রাত প্রায় ১১টা। স্ত্রীকে ডাক্তার দেখিয়ে ফিরছেন ক্যানিঙের ধলিরবাটির বাসিন্দা আশরাফ মোল্লা। ট্রেন থেকে নেমে টোটো ধরবেন বলে ঠিক করলেন। জানা গেল, ভাড়া গুনতে হবে ৮০ টাকা। দিনের অন্য সময়ে দু’জনের জন্য ওই ভাড়া মেরেকেটে গোটা ২০ টাকার বেশি নয়। খানিকক্ষণ দু’জনের মধ্যে কাটাকাটিও হল। কিন্তু উপায়ন্তর না দেখে বেশি ভাড়াতেই আশরাফকে উঠতে হল টোটোয়।
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টোটোর ভাড়া বৃদ্ধির এ হেন সমানুপাতিক সম্পর্কে সমস্যায় পড়ছেন মানুষজন। যাত্রীদের অভিযোগ, সন্ধ্যার পর থেকেই এলাকার বিভিন্ন রুটের টোটো চালকেরা ইচ্ছে মতো ভাড়া নিচ্ছেন। কিছু বলতে গেলে নানা কটূক্তি করা হচ্ছে।
ক্যানিং স্টেশন চত্বর থেকে ইটখোলা ও ধলিরবাটি রুটে প্রায় ১২০টি টোটো চলে। ক্যানিং থেকে ধলিরবাটী পর্যন্ত টোটোর ভাড়া ৮ টাকা এবং ক্যানিং থেকে ইটখোলা পর্যন্ত ভাড়া ১০ টাকা। নিত্য যাত্রীরা জানালেন, সন্ধে ৬টার পর থেকে রাত পর্যন্ত ওই রুটে টোটোর ভাড়া বাড়তেই থাকে। এর কারণ কী? রাত ৮টার পরে ওই সমস্ত রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আর সেই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়েই শুরু হয় টোটোর দাদাগিরি। তা ছাড়া, কলকাতা থেকে শেষ ট্রেন ক্যানিঙে আসে রাত ১২টা নাগাদ। সে সময়ে টোটো বা রিকশা ছাড়া অন্য কোনও যানবাহন থাকে না। বাধ্য হয়েই তখন টোটো চালকদের খেয়ালখুশি মেনে ভাড়া গুনতে হয় যাত্রীদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টোটো চালক বললেন, ‘‘একটু বাড়তি রোজগারের আশায় রাতে টোটো চালাই। ভাড়া তো বেশি লাগবেই। তা ছাড়া, ইউনিয়নকেও প্রত্যেক দিন ৭ টাকা করে দিতে হয়।’’ তারক বিশ্বাস নামে এক টোটো চালক জানালেন, রুটে এমনিতেই অনেক টোটো চলে। সারা দিন যে ভাড়া হয়, তাতে ঠিক মতো আয় হয় না। ইউনিয়ন থেকে বলা হয়েছে, সন্ধ্যার পর থেকে ১-২ টাকা করে বেশি নেওয়ার জন্য। সেই মতো ভাড়া নেওয়া হয়।
কিন্তু যাত্রীদের অভিজ্ঞতা বলে, ভাড়া বৃদ্ধির অঙ্কটা ১-২ টাকার থেকে অনেক বেশি। ক্যানিঙের আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি তপন সাহা বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমি এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাইনি। ভাড়া নিয়ে সমস্যা যদি এমন হয়, তা হলে আমরা অবশ্যই সেই সব টোটো চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy