Advertisement
১৯ মে ২০২৪

দায়ের কোপে নাতনিকে খুন, ধৃত

পারিবারিক বিবাদের জেরে দাদুর হাতে খুন হল ৫ বছরের নাতনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ থানার ২ নম্বর সাহেবখালি গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, সুকুমার মণ্ডলের দায়ের কোপে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নাতনি সৌমীর।

আহত: হাসপাতালে নিহত সৌমীর মা কাকলি মণ্ডল। ছবি: নির্মল বসু

আহত: হাসপাতালে নিহত সৌমীর মা কাকলি মণ্ডল। ছবি: নির্মল বসু

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৭ ১৩:০০
Share: Save:

পারিবারিক বিবাদের জেরে দাদুর হাতে খুন হল ৫ বছরের নাতনি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ থানার ২ নম্বর সাহেবখালি গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, সুকুমার মণ্ডলের দায়ের কোপে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নাতনি সৌমীর। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন সৌমীর বাবা সৌমেন এবং মা কাকলি। তাঁদের ন’নম্বর সান্ডেলেরবিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গ্রেফতার হন সুকুমার।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিন্দী নদীর পাশে থাকেন সুকুমারবাবুরা। কৃষিজীবী সুকুমারবাবুর প্রতিবন্ধী। ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে যাওয়ায় ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটাচলা করেন বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তি। অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে বাড়ি থেকে বড় একটা বেরোন না। কারণে-অকারণে স্ত্রী কণিকার সঙ্গে তাঁর ঝগড়া বাধে। অভাবের সংসারে ছেলে বিয়ে করায় অশান্তি আরও বেড়েছিল। ঝগড়া থামাতে মাঝে মধ্যেই পাড়া-পড়শিদের ডাক পড়ে মণ্ডল বাড়িতে।

পুলিশ জানায়, সকালে সৌমীকে নিয়ে মা গিয়েছিলেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ফিরে দেখেন, শ্বশুর-শাশুড়ির ঝগড়া চলছে। তাঁদের চুপ করতে বলে শাশুড়ির কাছে গ্লাস জল চান বৌমা। মেয়েকে নিয়ে বাড়ির দাওয়ায় বসেন।

কিন্তু তাতে চিৎকার থামেনি সুকুমারের। স্ত্রীকে ছেড়ে এ বার বৌমাকে গালিগালাজ শুরু করেন তিনি। কাকলিরও মাথা গরম হয়। দু’কথা শুনিয়ে দেন শ্বশুরকে।

এতেই আগুনে ঘি পড়ে। অভিযোগ, বারান্দার চালে গোঁজা দা এনে বৌমাকে কোপ মারতে যান সুকুমার। দা বৌমার গায়ে না লেগে লাগে কোলে থাকা নাতনির মাথায়, হাতে-পায়ে। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে দায়ের কোপে লাগে কাকলিরও। উঠোনে কাজ করছিলেন সৌমেন। তিনি ছুটে এলে বাবার দায়ের কোপে জখম হন।

চিৎকারে পড়শিরা জড়ো হন। ততক্ষণে মারা গিয়েছে সৌমী। এলাকাবাসী সুকুমারকে ধরে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ধরে প্রৌঢ়কে।

সুকুমার বলেন, ‘‘পা ভাঙার পর কাজ করতে না পারায় সংসার প্রায় অচল। তাই ছেলেকে বলেছিলাম, পড়াশোনা যখন শিখেছিস, তখন একটা চাকরি জুটিয়ে তবেই বিয়ে করিস। কিন্তু আমার কথা শোনেনি। এ সবের ফলে মাথা গরম থাকত। তার উপরে বৌয়ের সঙ্গে ঝগড়ার সময়ে বৌমা এসে মন্তব্য করায় মাথায় খুন চেপে যায়।’’ সুকুমার বলেন, ‘‘বৌমাকে মারতে গিয়ে যখন নাতনির মাথায় কোপ লাগল, ভাবলাম, সকলকে মেরে নিজেও মরব। তা আর হল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Arrest Grand Daughter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE