Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

দিনভর দুর্ভোগ ব্রিগেডের জেরে

যে ক’টি রাস্তায় নেমেছে, তাতে বাদুড়ঝোলা হয়ে যাতায়াত করতে হয়েছে মানুষকে। সকালের দিকে ট্রেনে বেশির ভাগই ছিল ব্রিগেডের ভিড়। সাধারণ যাত্রীদের তাতে নাকাল হতে হয়েছে।

ঠাসাঠাসি: যানবাহন কম থাকায় বাসের মাথায় যাত্রীরা। বেড়াচাঁপায়। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়।

ঠাসাঠাসি: যানবাহন কম থাকায় বাসের মাথায় যাত্রীরা। বেড়াচাঁপায়। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব প্রতিবেদন
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:১৮
Share: Save:

আশঙ্কা ছিলই। ব্রিগেডে তৃণমূলের সভার জেরে দিনভর ভুগতে হল যাত্রীদের। বেশির ভাগ রুটের বাস তুলে নেওয়া হয়েছিল। যে ক’টি রাস্তায় নেমেছে, তাতে বাদুড়ঝোলা হয়ে যাতায়াত করতে হয়েছে মানুষকে। সকালের দিকে ট্রেনে বেশির ভাগই ছিল ব্রিগেডের ভিড়। সাধারণ যাত্রীদের তাতে নাকাল হতে হয়েছে।

বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার হাবড়া লোকালে রীতিমতো দলের পতাকা রেখে সিট বুক করে রেখেছিলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। এই দেখে কিছু যাত্রী ট্রেন থেকে নেমে যান। এক যাত্রীর কথায়, ‘‘অন্য দিন কয়েক জন নিত্যযাত্রী খবরের কাগজ, রুমাল, দেশলাই, চিরুনি রেখে অন্যায় ভাবে সিট বুকিং করেন। আজ তো দেখছি পতাকা রেখে সিট বুকিং হয়েছে।’’ মহিলা কামরায় তৃণমূলের পুরুষ কর্মী-সমর্থকদের উঠে পড়তে দেখা গিয়েছে বহু ট্রেনে।

বনগাঁয় বাসের আকাল ছিল এ দিন। অনেকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। কেউ তিন গুণ ভাড়া দিয়ে অটো-ট্রেকারে যাতায়াত করেছেন। ট্রেনে উঠেও ভিড়ে চাপে নেমে পড়তে দেখা গেল অনেককে।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, কোনও রুট থেকে সব বাস তোলা হবে না। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা ছিল অন্য রকম। জেলার অনেক রুট থেকেই সব বাস তুলে নেওয়া হয়েছে। বনগাঁ থেকে দক্ষিণেশ্বর রুটে ৩৭টি বাস চলে। এ দিন সকালের দিকে একটিও বাস চলেনি। হাবড়া শহরে অন্য দিন হামেশাই যানজট হয়। এ দিন ১২টার পরে রাস্তাঘাট সুনসান ছিল।

ব্রিগেডে যাওয়ার জন্য সাত সকালে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা মানুষের ঢল নেমেছিল হাসনাবাদে। পার হাসনাবাদের পাড়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও অনেক যাত্রী এ দিন নৌকোয় উঠতে পারেননি। একই অবস্থা ছিল হাসনাবাদ স্টেশনে। সেখানে তৃণমূলের পতাকা আর সমর্থকদের তৃণমূল সমর্থকদের ভিড় ঠেলে অনেক সাধারণ যাত্রীরা অনেকেই কামরায় পা রাখতে পারেননি।

বসিরহাটে বাসও চলেছে কম। সেখানেও ভোগান্তি হয় নিত্য যাত্রীদের।

জয়নগর এলাকায় রাস্তাঘাটে যান চলাচল অন্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম ছিল। তবে স্কুলগুলি খোলা ছিল। হাজিরাও ছিল স্বাভাবিক। স্টেশনের টিকিট কাউন্টারগুলিতে ব্যস্ত সময়ে অন্য দিনের থেকে ভিড় কম ছিল। জয়নগর, দক্ষিণ বারাসত দু’টি স্টেশনেরই এক ছবি। যাঁরা ব্রিগেড যাওয়ার জন্য ট্রেন ধরেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই টিকিট কাটেননি বলে অভিযোগ।

গত কাল বিকেলে ডায়মন্ড হারবারে আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিলেন রায়দিঘির চাপলা গ্রামের সুজিত হালদার। শনিবার সকালে তিনি খবর পান, ছেলের ডায়েরিয়া হয়েছে। দ্রুত বাড়ি ফিরতে হবে। তড়িঘড়ি সকালেই ডায়মন্ড হারবার থেকে রায়দিঘিগামী এম-১০ বাসস্ট্যান্ডে আসেন। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনও বাস পাননি সুজিত। বাধ্য হয়ে পাথরপ্রতিমাগামী সরকারি বাসে করে বাড়িতে যান তিনি।

পূর্ব মেদিনীপুরের রমেশ জানা চাকরি করেন সাগরের একটি রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কে। ভোর বেলায় বাড়ি থেকে ব্যাঙ্কে ঢুকতে পারলেও গাড়ি না থাকায় বাড়ি ফেরার সময়ে সমস্যায় পড়েন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ মহকুমায় সমস্ত রুটের প্রায় সব গাড়ি তুলে নেওয়া হয়েছিল। সরকারি বাস চললেও তা ছিল হাতে গোনা কয়েকটি। ফলে এ দিন যাঁরাই কাজে বেরিয়েছেন, হয়রান হতে হয়েছে নানা ভাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Brigade Kolkata rally Kolkata brigade Brigade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE