Advertisement
১৯ জুন ২০২৪
জীবনতলা

নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের চেষ্টা, ধৃত তিন

পরিচয় হয়েছিল দিন পনেরো আগে, বিয়েবাড়িতে। পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা। তার পরে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে, ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হল এক যুবক। তাকে সাহায্য করার অভিযোগে ধরা হল আরও দু’জনকে। শুক্রবার গভীর রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানার পাতিখালি এলাকায় এক ফাঁকা মাঠে ওই হামলার পরে, জ্ঞান হারিয়েছিল বছর ষোলোর মেয়েটি। শনিবার ভোরে জ্ঞান ফিরতে সে পেটের ক্ষতস্থানে ওড়না বেঁধে রাস্তার ধারে বসে পরিত্রাহী চিৎকার করতে থাকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ক্যানিং ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৫ ০৩:৩৩
Share: Save:

পরিচয় হয়েছিল দিন পনেরো আগে, বিয়েবাড়িতে। পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা। তার পরে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে, ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হল এক যুবক। তাকে সাহায্য করার অভিযোগে ধরা হল আরও দু’জনকে।

শুক্রবার গভীর রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানার পাতিখালি এলাকায় এক ফাঁকা মাঠে ওই হামলার পরে, জ্ঞান হারিয়েছিল বছর ষোলোর মেয়েটি। শনিবার ভোরে জ্ঞান ফিরতে সে পেটের ক্ষতস্থানে ওড়না বেঁধে রাস্তার ধারে বসে পরিত্রাহী চিৎকার করতে থাকে। তা শুনে তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রক্ত ঝরা ঠেকাতে দেন গামছার বাঁধন। কিশোরী আপাতত কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। ডাক্তারেরা তাকে পরীক্ষা করে প্রাথমিক ভাবে ধর্ষণের প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার।

স্থানীয় সূত্রের খবর, দিন পনেরো আগে জীবনতলার মহিষপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বছর উনিশের যুবক নুর আলমের এক আত্মীয়ার বিয়ে হয় বাসন্তীর ৩ নম্বর গড়ানবোস এলাকায়। বিয়েবাড়িতেই কিশোরীর সঙ্গে আলাপ নুরের। মেয়েটির পরিবারের দাবি, নুরের সঙ্গে তাঁদের মেয়ের ঘনিষ্ঠতা হয়েছে বলে জানতেন না তাঁরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে মেয়েটি কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান মেলেনি। মেয়েটির বাবা বলেন, “পুলিশে খবর দেওয়ার আগেই এক আত্মীয়ের কাছ থেকে এ দিন সকালে ঘটনার খবর পাই।”

পুলিশ সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার নুর আলম ওই মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে আনে জীবনতলায়। শুক্রবার গভীর রাতে পাতিখালি এলাকার ফাঁকা মাঠে নিয়ে গিয়ে সে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তদন্তে নেমে কিশোরীর কাছ থেকে পুলিশ জেনেছে, নুর যখন তাকে ধর্ষণ করছে, তখন দর্শক হিসেবে সেখানে হাজির ছিল নুরের খুড়তুতো দাদা বছর একুশের হাসা মিস্ত্রি। মেয়েটি ধর্ষণের কথা বাড়িতে জানানোর কথা বলায় নুর তাকে ছুরি দিয়ে কোপায় বলে অভিযোগ। মেয়েটি রক্তাক্ত অবস্থায় জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়ে। সে মারা গিয়েছে ভেবে ওই যুবকেরা পালিয়ে যায়। ন্যাশনাল মেডিক্যালের সুপার পীতবরণ চক্রবর্তী জানান, মেয়েটির পেটের ডান দিকে ঘেঁষে একটি গভীর ক্ষত এবং একই দিকের বুকের পাঁজরের কাছে আর একটি ক্ষত রয়েছে। কিশোরী যে ডাক্তারের অধীনে চিকিৎসাধীন, সেই সন্দীপ মজুমদার বলেন, “অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে। মেয়েটি মানসিক শকেও রয়েছে। যতটুকু বলতে পারছে তাতে জানা গিয়েছে, পরিচিত একটি ছেলে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। অস্ত্রোপচারের পরে মেয়েটির কাউন্সেলিং করানোর কথা ভাবা হচ্ছে।”

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পূর্ব) অরিজিৎ সিংহ বলেন, “ধর্ষণ এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগ হয়েছে নুরের বিরুদ্ধে। হাসা মিস্ত্রির বিরুদ্ধে দু’টি ক্ষেত্রেই সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছে। নুরের পরিবারের অন্যেরা পলাতক। নুর ওর পরিচিত খুল্লু মিস্ত্রির কাছ থেকে ছুরিটি নিয়ে গিয়েছিল এবং রক্তমাখা ছুরি ফেরত দিয়েছিল। ছুরিটি পাওয়া গিয়েছে। খুল্লুকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।” নাবালিকার বাবা বলেন, “মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। যারা ওর এই দশা করল, তারা যেন উচিত শাস্তি পায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jibantala rape southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE