Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

পুকুরে মিলল কলেজ ছাত্রের বস্তাবন্দি দেহ

ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে আমনের এক বন্ধুকে। আরও কয়েক জন এতে যুক্ত বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে খুনের কারণ এখনও পরিষ্কার নয়।

আমন যাদব

আমন যাদব

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১১
Share: Save:

বন্ধুদের ফোনে সাড়া দিয়ে শুক্রবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। রাত পেরিয়ে সকাল হলেও বাড়ি ফেরেননি কলেজছাত্র আমন যাদব (১৯)। দু’দিন পরে, রবিবার সকালে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে পুকুরে বস্তাবন্দি দেহ ভেসে ওঠে ওই পড়ুয়ার। বস্তা খুলতে দেখা যায়, আমনের হাত-পা বাঁধা দড়ি দিয়ে। তাঁর মোটরবাইকের খোঁজ মিলেছে দু’কিলোমিটার দূরে গঙ্গার ধারে। সিসি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে, এক জন বাইকটি ওখানে রেখে এসেছেন। তবে তিনি আমন নন বলেই নিশ্চিত পুলিশ।

ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে আমনের এক বন্ধুকে। আরও কয়েক জন এতে যুক্ত বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে খুনের কারণ এখনও পরিষ্কার নয়। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (‌জোন-১) অজয় ঠাকুর বলেন, ‘‘কয়েকটি ‘মিসিং লিঙ্ক’-এর খোঁজে রয়েছি আমরা। সেটা পেলেই পুরো ঘটনা পরিষ্কার হবে।’’

ব্যারাকপুর মহকুমা আদালত সংলগ্ন আমির খান মাজার এলাকায় দু’কামরার বাড়ি আমনের। মা কৃষ্ণা এবং দিদি পায়েল যাদবের সঙ্গে থাকতেন তিনি। মাসখানেক আগে ব্যারাকপুর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি হন। পায়েল জানিয়েছেন, নিয়মিত কলেজ যেতেন না তাঁর ভাই। কিছু দিন ধরে কাজের চেষ্টা করছিলেন। সম্প্রতি আমনকে বাইক কিনে দেওয়া হয়। পায়েলের অভিযোগ, ‘‘ওই বাইকই কাল হল। যাদের কাছের বলে ভাবত ভাই, সেই বন্ধুরাই ওকে শেষ করে দিল।’’

পায়েল জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ কয়েক জন বন্ধু ফোন করে আমনকে ডাকেন। বাড়িতে তিন বন্ধুর নামও জানান তিনি। রাত আটটা নাগাদ বেরিয়ে যান আমন। কিন্তু ১১টা বেজে গেলেও না ফেরায় মা ফোন করেন ছেলেকে। আমন জানান, তাড়াতাড়ি ফিরে আসবেন। পরিবার সূত্রের খবর, স্থানীয় এক তরুণীর সঙ্গে ওই ছাত্রের সম্পর্ক ছিল। রাত ১১টা ৪০-এ তিনিও আমনকে ফোন করেন। প্রেমিকাকে আমন জানান, কিছু ক্ষণের মধ্যেই বাড়ি ফিরবেন। শনিবার ভোরে উঠে পায়েলরা দেখেন, আমন নেই। তাঁর মোবাইলও বন্ধ ছিল। সব জায়গায় খোঁজ করেও ভাইয়ের সন্ধান না মেলায় ব্যারাকপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন পায়েলরা।

ওই তরুণী বলেন, ‘‘পুলিশকে ভাইয়ের বন্ধুদের নাম বলেছিলাম আমি। তাঁদের ডেকেও পুলিশ পরে ছেড়ে দেয়।’’ শেষে রবিবার সকালে মণিরামপুরের একটি পুকুরে চটের বস্তা ভাসতে দেখে পুলিশে জানান স্থানীয়েরা।

পুলিশ সূত্রের খবর, আমনের পুরো দেহ দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল। গলায় পেঁচানো ছিল গামছা। ভারী কিছু দিয়ে মুখ থেঁতলানো ছিল। জামা থাকলেও পরনের জিন্‌স উধাও। মণিরামপুরের মতো জনবহুল এলাকায় একটি পুকুরে এ ভাবে খুন করে দেহ ফেলার ঘটনায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা। পুলিশ কেন শনিবার আমনের বন্ধুদের ডেকেও ছেড়ে দিল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

আমনের প্রেমিকা বলেন, ‘‘ওর যে বন্ধুরা সে দিন ডেকে নিয়ে গিয়েছিল, কিছু দিন ধরে তাঁদের সঙ্গে আমনের কথা হত না। আচমকা গত দু’-এক দিন ধরে তাঁদের সঙ্গে গলাগলি ভাব হয়।’’ এ দিন আমনের মা কৃষ্ণা শুধু বলেছেন, ‘‘মেরা বেটা মুঝসে ছিনা গ্যায়া। অব হমে ইনসাফ চাহিয়ে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Death Student Pond
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE