Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
Chhath Puja

শিল্পাঞ্চলে সম্প্রীতির ছট, ভাঙা হল বিধিও

শিল্পাঞ্চলের টিটাগড়-ব্যারাকপুরকে বলা হয় মিনি ভারতবর্ষ।

 পাশে আছি: পুণ্যার্থীদের জন্য চলছে রাস্তা ধোয়া। শুক্রবার, ব্যারাকপুরে। ছবি: মাসুম আখতার

পাশে আছি: পুণ্যার্থীদের জন্য চলছে রাস্তা ধোয়া। শুক্রবার, ব্যারাকপুরে। ছবি: মাসুম আখতার

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৪৩
Share: Save:

বড় রাস্তা থেকে যে দু’টি সরু গলি গঙ্গায় গি‌য়ে শেষ হয়েছে, তার পুরোটাই মুসলিম মহল্লা। প্রতি বছর ছটপুজোয় ওই পথেই দণ্ডি কাটেন পুণ্যার্থীরা। তাই পুজোর দু’দিন সেই পথের দেখভাল করেন আসলাম, পারভেজরা। তাঁদের সঙ্গ দেন পুষ্পল সিংহ, হরিদাস বিশ্বাস। পুজোর সকাল থেকে রাস্তা ঝাঁট দিয়ে তা ধুয়ে দেন রহমান শেখরা। ব্যারাকপুর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের জিসি রোড ও আলি হায়দর রোডের প্রতি বছরের এটাই অলিখিত রীতি। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

শিল্পাঞ্চলের টিটাগড়-ব্যারাকপুরকে বলা হয় মিনি ভারতবর্ষ। কারণ, দেশের সব প্রান্তের, সব ধর্মের মানুষের বাস এখানে। তাই সব ধর্মের সহাবস্থানেই উৎসবে অংশ নিয়ে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর নৌশাদ আলম বললেন, ‘‘এখানে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে থাকেন। এই পথ দিয়েই মা-বোনেরা ছটপুজোয় দণ্ডি কেটে গঙ্গায় যান। তাঁদের যাতে অসুবিধা না হয়, সেই জন্য প্রতি বছর এলাকার মুসলমান যুবকেরাই স্বেচ্ছায় রাস্তা পরিষ্কারের দায়িত্ব পালন করেন।’’ প্রতি বছর এ পথ দিয়েই পুজো দিতে যান ব্যারাকপুরের ধর্মবীর সিংহ। যাতায়াতের পথে তাঁর পরিচিত হয়ে গিয়েছেন নৌশাদেরা। ধর্মবীরের কথায়, ‘‘ওঁরা যে ভাবে প্রতি বার পাশে থাকেন, তা সত্যিই দৃষ্টান্তমূলক।’’

ওই এলাকার গঙ্গার ঘাটগুলিতে যেতে আরও রাস্তা থাকলেও গাড়ির দাপট এড়াতে কিন্তু সে দিকে যান না পুণ্যার্থীরা। যদিও সেই সচেতন পুণ্যার্থীদেরই চূড়ান্ত অসচেতনতা শুক্রবার নজরে পড়ল এ দিন শিল্পাঞ্চলে। যার ফলে সর্বত্র কোভিড রুখতে আদালতের নির্দেশ ভঙ্গ হল দেদার। মাস্ক না পরে দূরত্ব-বিধি ভেঙে চলল উৎসব পালন!

টিটাগড়, ব্যারাকপুর, পলতা, ইছাপুর, গারুলিয়া, নৈহাটি হয়ে কাঁচরাপাড়া পর্যন্ত সর্বত্র ঘাটের থিকথিকে ভিড় শুরু এ দিন দুপুর থেকেই। বিভিন্ন গাড়িতে পুণ্যার্থীরা আসতে থাকেন। পুজো উপলক্ষে ঘাটে আলোর ব্যবস্থা করা ছিল আগেই। এ ছাড়া প্রশাসনের তরফে ঘাটে বিশেষ ব্যবস্থা নজরে পড়েনি। বেশ কিছু অস্থায়ী ঘাট তৈরি হয়েছিল বটে। তাতেই দূরত্ব-বিধি পালনের দায় সেরেছে একাধিক পুর প্রশাসন। অথচ ওই সব ঘাটে ন্যূনতম সাবধানতা পালন নিয়ে নজর কোথায় ছিল? পুণ্যার্থীরা একে অন্যকে জড়িয়ে ধরছেন। কেউ কেউ দল বেঁধে নিজস্বী তুলছিলেন। হাত ধরাধরি করে গঙ্গায় সূর্য প্রণাম করছিলেন প্রায় সকলেই। তাঁদের অনেকেই ছিলেন মাস্ক ছাড়া।

সে সব নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কী ভূমিকা ছিল? প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মাইকে অনুনয়-বিনয়েই তা সীমাবদ্ধ ছিল। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (সাউথ) অজয় ঠাকুরের অবশ্য দাবি, ‘‘শুরু থেকেই পুলিশ ভিড় নিয়ন্ত্রণ করেছে। কোথাও কেউ আইন না মানলে পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Chhath Puja Religion Barrackpore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE