প্রতীকী ছবি।
মামাবাড়িতে নিয়ে গিয়ে বিয়ের তোড়জোড় চলছিল বছর সতেরোর এক নাবালিকার। চাইল্ড লাইনের টোল ফ্রি নম্বরে (১০০) সে কথা জানান কোনও এক পড়শি। পুলিশ গিয়ে হাজির হয় বাড়িতে। বন্ধ করা গিয়েছে বিয়ে।
মেয়ের বাড়ি হাবরার লক্ষ্মীপুলে। একাদশ শ্রেণিতে পড়ে সে। মামার বাড়ি বনগাঁয়। সেখান থেকেই গরিব পরিবারের মেয়েটির বিয়ের ঠিক হয়। বিয়ের খরচপাতিও অনেকটা দেওয়ার কথা ছিল মামাদের। এই পরিস্থিতিতে মেয়ের বাবাও রাজি হয়ে যান। বাড়িতে থেকে বিয়ে দিলে থানা-পুলিশের ‘ঝামেলা’ হতে পারে বলে মনে করেছিলেন বাড়ির লোকজন।
বুধবার বিকেলে বিয়ের কথা ছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়েছে। হাবরা চাইল্ড লাইনের সদস্য প্রকাশ দাস বলেন, ‘‘খরব পেয়েই আমরা দ্রুত হাবরা থানার আইসিকে ই-মেল করে বিয়ে বন্ধ করতে অনুরোধ করি। পুলিশ দুপুরে ওই বাড়িতে হাজির হয়ে বিয়ে বন্ধ করেছে।’’
পুলিশ জানায়, তাদের দেখে প্রথমটায় ঘাবড়ে গিয়েছিল বাড়ির লোকজন। বুঝিয়ে-সুজিয়ে কাজ না হওয়ায় শেষে আইনের পথ দেখাতে হয়। আঠারো বয়সের কম বয়সে মেয়ের বিয়ে দিলে নানা শারীরিক-মানসিক সমস্যা যেমন হয, তেমনই এই কাজ বেআইনি। এত কথায় কাজ হয়। মেয়ের বাবা পুলিশের কাছে মুচলেকা দিয়ে জানান, আঠারো বছর না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবেন না।
মেয়েটিকে উদ্ধার করে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে বারাসতে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে হাজির করানো হয়। প্রকাশবাবু বলেন, ‘‘কমিটির পক্ষ থেকে মেয়েটিকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মেয়েটিকে বলা হয়েছে, তার লেখাপড়া করতে কোনও অসুবিধা হলে সে যেন আমাদের এবং কমিটির কাছে জানায়।’’
মেয়েটির কথায়, ‘‘ছোট বোন আছে। বাবার আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। বাবা-মা বললেন, সুপাত্র পাওয়া গিয়েছে। বিয়েতে তাই রাজি হয়ে যাই।’’ সে অবশ্য এখন লেখাপড়া করে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চায় বলেই জানিয়েছে।
আর তারপর?
লাজুক মুখে মেয়েটি বলে, ‘‘ওই পাত্রকেই বিয়ে করব।’’ সেটুকু অপেক্ষা করতে আপত্তি নেই পাত্রপক্ষেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy