বনগাঁ আদালত চত্বরে উত্তম সর্দার। নিজস্ব চিত্র ।
সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দার ওরফে সুশান্তকে পুরনো একটি খুনের মামলায় বুধবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হল। পুলিশের পক্ষ থেকে উত্তমকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হলেও আদালত তা খারিজ করে দিয়েছে। উত্তমের জামিনের আবেদনও বাতিল করেছে আদালত। তাকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
উত্তম জেলা পরিষদের সদস্য। তিনি ছিলেন সন্দেশখালি পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি। শাহজাহান কাণ্ডের পরে তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত উত্তমের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ দেখাতে থাকেন সন্দেশখালির মানুষ। এই পরিস্থিতিতে দল তাঁকে বহিষ্কার করে। ১০ ফেব্রুয়ারি পুলিশ গণধর্ষণ, খুনের চেষ্টা সহ একাধিক অভিযোগে গ্রেফতার করে উত্তমকে। তিনি এখন বসিরহাট সংশোধনাগারে আছেন।
বুধবার সকালে সেখান থেকেই তাঁকে আনা হয় বনগাঁয়। উত্তমের আইনজীবী সঞ্জয় দাস জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে বনগাঁ থানার ট্যাংরা কলোনি এলাকায় দুই প্রতিবেশীর বিবাদে খুন হয়েছিলেন বিষ্ণু মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি। ছাদের জল প্রতিবেশীর বাড়িতে পড়া নিয়ে বিবাদ। বিষ্ণুকে কাঠ দিয়ে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে তিন জনের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন বিষ্ণুর স্ত্রী ঝর্না। তিনি বনগাঁ থানায় তিন জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেন। তার মধ্যে উত্তম সর্দারের নাম ছিল না। চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই খুনের ঘটনায় চক্রান্তের অভিযোগে পুলিশ এই মামলায় উত্তমের নাম যুক্ত করে। এ দিন আদালতে চত্বরে উত্তম বলেন, ‘‘আমি এই খুনের বিষয়ে কিছুই জানি না। জীবনে কখনও বনগাঁয় আসিনি।’’ সন্দেশখালির অভিযোগ নিয়েও উত্তম বলেন, ‘‘সব মিথ্যা। আমি নির্দোষ।’’
উত্তমের আর এক আইনজীবী অভিজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই খুনের মামলায় আমার মক্কেল সম্পূর্ণ নির্দোষ, সেটা প্রাথমিক ভাবে কোর্টও বুঝতে পেরেছে। সে কারণে পুলিশের পক্ষ থেকে উত্তমকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন বিচারক বাতিল করেছেন। তবে জামিনের আবেদনও খারিজ করেছেন তিনি।’’
অভিজিতের দাবি, উত্তমকে আটকে রাখার চেষ্টা করছে পুলিশ। কারণ, সন্দেশখালির বেশিরভাগ মামলা থেকে তিনি ইতিমধ্যে জামিন পেয়ে গিয়েছেন। অভিজিৎ আরও বলেন, ‘‘বনগাঁর খুনের মামলার সঙ্গে উত্তমের কোনও যোগাযোগ নেই। অভিযুক্তেরা তাঁর আত্মীয়ও নন। উত্তমের কাছে শুনেছি, বছর দশেক আগে এক বার তিনি রাজনৈতিক কারণে বনগাঁয় এসেছিলেন।’’
বনগাঁর পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার অবশ্য বলেন, ‘‘খুনের ঘটনার তদন্তে উত্তমের নাম পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy