সম্প্রতি যশোর রোডে উল্টে পড়েছে মালবোঝাই ট্রাক। নিজস্ব চিত্র।
কখনও বেপরোয়া ভাবে ছুটে চলা ট্রাকের ধাক্কায় যাত্রী-বোঝাই ভ্যান থেকে ছিটকে পড়ে মারা যাচ্ছে মানুষ, কখনও যাত্রিবাহী বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হচ্ছে মোটরবাইক চালকের। কখনও আবার অটোর সঙ্গে ম্যাটাডোরের ধাক্কায় জখম হচ্ছেন পথচারী। সাম্প্রতিক সময়ে দুর্ঘটনা যেন লেগেই আছে যশোর রোড বা ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কে। বিশেষ করে পেট্রাপোল বন্দর থেকে দত্তপুকুর পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথে চলাফেরা করতে রীতিমতো আতঙ্কিত মানুষজন।
দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে বেরিয়ে বনগাঁ থেকে দত্তপুকুর পর্যন্ত রাস্তায় দেখা গেল নানা অব্যবস্থা। এমনিতেই ওই সড়কে ফুটপাত বলে কিছু নেই। সব বেদখল হয়ে গিয়েছে। সড়কের দু’পাশে থাকা প্রাচীন গাছগুলি সড়ককে আরও সংকীর্ণ করেছে। আর সেই রাস্তা ধরেই বেপরোয়া গতিতে চলেছে যানবাহন। সাদা চোখে দেখেই বোঝা গেল, বহু ম্যাটাডোর-ট্রাক অতিরিক্ত মালপত্র নিয়ে চলেছে। একটি ম্যাটাডোরে এত বিচুলি বোঝাই করা হয়েছে, যে কোনও মুহূর্তে উল্টে পড়তে পারে। ওভারটেক তো চলছে আকছার।
চোখে পড়ল, পুলিশের পক্ষ থেকে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’-এর পোস্টার। কিন্তু সে দিকে কারও নজর পড়ছে বলে তো মনে হল না। চাঁদপাড়া বাজার এলাকায় দেখা গেল রাস্তার উপরেই সার দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অটো। যত্রতত্র ট্রাক, গাড়ি দাঁড়ি করিয়ে রাখা হয়েছে রাস্তার ধারে। হাবরা শহরে বেআইনি ডিজেল অটোর দাপট বহু চর্চিত। রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকে তারা। যেখান থেকে সেখান থেকে যাত্রী তোলে। গ্রামের মধ্যে থেকে যে রাস্তাগুলি যশোর রোডে এসে মিশেছে, সেগুলি থেকে কোনও রকম নিয়ম-কানুন না মেনে ভ্যান, সাইকেল মোটর বাইক হঠাৎ বড় রাস্তায় উঠে পড়ছে।
চোখে পড়ল, রাস্তার দু’ধারে কোথাও কোথাও ইমারতী দ্রব্য ফেলে রাখা হয়েছে। একই মোটর বাইকে তিনজন উঠেছে, চোখে পড়ল সেই দৃশ্যও। কারও মাথায় হেলমেটের বালাই নেই। তবে ইদানীং মোটর বাইক চালকদের মধ্যে হেলমেট পরার প্রবণতা বেড়েছে বলেই জানালেন সড়কের দু’পাশে বসবাসকারী অনেকেই।।
বাজার এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বা ট্রাফিক কর্মীদের দেখা যায় ঠিকই, কিন্তু পুরো রাস্তায় নজরদারি চলে না বলেই অভিযোগ। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যশোর রোডের উপরে থাকা এলাকায় হাটের দিন যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া, যশোর রোডে ইমারতী মালপত্র ফেলে রাখা হলে তা বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে।’’ রাতে যান চালকদের সুবিধার জন্য গার্ডরেলে রিফ্লেক্টর লাগানোর কাজ চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy