অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগের ফর্ম তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। গত কয়েক দিন ধরে বাসন্তীর সোনাখালিতে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ফর্ম বিক্রির পাশাপাশি চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগের জন্য টাকার রফা, এমনই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
বাসন্তীর বিধায়ক আরএসপি-র সুভাষ নস্কর জানান, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগের জন্য বাসন্তী ব্লকে ওই প্রকল্পের দফতর থেকে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ অফিস থেকে ফর্ম পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। সুভাষবাবুর কথায়, ‘‘তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে ফর্ম বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ সরকার থেকে এই ফর্ম বিনামূল্যে পাওয়ার কথা। তৃণমূল নেতারা এই ফর্ম নিয়েও ব্যবসা শুরু করেছেন। আমি বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে গোসাবার তৃণমূলের বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর বলেন, ‘‘দলীয় কার্যালয় থেকে কোনও ফর্ম বিক্রি করা হচ্ছে না। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। ফটোকপির দোকানদারেরা ফর্ম ছাপিয়ে বিক্রি করে থাকতে পারে। এর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ ওই প্রকল্পের সিডিপিও সুচন্দ্রা সামন্তের সঙ্গে কোনও ভাবে যোগাযোগ করা যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি।
বাসন্তী ব্লকের সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের (আইসিডিএস) দফতর থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে ৬ অগস্ট একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল (মেমো নম্বর: ২৫৮/আইসিডিএস)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৩ জন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও ৩২ জন সহায়িকা নিয়োগ করা হবে। দু’দিন সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের দফতর থেকে বিনামূল্যে ফর্ম বিতরণ করার পরে তা কোনও অজ্ঞাতকারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরেই গত তিন-চার দিন ধরে তৃণমূলের সোনাখালির দলীয় কার্যালয় থেকে ওই প্রকল্পে কর্মী নিয়োগের জন্য সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ফর্ম পিছু ৫-৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ওই প্রকল্পে চাকরি দেওয়া হবে বলে মানুষের কাছ থেকে টাকাও চাওয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা বলেন, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগ করা হবে এই খবর পেয়ে আইসিডিএস অফিসে ফর্ম তুলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখান থেকে বলা হয়, ফর্ম শেষ হয়ে গিয়েছে। খবর নিয়ে জানতে পারি, তৃণমূলের পার্টি অফিস থেকে ফর্ম বিক্রি করা হচ্ছে। সেই মতো আমি ২৫ টাকা দিয়ে একটি ফর্ম কিনি। এরপরেই পার্টি অফিস থেকে চাকরির জন্য আমাকে টাকার কথা বলা হয়।’’ টাকা ছাড়াই এই ফর্ম পাওয়া যায়, তা আগে জানতেন না অনেকেই।
মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, ‘‘এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিডিওকে বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছি। রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেব।’’
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রকল্পে কর্মী নিয়োগের ফর্ম বিতরণ করার পাশাপাশি আইসিডিএস অফিসে এবং ব্লক অফিসের দেওয়ালে ফর্মের অনুরূপ একটি কপি লাগানো হয়েছে। যা দেখে পরীক্ষার্থীরা সাদা কাগজে হাতে লেখা ফর্মও জমা দিতে পারেন। ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফর্ম জমা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy