—প্রতীকী চিত্র।
বেপরোয়া বাইকের ধাক্কায় মৃত্যু হল প্রাক্তন ফুটবলার তথা এক ক্রীড়া সংগঠকের। ঘটনাটি অশোকনগরকল্যাণগড় পুরসভা এলাকার। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম পঙ্কজ পোদ্দার (৬১)। বাড়ি ভাঙাগড়া ক্লাবের কাছে। তিনি অশোকনগর স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের দফতর সম্পাদক ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পয়লা অগস্ট রাত পৌনে ১০টা নাগাদ পঙ্কজ স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের অফিস থেকে বেরিয়ে বাড়ির কাছে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে এক জনের সঙ্গে গল্প করছিলেন। বেপরোয়া গতিতে একটি বাইক এসে তাঁদের ধাক্কা মারে। দু’জনে ছিটকে পড়ে জ্ঞান হারান। তাঁদের অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পঙ্কজের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাঁকে বারাসতের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখানেই মারা যান তিনি।
পঙ্কজের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ শহরবাসী বেপরোয়া বাইক চলাচল বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, সম্প্রতি শহরে বেশ কিছু ক্যাফে, ফাস্টফুড সেন্টার হয়েছে। অধিকাংশই রাস্তা দখল করে তৈরি হয়েছে। বাইকে চড়ে বহু তরুণ-তরুণী সেখানে আসেন। বিকেলের পর থেকেই বাইক বাহিনীর ভিড় বাড়তে থাকে। তাদের তাণ্ডব চলে রাত পর্যন্ত। মূলত গেলবাজার থেকে নিউ মার্কেট যাওয়ার রাস্তা, ১/৩ মোড় থেকে হাসপাতাল রোড, হাবড়া-নৈহাটি সড়ক থেকে বিজয়া ফার্মেসির মোড়, ৮ নম্বর থেকে নৈহাটি রোডেই বাইকের দৌরাত্ম্য বেশি থাকে। প্রবল গতিতে চলে বাইক। শহরবাসীরা জানাচ্ছেন, বাইক চালকদের মধ্যে অনেকেই নাবালক। ড্রাইভিং লাইসেন্সও নেই। অনেকে আবার নেশা করেও বাইক চালায়।
অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর অতীশ সরকার বলেন, ‘‘শহরের মধ্যে এ সব বাইকের গতি থাকে ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিলোমিটার। বাইক চালকদের মাথায় হেলমেট থাকে না। এরা মূলত অশোকনগরের বাইরে থেকে আসে।’’ তৃণমূল নেতা গুপি মজুমদারও বলেন, ‘‘কখনও কখনও বাইকের গতি ১০০ কিলোমিটারের বেশি থাকে। বাইকের স্ট্যান্ড নামানো থাকে। রাস্তায় তা ঘষা খায়। আলোর ঝলকানি বেরোয়। তাতেই ওদের ফূর্তি হয়।’’
পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘শুক্রবার থেকে এলাকায় মাইকে প্রচার করে জানানো হয়েছে, বেআইনি দোকান দ্রুত সরিয়ে বা ভেঙে ফেলতে হবে। না হলে পুরসভা ও পুলিশ দোকানঘরগুলি ভেঙে দেবে। বেপরোয়া বাইক চলাচল বন্ধ করতে বেশি করে গার্ডরেল বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, বেপরোয়া বাইকের বিরুদ্ধে নিয়মিত ধরপাকড়, জরিমানা চলছে। মাঝে মধ্যেই তল্লাশি চালানো হয়। যদিও শহরবাসীর দাবি, বাইক বাহিনীর বিরুদ্ধে শুধু আর্থিক জরিমানা করলেই হবে না, কড়া আইনি পদক্ষেপও জরুরি।
পঙ্কজের দুই মেয়ে ও স্ত্রী। আজ, শনিবার ছিল তাঁর জন্মদিন। প্রতি বছর সকলে মিলে তাঁর জন্মদিনে কেক কাটতেন। পঙ্কজের মেয়ে পৌলমী বলেন, ‘‘বাইকের দৌরাত্ম্যে রাস্তায় বেরোতে ভয় লাগে। পুলিশ-প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করুক, যাতে আর কেউ অকালে পরিজনদের না হারায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy