অসমাপ্ত: এ ভাবেই পড়ে আন্ডারপাস। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
চার বছর আগেই কাজ শুরু হয়েছিল। তবুও পূর্ব রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ শেষ করতে পারল না সোদপুর এবং আগরপাড়া স্টেশনে যাত্রীদের যাতায়াতের জন্যে দু’টি আন্ডারপাস। ফলে যাত্রী হয়রানি অব্যাহত রয়ে গিয়েছে আজও।
এক দিকে, রেললাইনের পাশে জবরদখল। অন্য দিকে, আন্ডারপাস তৈরির জন্যে দীর্ঘ দিন স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেলের খোঁড়াখুড়ি। এই দুইয়ে মিলে সোদপুর স্টেশনে রেলযাত্রীদের যাতায়াত এখন দুরূহ হয়ে উঠেছে। বিকল্প রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গেলে ফুটওভার ব্রিজে উঠতে হবে যাত্রীদের। কিন্তু সেটি ব্যবহার করতে চান না বেশির ভাগ যাত্রী। ফলে ঝুঁকি নিয়ে রেললাইনের পাশ দিয়েই স্টেশনে যাতায়াত চলছে।
গোঁদের উপর বিষ ফোঁড়া, স্টেশন থেকে মাইকে ট্রেনের সময়সূচির ভুল ঘোষণা। যাত্রীদের অভিযোগ, হয়তো আসছে গ্যালপিং ট্রেন। কিন্তু বলা হচ্ছে লোকাল। বলা হল, তিন নম্বরে ট্রেন আসছে। কিন্তু ট্রেন এলো এক নম্বরে। এর ফলে লোকাল ট্রেন আসছে মনে করে লাইনের পাশ দিয়ে হাঁটতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনছেন যাত্রীরা। গত ছ’ মাসে তিন বার ভুল ঘোষণা নিয়ে রেল অবরোধ করেছেন নিত্যযাত্রীরা। এর ফলে দীর্ঘ ক্ষণ ট্রেন আটকে নাজেহাল হতে হয়েছে অন্য যাত্রীদের। রেল সূত্রে খবর, ভুল ঘোষণা নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা মানছেন রেলের কর্তারা। কিন্তু তাঁদের বক্তব্য, রেললাইন পারপার করা অপরাধ। যাত্রীরা তা জানা সত্ত্বেও নিজেদের বিপদ ডেকে আনছেন।
বিটি রোডের সোদপুর থেকে যশোর রোড যাওয়ার রাস্তায় রয়েছে সোদপুর স্টেশন। সোদপুর স্টেশনের ঠিক আগে (খড়দহ প্রান্তে) ওই রাস্তায় একটি লেভেল ক্রসিং ছিল। পরে সেটি তুলে দেয় রেল। অভিযোগ, উড়ালপুল হওয়ার পরে ধীরে ধীরে তার নীচে জবরদখল হয়ে বাজার বসে যায়। রাস্তার দু’ধারের বিভিন্ন রকমের খাবার, ফল, জামাকাপড়, জুতো, আসবাবপত্র, গাছ প্রভৃতি দোকানের ভিড়ে এখন হাঁটাচলারও জায়গা নেই ওই রাস্তায়। তার উপরে রিকশা ও মোটরবাইকের দৌরাত্ম্যে প্রাণ হাতে করে স্টেশনে যাতায়াত করেন যাত্রীরা।
এই সমস্যা মেটাতেই রেল সোদপুর ও আগরপাড়া স্টেশনের জন্য দু’টি আন্ডার পাস তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কাজ শুরু হয়েও চার বছর পেরিয়ে গেল। তবু শেষ হল না সেই দু’টি আন্ডারপাস। যাত্রীদের অভিযোগ, শিয়ালদহ ডিভিশনের কর্তাদের এই নিয়ে কোনও হেলদোল নেই।
যাত্রীদের অভিযোগ, ভুল ঘোষণার জেরে প্রতি দিন সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। তাড়াহুড়ো করে লাইনের পাশ দিয়ে হাঁটতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটছে। আরও অভিযোগ, নির্মাণ কাজের সময়ে পুরসভার একটি জলের পাইপ ফেটে যায়। জলকাদায় মাখামাখি ওই রাস্তা দিয়ে হাঁটাই বিপজ্জনক। অথচ তা মেরামতি হয়নি আজও। অন্য দিকে, সাবওয়ে থেকে উ়়ড়ালপুল এবং প্ল্যাটফর্ম থেকে সাবওয়ে পর্যন্ত সিঁড়ি তৈরির জন্যে মাটি খোঁড়ার কথা রেলের। কিন্তু সে কাজ এখনও শুরুই করেনি রেল। ফলে কাজ শেষ হতে দেরি হচ্ছে।
আন্ডারপাস তৈরি দেরির কারণ হিসেবে রেল-কর্তারা জানিয়েছেন, আগরপাড়ায় রেললাইনের পাশ দিয়ে সিগন্যালের কেবল সরানোর কাজে দেরি হচ্ছে। তাঁদের দাবি, আন্ডারপাস তৈরি দেরির অন্যতম কারণ এটাই। ওই কাজ হয়ে গেলেই শেষ করা যাবে আন্ডারপাস দু’টি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy