নোট নিয়ে ডামাডোলের জেরে সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাজ্যের অন্যতম বড় পাইকারি মাছের আড়ত ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজারে কেনাবেচা বন্ধ হয়ে গেল।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই বাজার রাজ্যের বিভিন্ন মাছ বাজারের অন্যতম ‘সাপ্লাই লাইন’। এই বাজারে কেনাবেচা বন্ধের পরে বিভিন্ন জেলায় মানুষের পাতে মাছের টান পড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
মৎস্যজীবী সংগঠন এবং পাইকারি মাছ ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা থেকে মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে মাছ ধরে ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজারে আড়তদারদের কাছে বিক্রি করেন। আড়তদারেরা তা বেচেন পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে। এই বাজারে প্রায় ৭০টি বড় পাইকারি মাছের আড়ত রয়েছে। প্রতি দিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত কয়েক কোটি নগদ টাকার কেনাবেচা চলে।
কিন্তু এখন নগদ টাকার জোগান কমায় প্রভাব পড়েছে নগেন্দ্রবাজারে। রবিবার রাতেই পাইকারি মাছ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছিলেন, নতুন টাকার জোগান পর্যাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা মাছ কিনতে পারবেন না। তাই বাজার আপাতত বন্ধ। নগেন্দ্রবাজার মৎস্য আড়তদার সমিতির সম্পাদক জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘পাইকারি ব্যবসায়ীরা পুরনো নোট নিতে বলছেন। কিন্তু মৎস্যজীবীরা ১০০ টাকার নোট বা নতুন নোট চাইছেন। কিন্তু এত নোটের জোগান কোথায়? ফলে সঙ্কট তৈরি হয়েছে।’’
এই ঘটনায় মাথায় হাত মৎস্যজীবীদের। তাঁদের প্রশ্ন, এখনও অনেক ট্রলার সমুদ্রে রয়েছে। তাঁরা মাছ নিয়ে ফিরলে সেগুলির কী হবে?
মৎস্যজীবী সংগঠন সূত্রে খবর, সোমবার রাতের মধ্যে রায়দিঘি, কাকদ্বীপ, নামখানা, সাগর, পাথরপ্রতিমার বিভিন্ন ঘাটে প্রায় ৩০০টি মাছ-বোঝাই ট্রলার ফিরে আসার কথা। মঙ্গল-বুধবার মিলিয়ে ফিরবে আরও কয়েকশো ট্রলার। এর মধ্যে সমস্যা না মিটলে প্রায় ৬০০টি ট্রলারের মাছ নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা। কাকদ্বীপের অক্ষয়নগরের মৎস্যজীবী অজয় হালদার বলেন, ‘‘মালিকের কাছে টাকা চাইতে গেলাম। অল্প কিছু টাকা হাতে দিলেন। তা দিয়ে ক’দিন চলবে জানি না। নগেন্দ্রবাজারে মাছ বিক্রি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে শুনেছি। সংসার চালাব কী করে?’’ সোমবার বিকেলে কাকদ্বীপ মৎস্যবন্দরে গিয়ে দেখা গেল, ডাঁই করে ফেলে রাখা রয়েছে মাছ। মৎস্যজীবী সংগঠনের নেতা সতীনাথ পাত্র বলেন, ‘‘সরকার হস্তক্ষেপ না করলে মৎস্যজীবীরা খুবই সমস্যা পড়বেন।’’ কাকদ্বীপের বিধায়ক তথা মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা জানান, বিষয়টি মৎস্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy