বাঘের কামড়ে মৃত যুবকের দেহের ময়না-তদন্ত নিয়ে বৃহস্পতিবার দিনভর টালবাহানা চলল। বৃহস্পতিবারও ময়না-তদন্ত হয়নি মৃত জগদীশ প্রধানের দেহের।
শেষ পর্যন্ত পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানার হস্তক্ষেপে সুরাহা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, আজ, শুক্রবার কাকদ্বীপ হাসপাতালের সুপার নিজেই দেহ পরীক্ষা করে দেখবেন। তিনিই রিপোর্ট দেবেন।
পাথরপ্রতিমার মৎস্যজীবী জগদীশবাবুর দেহ বৃহস্পতিবার কাকদ্বীপ মর্গে আনা হয়। সেখান থেকে মৃতের পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়, কাকদ্বীপে দেহের ময়না-তদন্ত সম্ভব নয়। দেহ পাঠানো হচ্ছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে।
জগদীশের দাদা গৌড় প্রধান বলেন, ‘‘ভাইকে বাঘের কবল থেকে বাঁচাতে পারিনি। দেহ পরীক্ষা না করেই রেফার করে দিল কলকাতায়। যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স চাইছে ৭ হাজার টাকা। সেখান থেকে দেহ ফেরত দিলে নিয়ে আসব কী ভাবে?’’
কয়েক মাস হল ঝাঁ চকচকে বাড়ি বাড়িয়ে চালু করে দেওয়া হয়েছে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। চালু হয়েছে মর্গ। কিন্তু অভিযোগ, সেখানে সামান্য কারণ হলেই দেহের ময়না-তদন্ত করতে চাইছেন না চিকিৎসকেরা। এর মাসুল গুণতে হচ্ছে মৃতের পরিবার, বা পুলিশকে। কারণ, কলকাতায় দেহ পাঠাতে গেলে কম করে ১৬-২০ হাজার টাকা লাগে যাতায়াতের সমস্ত খরচ ধরে। পরিবার সেই টাকা জোগাড় করতে না পারলে পুলিশকেই ব্যবস্থা করতে হয়। যদিও এ জন্য থানাগুলিতে আলাদা করে কোনও তহবিলের সংস্থান রাখা হয়নি।
রাজনৈতিক ভাবে সংবেদনশীল বা বিতর্ক থাকলেই সেই সব দেহ কলকাতায় ময়না-তদন্তের জন্য ‘রেফার’ করার রীতি পুরনো। কিন্তু তা বলে বাঘের আক্রমণে মৃতের দেহও কেন ময়না-তদন্ত করা যাবে না?
ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাঘের কামড়ে কী ধরনের জখম হয়, তা দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকের জানা নেই। আরও পরীক্ষা করা দরকার। তাই দেহটি কলকাতায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে তা বদল করা হয়েছে। সুপার নিজেই দেহের পরীক্ষা করবেন।’’
তবে ডাক্তারদেরই একটি অংশ মনে করছেন, হাসপাতালে সময় মতো ডিউটি না করা, গাফিলতি, বাইরে প্র্যাকটিসের অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই কাকদ্বীপের সরকারি ডাক্তারদের প্রতি যে ভাবে সাধারণ মানুষ এবং তৃণমূল নেতাদের একটি অংশ সরব হয়েছেন, তাতে আর কোনও ঝুঁকিই তারা নিতে চাইছেন না চিকিৎসকেরা। ঘটনাচক্রে, এ দিন মর্গের দায়িত্বে থাকা ডাক্তারের উপরেও গাফিলতির অভিযোগ তুলে কিছু দিন আগে চড়াও হয়েছিল রোগীর পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy