নির্দেশ: বকাবকি ছিল, ছিল নতুন কাজের দিগদর্শনও। ছবি: প্রদীপ আদক
পুরসভার বয়স ষাট ছাড়িয়েছে। কিন্তু আজও বনগাঁ পুর এলাকায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া যায়নি আর্সেনিক মুক্ত পরিস্রুত পানীয় জল। যদিও ডান-বাম দু’পক্ষই পুরসভার ক্ষমতায় থেকেছে বিভিন্ন সময়ে। ভোটের আগে, বিশেষ করে পুরভোটের আগে রাজনৈতিক দলগুলি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।
মঙ্গলবার ব্যারাকপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নৈহাটি থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে গঙ্গার জল আমডাঙা, অশোকনগর, হাবরা হয়ে গাইঘাটা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তা বনগাঁতেও নিয়ে যাওয়া হবে। পাইপ লাইনের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘ওই প্রকল্পের জন্য আগে ৮০০ কোটি টাকা খরচ হওয়ার কথা ছিল। এ বার তা আরও দেড়শো কোটি টাকা বাড়ানো হবে।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, আগে ঠিক ছিল পাইপলাইনের মাধ্যমে গঙ্গার জল পৌঁছবে গাইঘাটা পর্যন্ত। বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যের কাছে এই দাবি করেছিলাম।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কাজের জন্য স্থানীয় আপনজন মাঠে তৈরি হচ্ছে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। এ ছাড়াও, শহরবাসীর জলের সমস্যা মেটাতে পাঁচটি এলাকায় তৈরি হচ্ছে পাঁচটি ওভারহেড রিজার্ভার। যেগুলি তৈরি হচ্ছে স্থানীয় চাঁপাবেড়িয়া, সুকান্তপল্লি, জয়পুর, বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল ও সুভাষপল্লি এলাকায়। চাকদহ থেকে প্রথমে গঙ্গার জল পাইপ লাইনের মাধ্যমে ওই ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে পৌঁছবে। সেখানে জল শোধন করা হবে। তারপর তা যাবে ওভারহেড রিজার্ভারে। সেখানে থেকেই বাড়ি বাড়ি যাবে জল।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, চাকদহ থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল নিয়ে আসতে দীর্ঘ সময় লেগে যেত। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে এ বার জল দ্রুত আসবে গাইঘাটা হয়ে।
পুর এলাকায় পরিবারের সংখ্যা ৩২ হাজার। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন মাত্র ২ হাজার পরিবারে পানীয় জল যায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে। যদিও সেই জলের গতি খুবই কম। স্থানীয় মানুষ ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে থাকা গভীর নলকূপের জল পানীয় হিসাবে ব্যবহার করেন। তবে অনেকের পক্ষে ওই জল বয়ে বাড়ি আনা সম্ভব হয় না। শহরের কিছু মানুষ আবার বাড়ির সাধারণ টিউবয়েলের জলও পান করেন, তাতে আর্সেনিক থাকে জেনেও। আবার বিভিন্ন সংস্থার পানীয় জল কেনেন অনেকে। ওই সব সংস্থার জল নিয়ম মেনে পরীক্ষা হয় না বলে অভিযোগ। পুরসভার পক্ষ থেকে অবশ্য বেআইনি ওই সব পানীয় জল বিক্রির বিরুদ্ধে এর আগে পদক্ষেপ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy