হেলেঞ্চায় গুরুচাঁদ ঠাকুরের মূর্তি নবান্ন থেকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
ভোট যত এগিয়ে আসছে মতুয়াদের ঘিরে রাজ্যের শাসক এবং বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ততই বাড়ছে। বৃহস্পতিবার ঠাকুরনগরে সভা করে গিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মতুয়ারা আশা করেছিলেন, নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দেবেন তিনি। কিন্তু তাঁদের সেই আশা পূরণ হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে শাসকদল আসরে নেমে পড়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, করোনা ভ্যাকসিনের কাজ শেষ হলে নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগের কাজ শুরু করে। তার জন্য আবেদন করতে হবে কিনা তা নিয়েও শাহ কোনও মন্তব্য করেননি। এর ফলে নাগরিকত্ব নিয়ে মতুয়াদের একাংশের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে। সেই আবহে সোমবার দুপুরে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে নবান্ন থেকে মতুয়াদের ধর্মগুরু গুরুচাঁদ ঠাকুরের মূর্তির উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। মতুয়া প্রভাবিত বাগদার হেলেঞ্চায় ওই মূর্তি বসেছে। একই সঙ্গে নতুন করে তৈরি হওয়া হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরেরও উদ্বোধন করেছেন তিনি।
গুরুচাঁদ ঠাকুরের মূর্তি উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির ব্যানারে হয়েছে। যদিও তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বাগদার বিভিন্ন এলাকা থেকে মতুয়া ভক্ত-দলপতি-গোসাঁই-সাধু-পাগলেরা দলবদ্ধ ভাবে এসে জড়ো হন। মতুয়াদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল হেলেঞ্চায় গুরুচাঁদ ঠাকুরের একটি মূর্তি প্রতিষ্ঠার। সেই দাবি পূরণ হওয়াতে তাঁরা খুশি। বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ মূর্তিটি তৈরি করতে আর্থিক সাহায্য করেছেন। জায়েন্ট স্ক্রিনে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখামাত্রই মতুয়ারা ডঙ্কা বাজিয়ে, মতুয়াদের পতাকা ‘নিশান’ উড়িয়ে হরিবোল ধ্বনি দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত মতুয়ারা নাগরিকত্ব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থানকে সমর্থন করেছেন। বাগদা ব্লক মতুয়া মহাসঙ্ঘের সম্পাদক বিকাশ বিশ্বাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় ছাড়া আমাদের মতো পিছিয়ে পড়া সমাজের মানুষের কথা কেউ ভাবেননি। আজ আমাদের দীর্ঘদিনে দাবি পূরণ হল। আমাদের ভোটের সচিত্র পরিচয়পত্র আছে। অন্যান্য নথিও আছে। মুখ্যমন্ত্রীই ঠিক। আমরা তো এ দেশেরই নাগরিক।”
কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা অল ইণ্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর এটি ভোট রাজনীতি। মতুয়াদের জন্য সত্যিই যদি মুখ্যমন্ত্রী কিছু করতে চাইতেন, তা হলে নাগরিকত্ব আইন সমর্থন করতেন। তা না করে ঠাকুরের মূর্তি উদ্বোধন করে মতুয়াদের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছেন।”
উত্তর ২৪ পরগনার জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর গোপাল শেঠ বলেন, “মতুয়াদের নিয়ে বিজেপির যদি এতই মাথাব্যথা, তা হলে এত দিন ধরে তারা ছিল কোথায়! তাঁদের সুখে-দুঃখে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকার কথা মতুয়ারা ভালই জানেন। মূর্তি ও মন্দিরের উদ্বোধন সেই উন্নয়নের ধারাবাহিক ফল। বিজেপি নাগরিকত্ব নিয়ে মতুয়াদের ভাঁওতা দিচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy