Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Death

কোভিডের শংসাপত্র চেয়ে দাহ আটকে ‘হেনস্থা’ শ্মশানে

পুরসভার প্রশাসক শক্তি রায়চৌধুরীর হস্তক্ষেপে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পরে দুপুর ১টা নাগাদ ওই দেহ সৎকারের অনুমতি দেন শ্মশান কর্তৃপক্ষ।

শ্মশানের বাইরেই প্লাস্টিকে মোড়ানো দেহ রেখে প্রতীক্ষা। বুধবার, কীর্তনখোলায়। নিজস্ব চিত্র

শ্মশানের বাইরেই প্লাস্টিকে মোড়ানো দেহ রেখে প্রতীক্ষা। বুধবার, কীর্তনখোলায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২০ ০১:০২
Share: Save:

মৃতের যে কোভিড ছিল না, পৃথক ভাবে সেই শংসাপত্র দিতে হবে। না-হলে ঢোকাই যাবে না শ্মশানে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত এক ব্যক্তির শেষকৃত্য করতে গিয়ে শ্মশান কর্তৃপক্ষের এমনই অদ্ভুত দাবির মুখে পড়েছিল তাঁর পরিবার। টানা পাঁচ ঘণ্টার টানাপড়েনের পরে অবশেষে পুর কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে সম্পন্ন হয় দাহকাজ।

গত সোমবার বারুইপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের ধোসা হোগলভহরি গ্রামের বাসিন্দা উত্তম নস্কর (৩৭) শ্বাসকষ্ট নিয়ে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়। মঙ্গলবার গভীর রাতে উত্তমবাবু মারা যান। হাসপাতালের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে বুধবার সকালে স্থানীয় কীর্তনখোলা শ্মশানে দেহ সৎকার করতে যান মৃতের পরিজনেরা।

তাঁদের অভিযোগ, শ্মশান কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, মৃতের যে কোভিড ছিল না, আলাদা ভাবে সেই শংসাপত্র না-পেলে তাঁরা দেহ সৎকার করবেন না। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও মৃতদেহ শ্মশানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে দাবি পরিজনদের। তখন দেহটি শ্মশানের বাইরেই প্লাস্টিকে মুড়ে রাখা হয়।

এর পরে বারুইপুর পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করেন মৃতের পরিজনেরা। পুরসভার প্রশাসক শক্তি রায়চৌধুরীর হস্তক্ষেপে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পরে দুপুর ১টা নাগাদ ওই দেহ সৎকারের অনুমতি দেন শ্মশান কর্তৃপক্ষ।

পরিজনদের আরও অভিযোগ, মৃতদেহ সৎকারের অনুমতি দিলেও সেই কাজে কোনও রকম সহযোগিতা করেননি শ্মশান কর্তৃপক্ষ। শুধুমাত্র একটি কাঠের চালি তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সৎকারের আগে ধর্মীয় আচারও পালন করতে পারেননি তাঁরা। কারণ, শ্মশানে উপস্থিত পুরোহিত আতঙ্কে কাছেই আসেননি। শ্মশান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অমানবিকতার অভিযোগ তুলেছেন উত্তমবাবুর আত্মীয়েরা।

শ্মশান কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোভিড সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। অনেক ক্ষেত্রেই মৃতদেহ সৎকারের পরে কোভিড পজ়িটিভ রিপোর্ট এসে পৌঁছচ্ছে। সেই কারণেই ওই শংসাপত্র চাওয়া হয়েছিল। তাঁদের বক্তব্য, শ্মশানকর্মীদের মধ্যে যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতেই অতিরিক্ত সতর্ক থাকার চেষ্টা করছেন তাঁরা। তাই এ ক্ষেত্রে অমানবিকতার প্রশ্ন তোলা ঠিক নয়।

বারুইপুর পুরসভার প্রশাসক শক্তি রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতি খুবই জটিল জায়গায় পৌঁছেছে। সংক্রমণ এড়াতে সাবধানতার পাশাপাশি মানবিক হওয়াও প্রয়োজন। আমি অন্তত এমনটাই মনে করি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Cremation Coronavirus Baruipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE