—প্রতীকী চিত্র।
জঙ্গলে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের হামলায় মৃত্যুর পরেও ক্ষতিপূরণ পায়নি মৃত মৎস্যজীবীদের পরিবার। বার বার নানা মহলে দরবার করেও সুরাহা হয়নি। বাধ্য হয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কুলতলির বাসিন্দা দুই মৃত মৎস্যজীবীর পরিবারের সদস্যেরা। সেই মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য দুই পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ৫ লক্ষ করে টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য সরকারকে। বিচারপতির নির্দেশ, চার সপ্তাহের মধ্যেই দিতে হবে টাকা।
২০২২ সালের নভেম্বর মাসে জঙ্গলে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছিল কুলতলির কাঁটামারির বাসিন্দা দিলীপ সর্দারের। দিলীপের স্ত্রী শেফালি সর্দারের দাবি, বন দফতরের অনুমতি নিয়েই জঙ্গলে গিয়েছিলেন দিলীপ। কিন্তু বন দফতর সহ সমস্ত সরকারি দফতরে আবেদন-নিবেদন করেও ক্ষতিপূরণ মেলেনি। আদালতের দ্বারস্থ হন শেফালি।
মৈপিঠের বাসিন্দা অমল দণ্ডপাঠকে বাঘে আক্রমণ করেছিল ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর। দিন দু’য়েক পরে মারা যান। স্ত্রী তপতীর দাবি, অমলও বৈধ অনুমতিপত্র নিয়ে জঙ্গলে ঢুকেছিলেন। তবু ক্ষতিপূরণ দিতে গড়িমসি করছিল প্রশাসন।
মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর দীর্ঘ দিন ধরে এই এলাকায় বাঘে আক্রান্ত পরিবারগুলির অধিকার নিয়ে কাজ করছে। এর আগে এপিডিআর-এর উদ্যোগেই কুলতলির বাসিন্দা শান্তিবালা নস্কর স্বামী লখিন্দর নস্করের মৃত্যুর জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করে আদালতে গিয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে ক্ষতিপূরণ পান শান্তিবালা। এ বারও এপিডিআর-এর উদ্যোগেই গত সপ্তাহে আদালতের দ্বারস্থ হন শেফালি, তপতীরা। আবেদনকারীদের তরফে আইনজীবী ছিলেন কৌশিক গুপ্ত এবং শ্রীময়ী মুখোপাধ্যায়। শ্রীময়ী বলেন, “চার সপ্তাহের মধ্যে দুই পরিবারকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রত্যন্ত এলাকার এই সব মানুষজন আগে আদালত পর্যন্ত পৌঁছতে পারতেন না। এখন আসছেন, ফলে বিচারও পাচ্ছেন।”
এপিডিআর-এর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সহ সম্পাদক মিঠুন মণ্ডল বলেন, “নানা অজুহাতে এঁদের ক্ষতিপূরণ আটকে রাখে প্রশাসন। ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয় পরিবারগুলি। আমরা চাই, কোনও গড়িমসি না করে বাঘের আক্রমণে মৃত ও জখম প্রতিটি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগের এক কর্তা জানান, আইন মেনে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশ এলে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলিকেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy