গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতাল
করোনা পরিস্থিতিতে গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটিকে কোভিড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছিল। করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করা হয়েছিল।
এখন করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। হাসপাতালে অনেক দিন ধরে কোনও করোনা রোগী ভর্তি হচ্ছিলেন না। স্বাস্থ্য দফতর ২৩ মার্চ থেকে গোরবডাঙায় কোভিড হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়েছে। এরপরেই বাসিন্দারা দাবি তুলেছেন, হাসপাতালটিকে সাধারণ হাসপাতাল হিসেবে চালু করা হোক। রোগী ভর্তির ব্যবস্থা করা হোক।
কোভিড হাসপাতাল ঘোষণার পরে গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালের ঝোপ-জঙ্গল সাফ করা হয়েছিল। নতুন শয্যা আনা হয়েছিল। নতুন করে পানীয় জল ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দরজা-জানলা তৈরি হয়। নতুন রং করা হয়েছে। বাইরে থেকে হাসপাতালের পরিবেশ ঝাঁ চকচকে হয়ে উঠেছে।
কোভিড হাসপাতাল তৈরির সরকারি সিদ্ধান্তে শহরবাসী নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন। কারণ, তাঁরা ভেবেছিলেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের ভর্তির ব্যবস্থা হবে। কিন্তু কোভিড হাসপাতাল বন্ধ হলেও সাধারণ রোগীদের ভর্তির ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত ঘোষণা না হওয়ায় স্থানীয় মানুষ ক্ষুব্ধ।
গোবরডাঙা পৌর উন্নয়ন পরিষদের সহ সভাপতি পবিত্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটিকে কোভিড হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলার সরকারি সিদ্ধান্তে আমরা খুশি হয়েছিলাম। রাজ্য সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, এখন দ্রুত হাসপাতালটি সাধারণ রোগীদের ভর্তির ব্যবস্থা করে চালু করা হোক।’’
তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান গোপাল শেঠ শুক্রবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে চিঠি পাঠিয়েছেন। গোপাল বলেন, ‘‘প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির কাছে আবেদন করে বলা হয়েছে, গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালের বর্তমান পরিকাঠামোতেই সাধারণ হাসপাতাল হিসেবে চালু করা হোক।’’
গোবরডাঙার নব নির্বাচিত পুরপ্রধান শঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘২৩ মার্চ স্বাস্থ্য দফতর কোভিড হাসপাতালটি বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন করছি সাধারণ হাসপাতাল হিসেবে চালু করার।’’
প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, হাসপাতালটি জেলা পরিষদ পরিচালিত। জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ জ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাসপাতাল চালানোর মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই। আমরা অনেক দিন আগেই রেজ্যুলিউশন করে স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়ে দিয়েছি, স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতালের দায়িত্ব নিক। তারাই হাসপাতাল চালু করুক।’’ জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা জানিয়েছেন, গোবরডাঙায় হাসপাতাল চালু করার চিন্তা-ভাবনা চলছে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়ের কথায়, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটিকে কোভিড হাসপাতাল হিসেবে চালানো হয়েছিল। এখন করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় কোভিড হাসপাতালটি বন্ধ করা হয়েছি। এখন হাসপাতাল কী ভাবে চলবে তা জেলা পরিষদের বিষয়।’’ ২০১৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ হয়ে যায়। বহির্বিভাগে চিকিৎসক সপ্তাহে কয়েকদিন কয়েক ঘণ্টার জন্য রোগী দেখেন। হাসপাতাল থেকে কার্যত কোনও পরিষেবা মেলে না। পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালের দাবিতে দলমত নির্বিশেষে এলাকার মানুষ আন্দোলন করেছেন এক সময়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy