জেদ: মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে বেরোচ্ছে লাবনি। নিজস্ব চিত্র
দু’হাত পা প্রায় অসাড়। দৃষ্টিশক্তিও দুর্বল। তা সত্ত্বেও সমস্ত প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ‘রাইটারের’ সাহায্য নিয়ে এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে বেলসিং গার্লস স্কুলের ছাত্রী লাবনি রায়। তার পরীক্ষাকেন্দ্র শতল কলসা হাইস্কুল।
স্কুল ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, লাবনি জন্ম থেকেই নানা সমস্যায় ভুগছে। হাঁটাচলা করতে পারে না। চোখেও বিশেষ দেখতে পায় না। ঠিকঠাক কথা বলা, কিছু মনে রাখার ক্ষেত্রেও সমস্যা আছে। ছোটবলোয় মায়ের কোলে চড়ে ফলতা এলাকার সুজাপুরের একটি প্রতিবন্ধী স্কুলে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে লাবনি। পরে বাড়ির কাছাকাছি বেলসিং গার্লস হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। স্কুল কামাই কিছুতেই করতে চাইত না, জানালেন মা।
লাবনির বাবা আনন্দ চানাচুর কারখানার শ্রমিক। বহু কষ্টে মেয়েকে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। মেয়ে এখনও অক্ষর চিনতে পারে না। কেবলমাত্র কিছু দেখে লিখতে পারে। স্মরণশক্তিও বেশ ক্ষীণ। মাধ্যমিকের উত্তরপত্র লেখার ক্ষমতা লাবনির নেই। কিন্তু পরীক্ষা দেওয়ার প্রবল ইচ্ছে দেখে স্কুলের দশম শ্রেণির রাকিবা খাতুন নামে এক ছাত্রী তার ‘রাইটার’ হতে মত দেয়। লাবনির মা ইরাবতী বলেন, “জন্ম থেকেই মেয়ের প্রায় সারা শরীর অসাড়। কিন্তু পড়াশোনা করার খুব ইচ্ছে।”
মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন থেকে লাবনির জন্য শতল কলসা হাইস্কুলের আলাদা ঘরে ব্যবস্থা করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ আতিকুল্লা মোল্লা তিনি নিজের গাড়িতে করে প্রথম দিন পরীক্ষার পরে মেয়েটিকে বাড়ি পৌঁছে দেন। পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি ছোট গাড়ি করে যাওয়া-আসার ব্যবস্থা করে দেবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন।
ফলতার বিডিও সন্দীপ ঘোষ বলেন, “ওই পরীক্ষার্থীর যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy