Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
Death

এত বাজি ফাটায় কেন লোকে, বলছেন বিস্ফোরণে সন্তানহারা মা

মাসখানেক আগে রামনগরের মাথুর গ্রামে রক্ষাকালীপুজোয় বাজি ফাটাতে গিয়ে মারা যান ঝুনুর ছেলে, বছর বাইশের শুভজিৎ। সম্প্রতি এগরা, বজবজে বিস্ফোরণে অনেকের মৃত্যুর কথা শুনেছেন ঝুনু।

An image of the boy

শুভজিৎ পুরকাইত। ফাইল চিত্র।

দিলীপ নস্কর
রামনগর শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৩ ০৭:৩৪
Share: Save:

বাজি ফাটাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল একমাত্র ছেলের। গত কয়েক দিনে বাজি কারখানায় পর পর মৃত্যুর ঘটনায় ছেলে হারানোর সেই স্মৃতিই বার বার মনে পড়ে যাচ্ছে ডায়মন্ড হারবারের রামনগরের মাথুর গ্রামের ঝুনু পুরকাইতের। তিনি চান, প্রশাসন কড়া হাতে বন্ধ করুক শব্দবাজি।

মাসখানেক আগে রামনগরের মাথুর গ্রামে রক্ষাকালীপুজোয় বাজি ফাটাতে গিয়ে মারা যান ঝুনুর ছেলে, বছর বাইশের শুভজিৎ। সম্প্রতি এগরা, বজবজে বিস্ফোরণে অনেকের মৃত্যুর কথা শুনেছেন ঝুনু। তিনি বলেন, “চারদিকে বাজি বিস্ফোরণের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আমার মতো কত মায়ের কোল শূন্য হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এত বাজি ফাটায় কেন লোকে! সকলের উচিত শব্দবাজি বন্ধ করে দেওয়া। আমার যা ক্ষতি হওয়ার তো হয়েই গিয়েছে। আমি চাইব, পুলিশ-প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিক। সাধারণ নাগরিকও সচেতন হোক। শব্দবাজি কিন্তু আনন্দকে বিষাদে পরিণত করতে পারে।”

শুভজিতের মৃত্যুর পরে শব্দবাজি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাথুর গ্রামের ওই পুজো কমিটি। কমিটির সম্পাদক চঞ্চল দাস বলেন, “বহু বছরের রীতি মেনে পুজোর দিনে শব্দবাজি ফাটানো হয়। কিন্তু গ্রামের এক তাজা যুবক মারা যাওয়ার পরে শব্দবাজি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার পরেই বাজি পোড়ানোর আয়োজন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বাজির পরিবর্তে শঙ্খ ও কাঁসর-ঘণ্টা বাজিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়। আগামী দিনেও শব্দবাজির পরিবর্তে এক দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যায় কি না, ভেবে দেখা হবে।” গ্রামের মানুষের বড় অংশও ওই ঘটনার পর থেকে শব্দবাজি থেকে মুখ ফিরিয়েছেন। পুজোয় শব্দবাজি ফাটুক, চাইছেন না তাঁরাও। দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় মাথুর গ্রামের মানুষ সচেতন হলেও, অন্যান্য বহু এলাকাতেই এই সচেতনতা নেই। পুজো, খেলধূলা, বিয়েবাড়িকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর শব্দবাজি ফাটে। শব্দবাজি নিয়ে সতর্কতা নেই রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যেও। বিভিন্ন সময়ে নির্বাচনের জয় উদযাপনে শব্দবাজি ফাটিয়ে আনন্দে মাততে দেখা গিয়েছে শাসক, বিরোধী সব রাজনৈতিক দলকেই। এমনকী, গ্রামীণ এলাকায় চাষের জমিতে পাখি-বাদুড় তাড়ানোর কাজেও দেদার শব্দবাজির ব্যবহার হচ্ছে। পর পর বিস্ফোরণের পর বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচুর শব্দবাজি উদ্ধার করছে পুলিশ। তবে প্রশাসনের একাংশ মনে করছে, মানুষের চাহিদা থাকাতেই রমরমিয়ে তৈরি হচ্ছে শব্দবাজি। এক পুলিশ কর্তার কথায়, “মানুষকে আরও সতর্ক হতে হবে। যে কোনও আমোদে শব্দবাজি ফাটানোর প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। তা হলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।”

অন্য বিষয়গুলি:

Death Fire Crackers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE