Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

একশো আশি বছর আগের এক ভারত সফর। বড়লাট লর্ড অকল্যান্ডের সঙ্গে কলকাতা থেকে লাহৌর গিয়েছিলেন তাঁর বোন এমিলি ইডেন। আড়াই বছর ধরে এলাহি সফর, সঙ্গে পনেরো হাজার লোকলস্কর, আর হাতি ঘোড়া উট বলদের তো কথাই নেই।

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

ভারত সফরের চিত্রমালা

একশো আশি বছর আগের এক ভারত সফর। বড়লাট লর্ড অকল্যান্ডের সঙ্গে কলকাতা থেকে লাহৌর গিয়েছিলেন তাঁর বোন এমিলি ইডেন। আড়াই বছর ধরে এলাহি সফর, সঙ্গে পনেরো হাজার লোকলস্কর, আর হাতি ঘোড়া উট বলদের তো কথাই নেই। অকল্যান্ডের উদ্দেশ্য ছিল মহারাজা রণজিৎ সিংহের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণ— যাতে রাশিয়া আর না এগোতে পারে। ইংরেজদের সেই আফগানিস্তান অভিযানের ফল শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়িয়েছিল তার চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন উইলিয়াম ডালরিম্পল। কিন্তু এই লাহৌর সফর থেকেই উঠে এসেছিল এমিলি ইডেনের আঁকা শ’দুই ছবি আর তাঁর চিঠির সংকলন আপ দ্য কান্ট্রি (১৮৬৬)। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে ১৯১১ সালে সংগৃহীত সেই সফরের ১৯৩টি ছবির সংগ্রহ ছিল লোকচক্ষুর অন্তরালেই, এ বার তা থেকেই সেখানে প্রদর্শিত হচ্ছে ৪৫টি। অভিজাত থেকে সাধারণ মানুষ, নানা পেশাজীবী, পাহাড়ি মানুষ, সন্ন্যাসী-ফকির, নানা স্থাপত্যের ছবি এঁকেছেন ইডেন, পেশাদার শিল্পী না হলেও স্বাভাবিক দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর সময়কে। তাঁর চিঠিতে যেমন, ছবিতেও শিখরা গুরুত্ব পেয়েছে। সঙ্গে রণজিৎ সিংহ আর তাঁর মণিরত্নসজ্জিত ঘোড়ার ছবি, প্রদর্শনী থেকে। চলবে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত।

শিল্পকর্ম

• দুশো ষোলো পাতার পাণ্ডুলিপি। স্বয়ং রাজশেখর বসুর অসামান্য হস্তাক্ষরে, ‘শ্রীমদ্‌ভগবদ্‌গীতা’। মূল, অন্বয় ও অনুবাদ, ভূমিকা সহ। নিঁখুত, একেবারে ছাপার জন্য সম্পূর্ণ। কিন্তু শুরুতেই চেতাবনী: ‘এই বই ছাপা হবে না’। সম্ভবত ১৯২৭-এ মুসাবিদা শুরু, ১৯৪২ সালে এটির কাজ শেষ করেন রাজশেখর। ভূমিকাটি তাঁর জীবৎকালেই ‘বিশ্বভারতী পত্রিকা’য় ছাপা হয়, আর পাণ্ডুলিপিটি গ্রন্থাকারে প্রকাশ পায় তাঁর প্রয়াণের পর, ১৩৬৮ বঙ্গাব্দে। এই অনন্য শিল্পকর্মটি সংরক্ষিত ছিল রাজশেখরের দৌহিত্রীপুত্র দীপংকর বসুর কাছে। রচনার পঁচাত্তর বছর পর পরিমল রায় ও কাজি অনির্বাণের উদ্যোগে, বিশিষ্ট ভাস্কর কে এস রাধাকৃষ্ণণের আর্থিক আনুকূল্যে প্রকাশ পেল এটির ‘প্রতিবিম্ব সংস্করণ’। ১৬ মার্চ, রাজশেখরের জন্মদিনে, রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার, গোলপার্কে স্বামী সুপূর্ণানন্দের হাতে। মূল পাণ্ডুলিপিটি সংরক্ষিত থাকবে সেখানে। মুদ্রিত বইটির কোনও দাম ধার্য করা হয়নি। সঙ্গে পুথির সূচনা পৃষ্ঠা— গীতার প্রথম অধ্যায়।

পঞ্চম দোল

• বৃন্দাবনে অনেক গোপিনী শারীরিক অসুস্থতা হেতু শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে দোলখেলায় মাততে পারেননি। ‘ভক্তবাঞ্ছাকল্পতরু’ কৃষ্ণ দোলের পাঁচ, সাত এমনকী এগারো-বারো দিন পর দোল খেলে তাঁদের ইচ্ছা পূর্ণ করেন। সেই থেকেই পঞ্চম, সপ্তম বা দ্বাদশ দোলের উৎপত্তি। চৈতন্যদেবের সময়ে মনে করা হত, তাঁর পার্ষদরা বৃন্দাবনের এক-এক জন গোপিনীর অবতার। গৌরাঙ্গের অন্তরঙ্গ পার্ষদ, শান্তিপুরের নভলা-বিষ্ণুপুর গ্রামের বিষ্ণুদাস গোস্বামীই শ্রীকৃষ্ণের অন্যতম গোপিনী, ভক্তদের এমনই বিশ্বাস। অধুনা বাংলাদেশের মানিকগঞ্জের সানোড়া গ্রামে তাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন মন্দির আজও আছে, ৫০০ বছরের পুরনো কষ্টিপাথরের কৃষ্ণবিগ্রহটি (ছবিতে) ও অষ্টধাতুর রাধারানি অবশ্য এখন মধ্যমগ্রামের শহিদবন্ধুনগরের বাড়িতে, যেখানে বিষ্ণুদাস গোস্বামীর ষোড়শ পুরুষের বাস। ৫০০ বছর পেরনো পঞ্চম দোল ১৫-১৭ মার্চ মহাসমারোহে উদ্‌যাপিত হল এখানে।

বইমেলা

• রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর আশি বছর জীবনের অনেকটাই বিদেশ-বিভুঁইয়ে কাটিয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচ বার গিয়েছিলেন জাপানে। প্রথম জাপান যাত্রা ১৯১৬-র ২৯ মে। সেখানকার কোবে বন্দরে নেমে তিনি চলে আসেন টোকিয়ো। তার পর ইয়োকোহামায় সাংকেই হারার বাড়িতে। আড়াই মাস সেখানে ছিলেন। এ বার কবির প্রথম জাপান যাত্রার শতবর্ষ উপলক্ষে এশিয়াটিক সোসাইটিতে বিশ্বভারতীর সহযোগিতায় আয়োজিত হয়েছে একটি প্রদর্শনী, চলবে ২২ মার্চ পর্যন্ত। পাশাপাশি, সোসাইটির প্রকাশনা বিভাগ একটি বইমেলারও আয়োজন করেছে। বিপুল ছাড়ে বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত, আরবি, ফারসি প্রায় সব ভাষাতেই সোসাইটি প্রকাশিত বই পাওয়া যাবে এই বইমেলায়। চলবে ২২ মার্চ (১২-৬টা) পর্যন্ত।

নতুন ছবি

• স্থানীয় সংবাদ-এর পর মৈনাক বিশ্বাসের আবার চলচ্চিত্রলেখ। অ্যাক্রস দ্য বার্নিং ট্র্যাক/ জ্বলন্ত শব্দের পথ— যার বিষয়ভিত্তি ঋত্বিক ঘটকের আত্মজৈবনিক ছবি ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’। সত্তর দশকে মুক্তিপ্রাপ্ত সে ছবি জুড়েই ছিল অগ্নিগর্ভ সত্তর দশক, এক দিকে নকশাল আন্দোলন আর অন্য দিকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। সে ছবির সূত্রেই মৈনাকের এই রচনায় পুনরাবিষ্কৃত হয়েছেন ‘নীলকণ্ঠ’ ঋত্বিক, বিজন ভট্টাচার্য, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়— চল্লিশের দশকের বাঁধনছেঁড়া বিপ্লবী সংস্কৃতির সঙ্গে যাঁদের যোগ ছিল অচ্ছেদ্য। গত নভেম্বর থেকে এই মার্চ অবধি সাংহাই বিয়েনালে-তে আর্ট ইনস্টলেশন-এর আঙ্গিকে দেখানো হল মৈনাকের ফিল্মটি। ‘আমাকে সাংহাই বিয়েনালে-র কিউরেটাররাই বলেছিলেন এ-ছবি করতে। একসঙ্গে দুটো স্ক্রিনে প্রোজেকশন, সঙ্গে চারটে সাউন্ড চ্যানেল। ফিল্ম নিয়ে এ রকম নিরীক্ষার কাজ বিয়ানালে, মিউজিয়াম বা আর্ট গ্যালারিতেই করতে পারেন স্বাধীন চলচ্চিত্রকাররা।’ জানালেন পরিচালক। ১৫ মার্চ ম্যাক্সমুলার ভবনে ছবিটি দেখানো হল গ্যেটে ইনস্টিটিউটের আর্ট হাউস-এর উদ্যোগে।

পঁচিশ পূর্ণ

• ১৯৯২ সালে সরকারি আর্ট কলেজের কয়েক জন বন্ধু মিলে গড়ে তুলেছিল শিল্পীগোষ্ঠী— ‘দ্য ফ্রেম’। তাদের প্রথম প্রদর্শনী হয় ১৯৯৩ সালে অ্যাকাডেমিতে। উদ্বোধন করেছিলেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়, শ্যামল দত্ত রায় ও অরুণ মুখোপাধ্যায়। এর পর দেশের বিভিন্ন শহরে একাধিক প্রদর্শনী। গ্রুপটির পঁচিশ বছরে পা দেওয়ার সূচনা উপলক্ষে ২০১৬-তেও তারা একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল। এ বার অ্যাকাডেমিতে ‘পঁচিশের বাৎসরিক প্রদর্শনী’ শুরু হবে ২৯ মার্চ, চলবে ৪ এপ্রিল (রোজ ৩-৮টা) পর্যন্ত। উদ্বোধন করবেন গণেশ হালুই, সোহিনী ধর, প্রশান্ত দাঁ প্রমুখ।

মনফকিরা

• লোকগানের দল ‘মনফকিরা’ বারো বছরে পা দিল। দুই বাংলার পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যের লোকগান সংগ্রহ করা এবং সেই গানের সম্ভারকে নতুন প্রজন্মের কাছে চেনানোর নেশায় মেতে থাকেন ভাস্কর ও মিঠু মনফকিরা। ‘গয়নার বাক্স’ বা ‘মেঘে ঢাকা তারা’-র জন্য লোকগান লিখেছেন বাংলার শিক্ষক ভাস্কর। মিঠু মনফকিরা বাংলাদেশের ‘সহজিয়া’ লোকদলের সঙ্গে কাজ করেন নিয়মিত। দেবজ্যোতি মিশ্রের পরিচালনায় সম্প্রতি প্রকাশিত হল মনফকিরার নতুন অ্যালবাম ‘ফোক স্টুডিয়ো’। লালন সাঁই থেকে হাসন রাজা, রাধারমণের কীর্তনাঙ্গ থেকে ঝাড়খণ্ডী ঝুমুর— ঠাঁই পেয়েছে একগুচ্ছ লোকগান। এই অ্যালবামে বেজেছে সাঁওতালি বাঁশির সঙ্গে বিদেশি শিল্পীর স্যাক্সোফোনও।

আয়ুধ দিবস

• ১৮ মার্চ ১৮০২। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাদের অস্ত্রের প্রয়োজন মেটাতে ১৮০১ সালে তৈরি গান ক্যারেজ এজেন্সির উৎপাদন শুরু হল। আরও একশো বছর পেরিয়ে ১৯০৩-এ আমদানি করা ব্রিচ লোডিং গান ও ১৯০৫-এ কুইক ফিটিং গান মেরামতি শুরুর সঙ্গে সঙ্গে নাম পাল্টে হল গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরি। ২১৫ বছর ধরে এই কারখানা সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়েছে। ১৯৬২, ’৬৫, ’৭১ এবং কার্গিল যুদ্ধে কলকাতার কাশীপুরের এই কারখানার ভূমিকা স্মরণীয়। আজ সারা দেশের ৪২টি অস্ত্র নির্মাণসংস্থা ১৮ মার্চ দিনটিতেই ‘আয়ুধ দিবস’ পালন করে। কাশীপুরেও এ বার যথারীতি বর্তমান কর্ণধার আয়ুধভূষণ রাজীব চক্রবর্তীর উদ্যোগে সেভেন ট্যাঙ্কস এস্টেট থেকে শোভাযাত্রার মাধ্যমে উদ্‌যাপনের সূচনা হয়। ছিল প্রদর্শনী ও নানা সেবামূলক উদ্যোগ।

যুগলবন্দি

• সত্যজিতের তিনকন্যা-র ‘সমাপ্তি’তে প্রথম মুখোমুখি, রবীন্দ্রনাথের গল্পের চরিত্রাভিনয়ে। ১৯৬১, রবীন্দ্রজন্মশতবর্ষে শুরু সৌমিত্র-অপর্ণার যুগলবন্দি। নতুন শতকের সন্ধিক্ষণে ২০০০-এ অপর্ণা সেনের ছবি ‘পারমিতার একদিন’-এর এত বছর পর ফের তাঁরা মুখোমুখি সুমন ঘোষের নতুন ছবিতে। অমর্ত্য সেনকে নিয়ে নির্মীয়মান ছবির কাজে সদ্য কলকাতা ঘুরে গেলেন সুমন, জানালেন নতুন ছবির কথা। জেমস জয়েস-এর গল্প ‘দ্য ডেড’ অবলম্বনে তৈরি চিত্রনাট্য, ‘গল্পটা প্রথম পড়েছিলাম ১৯৯৭-’৯৮-তে, পিএইচ ডি করছি তখন। গল্পটা এক দিকে আমাদের অতীতের, ইতিহাসের মানুষজনের সেলিব্রেশন, আবার অন্য দিকে অসামান্য প্রেমের গল্প। ওঁরা দু’জনেই আছেন গুরুত্বপূর্ণ দু’টি চরিত্রে। জুলাই মাসে শ্যুটিং শুরু করব।’ ফ্লোরিডায় অর্থনীতি পড়ান সুমন, মৃত্যু তাঁর ছবিতে ঘুরে-ঘুরে আসে, প্রথম ছবি ‘পদক্ষেপ’ থেকে সাম্প্রতিক ‘পিস হ্যাভেন’ পর্যন্ত, জীবনের অবিচ্ছেদ্য ধুয়োর মতো।

শান্তির পথে

• জেন দো— বৌদ্ধদের কাছে পরিচিত এই শব্দের অর্থ ধ্যানে বসা। যে ধ্যান মানুষের অন্তরকে প্রকাশ করে বিশ্ব প্রকৃতির সামনে। চিনে এই জেন-এর শুরু হলেও ক্রমে তা ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। এই ধ্যানের পথেই গত ১৫ বছর ধরে শান্তির সন্ধান করে চলেছেন আলোকচিত্রী প্রবীরচন্দ্র পুরকায়স্থ। ওঁর ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই শান্তির ভুবন— মূর্তি, প্রকৃতি বা মানুষের সহাবস্থানে। ওঁর লাদাখ বইটি ইতিমধ্যেই সারা জাগিয়েছে রসিকমহলে। শিল্পীর আলোকচিত্র নিয়ে সম্প্রতি বিড়লা আকাদেমিতে শুরু হয়েছে একটি প্রদর্শনী ‘জেন দো: ইন দ্য বুদ্ধ’জ গ্রেস’ শীর্ষকে। ২৬ মার্চ পর্যন্ত দেখা যাবে, ৩-৮ টা। সঙ্গের ছবি প্রদর্শনী থেকে।

প্রয়াণ

• জীবনানন্দের সঙ্গে স্বচ্ছন্দ সহাবস্থান মার্কস, গ্রামশি বা লুকাচের, আবার তারাশঙ্কর বা বিভূতিভূষণের জগতের। আসলে বাংলার শিক্ষক সুজিত ঘোষ কী করে বাংলা ভাষা-সাহিত্যকে অন্য ভাবে দেখা যায়, তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যায় সমাজ অর্থনীতি রাজনীতিকে, তারই সন্ধানে নৃতত্ত্ব পুরাতত্ত্ব ইতিহাস ভূগোল সব কিছুই পরিক্রমা করেছেন। সত্তরের দশকে এ আই সি সি সি আর থেকে সি পি আই এম এল গঠনের সময় আদর্শগত ভাবে দলে যোগ দেননি, কিন্তু গ্রামে যাওয়ার ডাক শুনে ‘চিন্তা’ গোষ্ঠীর সুজিত চলে গিয়েছেন সস্ত্রীক, তত্ত্ব আর প্রয়োগের সম্মিলন যে তাঁরও কাম্য। প্রবাদপ্রতিম ছিল তাঁর মার্কসবাদী সাহিত্য ও আলোচনার পুস্তকসম্ভার। বিষ্ণু দে, মণিভূষণ কি শঙ্খ ঘোষকে নিয়ে বই লেখার পাশাপাশি সম্পাদনা করেছেন সাবিত্রী রায়ের উপন্যাস স্বরলিপি বা গোপাল হালদারের প্রবন্ধ। স্ত্রী আগেই প্রয়াত, এ বার সুজিত ঘোষও চলে গেলেন। ২৫ মার্চ বিকেল ৫টায় কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসে বই-চিত্র সভাঘরে তাঁর স্মরণসভা।

প্রতিশ্রুতি

হাতটা চেপে ধরেন বৃদ্ধা। চোখের কোণে জল। ‘আপনিই পারেন আমার নাতিনাতনিদের ফিরিয়ে দিতে...।’ প্রতিশ্রুতি রেখেছিলেন মার্কিন গবেষক (জিন বিশেষজ্ঞ) মেরি ক্লেয়ার কিং। সালটা ১৯৮৩। সবে শেষ হয়েছে আর্জেন্টিনার কুখ্যাত ‘ডার্টি ওয়ার’। যুদ্ধে নিজের নাতিনাতনিদের খুইয়ে ছিলেন বৃদ্ধা। তিনি শুধু জানতেন, তারা বেঁচে আছে। সে সময় বহু মহিলাই সন্তান-সহ যুদ্ধবন্দি হন। অনেকে আবার বন্দি হওয়ার সময় অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। পরে ওই শিশুরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় মায়েদের থেকে। যুদ্ধবন্দি শিশুদের তুলে দেওয়া হয়েছিল সেনাদের পরিবারের হাতে। মেরি ‘মাইটোকনড্রিয়াল ডিএনএ’–কে (শুধু মায়ের শরীর থেকে আসে সন্তানের শরীরে) কাজে লাগিয়ে এমন ৫৪টি শিশুকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তাদের পরিবারের কাছে। তাঁর কাজ সাড়া ফেলেছে গোটা বিশ্বে, স্তন ক্যানসারে যুক্ত দু’টি জিন, BRCA1 ও BRCA2 আবিষ্কার। তাঁর দেখানো পথেই ‘ম্যাসটেকটমি’ করান অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। তাঁকে নিয়ে হলিউডে তৈরি হয়েছে ছবি, ‘ডিকোডিং অ্যানি পার্কার’। সম্প্রতি ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিকস’-এর বার্ষিক দিবস উপলক্ষে কলকাতা ঘুরে গেলেন মেরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Karcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE