গ্রামীন হাসপাতালে ব্লাডব্যঙ্ক। প্রতীকী চিত্র।
রক্তের অসুখে আক্রান্ত রোগী কিংবা প্রসূতির সিজ়ারের ক্ষেত্রে, রক্তের প্রয়োজনে মেটাতে এ বার গ্রামীণ হাসপাতালেই ব্যবস্থা রাখবে স্বাস্থ্য দফতর। তার জন্য ওই হাসপাতালগুলির সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে স্থানীয় ব্লাড ব্যাঙ্ককে। স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি, এই ব্যবস্থাপনায় রক্তের জন্য রোগীর পরিজনকে আর গ্রাম থেকে শহরে কিংবা কলকাতায় ছুটে আসতে হবে না।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবন থেকে ওই ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বছর কয়েক আগে জেলার প্রতিটি গ্রামীণ হাসপাতালে প্রসূতিদের স্বার্থে ব্লাড সাপ্লাই ইউনিট (বিএসইউ) চালু করা হয়েছিল। অনেকেরই প্রসবের সময়ে অতিরিক্ত রক্তপাতের সমস্যা দেখা দেয়। তাতে সঠিক সময়ে রক্ত সঞ্চালন করা না হলে প্রসূতির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রোগীর পরিজনকে রক্তের জন্য হন্যে হয়ে দৌড়তে হয়। সেই সমস্যা মেটাতেই এই ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। কিন্তু মাঝে কিছুটা সময় এই পরিষেবায় ঢিলেমি আসে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলেরই। ফের ‘বিএসইউ’ প্রকল্পকে চাঙ্গা করতে উদ্যোগী হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। জানা যাচ্ছে, রাজ্যের ৮১টি গ্রামীণ বা ব্লক হাসপাতালের মধ্যে ৭৩টি জায়গায় এই ‘বিএসইউ’-কে সচল করা হচ্ছে, যেখানে অন্তত পাঁচ ইউনিট রক্ত সংরক্ষিত থাকবে।
রাজ্যের রক্ত সংক্রান্ত বিষয় দেখভালের সংগঠন স্টেট ব্লাড সেল-এর যুগ্ম অধিকর্তা তথা চিকিৎসক বরুণ সাঁতরার কথায়, “এ বার শুধু প্রসূতিদের ক্ষেত্রেই নয়, রক্তের অসুখে আক্রান্তদের রক্ত সঞ্চালন করতে হলেও, এই সমস্ত জায়গায় পরিষেবা মিলবে। প্রান্তিকস্তরেও রক্ত সঞ্চালন পরিষেবা পৌঁছে দেওয়াই এর মূল লক্ষ্য।”
কী ভাবে কাজ করবে এই ‘বিএসইউ’? স্বাস্থ্য কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রসূতিরা ভর্তি হলে তাঁদের হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করা হবে। প্রয়োজন মনে করলে ওই নির্দিষ্ট গ্রুপের রক্ত আলাদা করে রাখা হবে, যাতে সিজ়ারের পরে প্রয়োজন হলেই রক্ত দেওয়া যায়। আবার থ্যালাসেমিয়া বা অন্য রক্তের অসুখের রোগীদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর যখন রক্ত দিতে হয়, সেটিও ওই হাসপাতালে গিয়ে তা মিলবে। তবে পাঁচ ইউনিটের মধ্যে এক বা দুই ইউনিট শেষ হওয়া মাত্রই আবারও নিকটবর্তী ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে বিএসইউ-তে রক্ত এনে রাখা যাবে বলেও জানাচ্ছেন বরুণ।
‘বিএসইউ’-তে রক্ত সঞ্চালন-সহ বিভিন্ন কাজের জন্য এক জন করে মেডিক্যাল অফিসার, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট এবং নার্স থাকবেন। আজ মঙ্গলবার থেকে তিন দিন ধরে গ্রামীণ বা ব্লক হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট বা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রযুক্তিবিদদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy