ক্রমেই এগিয়ে আসছিল ভাঙন। বুধবারেই তড়িঘড়ি ঘর ছেড়েছিলেন বাড়ির সদস্যেরা। কিন্তু ভিটের মায়া কি আর এত সহজে কাটে! মাতাল নদী আর উথাল জলস্রোতের দিকে তাকিয়ে নির্ঘুম রাত কেটেছে। যদি জল কমে! প্রকৃতি মারলে আর রাখে কার সাধ্যি! বৃহস্পতিবার সকালে ভাটার টানে নিমেষে গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে গেল আস্ত দু’টো বসতবাড়ি। কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না বাস্তুহারা মানুষগুলোর। শুধু বাড়ি নয়, গঙ্গায় বিলীন হয়ে গিয়েছে বেশ কয়েক বিঘা চাষের জমিও। আতঙ্কে এলাকা ছাড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শমসেরগঞ্জের প্রতাপগঞ্জ এলাকায় ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনে গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে দুটি বাড়ি। তলিয়ে গিয়েছে বেশ কয়েক বিঘা জমিও। আশঙ্কায় বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র পালাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গঙ্গা যাঁদের বাড়ির কাছে এসে গিয়েছে তাঁরা বাড়ির আসবাবপত্র অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছেন।
ভাঙনের কারণে শমসেরগঞ্জের মহেশটোলাকে আগেই বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করেছিল রাজ্য সেচ দফতর। একাধিক বার পরিদর্শনে এসেছিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। মালদহের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে ভাঙন প্রতিরোধে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বারে বর্ষার শুরুতে বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছিল সেচ দফতর। তবে কয়েক সপ্তাহ আগে গঙ্গায় জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় সেই কাজ থমকে যায়। ফের নতুন করে ভাঙনের কবলে শমশেরগঞ্জের মহেশটোলা, প্রতাপগঞ্জ-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। সব হারানোর ভয়ে আতঙ্কের রাত কাটছে বাসিন্দাদের। তাঁদের একটাই দাবি, কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারই যেন উদ্যোগী হয় এই ধ্বংসলীলা সামাল দেওয়ার কাজে। প্রতি বছর বর্ষার শুরুতে অস্থায়ী ব্যবস্থা নয়, ভাঙন প্রতিরোধে করা হোক চিরস্থায়ী কোনও বন্দোবস্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy