা পড়ে থাকবেন ‘কাঠের বিকল্প’ কী হতে পারে,সেই নিয়ে? সেই ভাবনা থেকেই ‘বংশজ’-র জন্ম, বলছিলেন অরুণ গঙ্গোপাধ্যায়। বংশজ, মানে বাঁশ থেকে জন্ম যার।

বাঁশ আসলে গাছ নয়, ঘাস। একটা গাছ কেটে ফেললে আর বাড়ে না, মরে যায়, বাঁশ কেটে ফেললে ফের গজায়। গাছ ক্রমশ কমে আসছে, আর বাঁশ জন্মায় এখানে-ওখানে, ভারতে, এশিয়ায়, সর্বত্র। অরুণ ও তাঁর বন্ধু সহকর্মীদের দীর্ঘ সতেরো বছরের পরীক্ষানিরীক্ষায় বাঁশকে করা গেছে শাল, টিক, ওক-এর চেয়েও শক্ত। মুম্বই আইআইটি জানিয়েছে, ‘মাইল্ড স্টিল’-এর চেয়েও চার-পাঁচ গুণ মজবুত এই ‘ইঞ্জিনিয়ার্ড ব্যাম্বু’। অরুণের নরেন্দ্রপুর ও শিলিগুড়ির কারখানায় হেন জিনিস নেই, যা বাঁশ দিয়ে বানানো হয়নি। দেওয়াল ও মেঝের টাইল্‌স, দরজা, রেলিং, সিঙ্গল-ডবল বেড, ডাইনিং বা কফি টেবিল, ক্যাবিনেট, পরদার রড, পার্টিশন, চানঘরের র‌্যাক— কাঠ বা প্লাইউডের তৈরি যা-কিছু সচরাচর বাড়িতে বা অফিসে ব্যবহার হয়, সমস্ত কিছু বানিয়েছেন বাঁশ দিয়ে।

ছবির ফ্রেম, কলমদান, কোস্টার, ম্যাট, অ্যাশট্রে-র মতো নিত্যব্যবহার্য বা উপহারসামগ্রী তো আছেই। বাঁশ এতই হালকা ও নমনীয়, প্রয়োজনমত বাঁকিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিম, করোগেটেড শিট, সিঁড়ি— জল বা উই ধরবে না, আগুনেও ক্ষতি হবে না সহজে। এখন সারা পৃথিবীতে গবেষণার বিষয় ‘আর্থকোয়েক আর্কিটেকচার’, বাঁশ যার অন্যতম প্রধান উপকরণ। লোকে আজকাল বাস্তু মানেন, বাঁশ সে দিক দিয়েও শুভ। অরুণের স্বপ্ন, পৃথিবীতে আর একটাও গাছ কাটা হবে না; লক্ষ্য: বাঁশকেই কাঠ বা প্লাইউডের সর্বজনীন ও ‘স্বদেশি’ বিকল্প করে তোলা। ওঁর কাছে পরিকাঠামোও প্রস্তুত, শুধু সচেতন, পরিবেশবান্ধব ক্রেতা চাই। সাধারণ মানুষ, বাণিজ্যিক সংস্থা তো বটেই, বংশজ-র পরিষেবা পেতে পারে সরকারও।

ভাষাচার্য

ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় (১৮৯০-২০১৫) দু’বার এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাঁর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী সদ্য পূর্ণ হল। সেই উপলক্ষে সোসাইটির উদ্যোগে ১৬-১৭ ফেব্রুয়ারি, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিদ্যাসাগর হলে একটি জাতীয় আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে। পৌরোহিত্য করবেন রমাকান্ত চক্রবর্তী, প্রধান অতিথি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়, উদ্বোধনে মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। দু’দিনের আলোচনায় উঠে আসবে তাঁর জীবনের নানা দিক। সঙ্গে আছে তাঁকে নিয়ে সোসাইটির সংগ্রহ থেকে একটি প্রদর্শনী এবং প্রকাশিত হবে একটি পুস্তিকাও। সঙ্গের ছবিটি পরিমল গোস্বামীর তোলা।

মৃত্তিকা

বাংলায় পোড়ামাটি শিল্পের ধারাটি লোকশিল্পের তালিকায় উজ্জ্বল। গ্রামগঞ্জের অজ্ঞাত শিল্পীরা তাঁদের জীবিকার তাগিদে একগুচ্ছ সৃষ্টির পূর্বাপর পুনরুৎপাদন নিরন্তর করে চলেছেন। ত্রিমাত্রিক এই কাজে মাটিই হল সুলভ উপকরণ।গাছের ডালপালা জ্বালিয়ে এর স্থায়ীকরণ বা পোড়ামাটি শিল্পে রূপান্তর। হাওড়া জেলার বাগনান থানার ‘ছয়ানি গুজরাট’ গ্রামে গড়ে উঠেছে ‘মৃত্তিকা’ নামে এক মেয়েদের সমিতি। এঁদের মধ্যে সবিতা মান্না অনেক দিন কাজ করেছেন শিল্পী তপন করের সঙ্গে। তার পর যোগ দিয়েছেন আরও অনেকে। এঁদের কাজ নিয়ে দেশপ্রিয়

পার্কের সি এফ এ গ্যালারিতে ‘মৃত্তিকা’র প্রদর্শনী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ, ৩-৭টা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবেন বিশিষ্ট শিল্পীরা। সঙ্গের ছবি ‘গৌতমী’, শিল্পী সবিতা মান্না।

পৃথিবীর জ্বর

পৃথিবীর বড় জ্বর। আক্ষরিক অর্থেই। একেবারে হালের পর্যবেক্ষণে পাওয়া তথ্য বলছে, ধরিত্রীর বুকে গড় উষ্ণতা বেড়ে গিয়েছে এক ডিগ্রি সেলসিয়াস। একে দেড়, নিদেনপক্ষে দুই ডিগ্রির মধ্যে বেঁধে ফেলার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে সমস্ত দেশকে, এমনই অঙ্গীকারের ধ্বনি উঠেছে গত ডিসেম্বরে প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনে। এরই সঙ্গে তাল মিলিয়ে ত্রিপুরার ‘জ্ঞান বিচিত্রা’ ও ‘অর্কনীড়’-এর যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত হচ্ছে জ্বর বাড়ছে পৃথিবীর/প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে নতুন দিশা/উষ্ণায়ন মোকাবিলায় একগুচ্ছ উপায়। যুগ্ম লেখক সৌরশক্তি বিশেষজ্ঞ শান্তিপদ গণচৌধুরী এবং প্রবীণ বিজ্ঞান সাংবাদিক বিমল বসু। গ্লোবাল ওয়ার্মিং বিষয়টির সামগ্রিক উপস্থাপনার পাশাপাশি এর থেকে মুক্তির বিবিধ উপায়ও বাতলেছেন লেখকরা।

নাট্যচর্চা

পঁয়তাল্লিশে পা দিল দলটি। এ যাবৎ ষাটটিরও বেশি নাটক প্রযোজনা-অভিনয় করে ফেলেছে তারা। সত্তরের দশকে জন্ম নেওয়া রঙ্গলোক নাট্যসংস্থার প্রধান পুরুষ শ্যামল চক্রবর্তী বললেন, ‘নাট্য প্রযোজনা-অভিনয় ছাড়াও আমরা বার্ষিক রঙ্গলোক শারদ পত্রিকা এবং একদা দলের প্রয়াত পরিচালক গৌতম সেনের স্মরণে একটি স্মারক সম্মানও দিয়ে থাকি।’ রঙ্গলোক প্রযোজিত ‘পরশপাথর’ নাটকটি কয়েক বছর আগে নাট্যরসিকদের কাছে সমাদৃত হয়েছিল। এ বার সমরেশ বসুর উপন্যাস অবলম্বনে, তীর্থঙ্কর চন্দ-র নাটক ‘শেকল ছেঁড়া হাতের খোঁজে’ ১৬ ফেব্রুয়ারি তপন থিয়েটারে সন্ধে সাড়ে ৬টায় মঞ্চস্থ হবে। নাটকটি মূলত ১৯৫২-’৯২-এর পটভূমিতে বাম রাজনীতির উত্থান, বিপর্যয় এবং সম্ভাবনার দলিল। নির্দেশনায় শ্যামল চক্রবর্তী। অন্য দিকে, অশোকনগর নাট্যমুখ-এর ‘নেমেসিস’ নাটকটি ত্রিপুরায় মঞ্চস্থ হতে পারেনি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে। পরে পাটলিপুত্র নাট্য মহোৎসবে আমন্ত্রিত হয়ে তা বিপুল জনপ্রিয়তা পায়, জানালেন নির্দেশক অভি চক্রবর্তী। অনেক দিন পর এ বার তা ১৯ ফেব্রুয়ারি, শিশির মঞ্চে, সন্ধে সাড়ে ৬টায়।

ভাষা উৎসব

l ‘মানুষ নির্মাণ করে প্রয়োজনে, সৃষ্টি করে আনন্দে। তাই ভাষার কাজে মানুষের দুটো বিভাগ আছে— একটা তার গরজের, আর-একটা তার খুশির, তার খেয়ালের।’ এমন করে ভাষা-পরিচয় সন্ধান করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি ১৯-২১ ফেব্রুয়ারি আয়োজন করছে ভাষা উৎসব। বাংলা ভাষা নির্মাণের প্রধান ব্যক্তিত্ব ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে স্মরণ করে উপস্থাপিত হবে বিদ্যাসাগর স্মারক বক্তৃতা, ২১ ফেব্রুয়ারি ৬টায়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে অভিভাষণ দেবেন আকাদেমির সভাপতি শাঁওলী মিত্র। ১৯ ফেব্রুয়ারি সুভাষ মুখোপাধ্যায় স্মরণ, বলবেন প্রণব বিশ্বাস ও রামকুমার মুখোপাধ্যায়। ২০ ফেব্রুয়ারি জীবনানন্দকে নিয়ে বলবেন স্বপন চক্রবর্তী: ‘দুই শব্দহীন শেষ সাগরের মাঝখানে— জীবনানন্দ, ইতিহাস ও নৈঃশব্দ্য’।

নাটকের জন্য

স্নাতক হওয়ার পর ১৯৭১-’৭২ নাগাদ থিয়েটারের পোকা এমন ভাবে পেয়েছিল যে, বাড়ির বড়দের কাছে বকা খাওয়ার ভয়ে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি বইয়ে থিয়েটারের স্ক্রিপ্ট লুকিয়ে মুখস্থ করতেন। এক দিন বাবা তা দেখে স্ক্রিপ্টটা যথাস্থানে রেখে, বইটা নিয়ে চলে গেলেন। সেই সঙ্গে দুলাল লাহিড়ীও ‘শাপে বর’ পেলেন। বই ফেরত আনতে গেলে বাবা বললেন, ‘পড়ার বই তো দরকার নেই। তুমি বরং থিয়েটারটাই মন দিয়ে করো।’ তখন থেকেই অভিনয়ের সঙ্গে যোগাযোগ, আজও নিরবচ্ছিন্ন।

নাঙ্কু মহারাজের কাছে তবলায় তালিম, ‘নৃত্যগীতের চর্চা ছিল বাড়িতে, মা সেতার বাজাতেন, বড় বোন ধ্রুপদী গান করতেন, ছোট বোন কত্থক, আমি তবলায় সঙ্গত করতাম।’ ‘রাজকুমার’ নাটকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরেই তাঁর পেশাদার থিয়েটারজগতে প্রবেশ। প্রাণিত হয়েছেন মনোজ মিত্র, বিভাস চক্রবর্তী, দিলীপ রায়, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, সুপ্রিয়া দেবীদের থেকেও। ‘সুন্দরম’-এ তাঁর অভিনয় দেখে তপন সিংহ তাঁকে ‘আদালত ও একটি মেয়ে’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দেন। তার পর, তাঁর ‘বৈদুর্য রহস্য’, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ‘গৃহযুদ্ধ’, অপর্ণা সেনের ‘পারমিতার একদিন’ ইত্যাদি। এখন করছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ধুমকেতু’ এবং অঞ্জন দত্তের ‘চিড়িয়াখানায় ব্যোমকেশ’। এ ছাড়াও নানা ছবি, থিয়েটার ও টিভি সিরিয়াল। যোজক নাট্যসংস্থার প্রাণপুরুষও তিনি। ১৭ ফেব্রুয়ারি অমিত মৈত্রের নাটক ‘আবিষ্কার’ মঞ্চস্থ হবে সাড়ে ৬টায় গিরিশ মঞ্চে। পরিকল্পনা, সম্পাদনা, নির্দেশনা ও অভিনয়েও তিনি। পরের অভিনয় ২৮ ফেব্রুয়ারি অ্যাকাডেমিতে, দুপুর ৩টেয়।

বিরল

শাস্ত্রীয় ও লোকসঙ্গীতে নানা তালিম তো নিয়েইছেন, উত্তরাধিকারে পেয়েছেন পিতা হেমাঙ্গ বিশ্বাসের লোকগানের শিক্ষা। রঙিলী বিশ্বাস। যাঁর গান শুনে শুভা মুদ্‌গল লিখেছেন ‘হোয়াট আ গর্জাস, এক্সপ্রেসিভ ভয়েস ইউ হ্যাভ অ্যান্ড হোয়াট আ গ্রেট লেগাসি ইউ আর নারচারিং’। রঙিলীর বিরল আঙ্গিকে গাওয়া দশটি বাংলা গানের সিডি ‘অফুলা কদম’ (জিরোনা এন্টারটেনমেন্ট)। এতে রয়েছে ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, লালনের গান। সঙ্গে ঘুমপাড়ানি, শ্রীহট্টের ধামাইল, বিচ্ছেদী, অসমের গোয়ালপাড়ার বিয়ের গান। উত্তর ও রাঢ় বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের গায়ক-বাদক গুণী শিল্পীর দলটিকে নিয়ে দিনের পর দিন মহড়া দিয়েছেন রঙিলী; বর্ধমান, বীরভূমের অজয়-তীরবর্তী নানা আখড়ায় বা আশ্রমে— কেঁদুলির ‘তমালতলায়’ বা গৌরবাজারের ‘আরশিনগর’-এ। এই অভিনব সিডিটির প্রকাশ ১৯ ফেব্রুয়ারি উইভার্স স্টুডিয়োতে সন্ধে সাড়ে ৬টায়। থাকবেন অমিয় দেব, সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়, প্রণব বিশ্বাস, প্রসূন মজুমদার, হিরণ মিত্র, শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়। গাইবেন অম্বরীশ সেন ও শিল্পী নিজে।

গজলের রানি

‘মালিকা-এ-গজল’ (গজলের রানি) শিরোপা পেয়েছিলেন, তাঁর গলায় গজল দাদরা আর ঠুংরি শুনে মাত হয়ে যেতেন রসিক শ্রোতারা। হিন্দুস্থানি রাগ সঙ্গীতে বেগম আখতার (১৯১৪-’৭৪) আজও আইকন। সত্তর দশকের শেষে যখন ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ করলেন সত্যজিৎ, তখনও সে ছবিতে তিনি হয়ে উঠলেন রহস্যের ‘ক্লু’। উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে জন্ম, আখতারি বাঈ ফৈজাবাদী— তাঁর জন্মকালীন নাম। সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি সম্মান ও পদ্মভূষণ-এ ভূষিত এই শিল্পীকে নিয়েই ছবি করেছেন নির্মল চন্দ্র দান্দ্রিয়াল— ‘ইন প্রেজ অব দ্যাট এঞ্জেল ফেস’। দিল্লির অ্যাকাডেমি’রই প্রযোজনা, দেখানো হবে ম্যাক্সমুলার ভবনে, ১৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার সন্ধে সাড়ে ৬টায়। গ্যেটে ইনস্টিটিউটের ডকু-ফোরাম-এর উদ্যোগে। অন্য দিকে নন্দনে ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধে ৬টায় ‘ন্যাশনালিজম, কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড ইন্ডিয়ান সিনেমা’ নিয়ে বলবেন বীরেন দাশশর্মা। উদ্যোগে ফোরাম ফর ফিল্ম স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যালায়েড আর্টস।

সম্পর্ক

পঞ্চদশ শতাব্দীর গোড়া থেকেই ডাচদের সঙ্গে ভারতীয়দের ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সেই সম্পর্কের সুতো যে আজও অটুট, মারিয়ান ভেরস্লুইস হেল্ডের চিত্রকূট আর্ট গ্যালারিতে ‘দ্য নেদারল্যান্ডস মিট ইন্ডিয়া’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীটি দেখলে তা বোঝা যায়।একই থিমের ওপর তোলা প্রদর্শিত ছবিগুলির মধ্য দিয়ে দুই দেশের মিল খোঁজার চেষ্টা করেছেন শিল্পী। প্রদর্শনীটি চলবে ২০ ফেব্রুয়ারি (৩-৮টা) পর্যন্ত। দুই দেশের ট্রাম এবং পথচারী, হকারব্যস্ত ফুটপাথের ছবির সঙ্গে আছে নানা স্থাপত্যের নিদর্শন, নিসর্গ দৃশ্যও।

প্রয়াণ

সত্তরের দশক থেকে শচীন দাশের লেখালিখি শুরু। দেশ পত্রিকায় তাঁর প্রথম গল্প ‘অলীক চতুর্ভুজ’ প্রকাশিত হতেই তিনি পাঠকদের নজর কাড়েন। ‘সলোমনের ডিঙা’, ‘চোখ’ তাঁর বিখ্যাত গল্পগুলির অন্যতম। ১৯৫০-এ বাংলাদেশের ফরিদপুরে তাঁর জন্ম।কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলায় এম এ। সরকারি চাকরিসূত্রে তিনি সুন্দরবন অঞ্চলটিকে হাতের তালুর মতো চিনতেন। সুন্দরবনের জীবন নিয়ে লিখেছেন নুনদরিয়া, বাঘের চোখ-এর মতো উপন্যাস। এক দিকে যেমন ১৩৫০-এর দাঙ্গা নিয়ে উপন্যাস লিখেছেন লাশ ভাইস্যা যাক, তেমনই বাঘাযতীনের উদ্বাস্তু কলোনির কাহিনি নিয়েও লিখেছেন উদ্বাস্তু নগরীর চাঁদ। বাংলা আকাদেমি থেকে ‘শান্তি সাহা’ পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। মাত্র ৬৬ বছর বয়সে তাঁর কলম থেমে গেল।

ছবি: শুভাশিস চক্রবর্তী

জীবন-গান

যে   রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙল ঝড়ে— দেবব্রত বিশ্বাসের সঙ্গে এই গান সতেরো বছর বয়সে। জর্জ বিশ্বাস নিজেই চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে গাইতে, শিক্ষক ছিলেন তাঁর। কাকলি রায়ের স্মৃতির আখ্যান জীবন জুড়ে গান (এবং মুশায়েরা) পড়তে-পড়তে পাঠক পৌঁছে যাবেন স্বাধীনতা-উত্তর বাঙালির সঙ্গীত চর্চার এমন এক ইতিহাসে, যেখানে রবীন্দ্রগান শ্বাসেপ্রশ্বাসে ছিল আত্মবোধনের গান। ছোট ছোট স্কেচে, গান-শেখার স্মৃতিলেখতে সেই শিল্পীদের সাধনার মুহূর্তগুলি, যাঁরা কবির গানকে করে তুলেছিলেন উত্তরণের গান। ‘দেবব্রত বিশ্বাস-শান্তিদেব-সুচিত্রা-কণিকা-নীলিমা... জীবনের শ্রেষ্ঠ স্মৃতি হয়ে আছে— ওঁদের কাছে গান শেখা।’ শান্তিনিকেতনই তাঁর ‘তীর্থক্ষেত্র’। জলপাইগুড়ির মেয়ে, ছাত্রাবস্থাতেই গায়িকা, উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম উস্তাদ পারভেজ খাঁর কাছে, বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের ছাত্রী, সত্তর দশকের শুরুতে তৈরি করেন ‘গান্ধার’— রবীন্দ্রগানের শিক্ষায়তন। আজও সেখানে ‘গান শেখাতে-শেখাতে আমি নতুন করে গান শিখছি’, লিখেছেন কাকলি। মোহরদি মন্ত্র দিয়েছিলেন ‘যত শেখাবে, তত শিখবে।’ আর শঙ্খ ঘোষ শুধু তাঁদের শিক্ষায়তনের অনুষ্ঠানের পরিকল্পক-ভাষ্যকারই নন, দীক্ষিতও করেন প্রতিনিয়ত: ‘গাইবার সঙ্গে-সঙ্গে সেই গানের ইতিহাস, সেই গানের প্রসঙ্গ, তার অর্থ, তার তাৎপর্য, তার জটিলতা... বুঝে নিতে চাই। এই অভ্যাসটি আমাদের করিয়ে দিয়েছেন শঙ্খদা।’ কাকলি কখনও ভাবেনইনি ‘গান্ধার’কে বড় করার কথা, কারণ ‘আমরা শুধু ঠিক ভাবে রবীন্দ্রনাথের গান জানতে চেয়েছি ও আমাদের মত করে, আমাদের সাধ্য-অনুযায়ী গাইতে চেয়েছি।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE