ধৃত: রাকেশ তিওয়ারি। নিজস্ব চিত্র
সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে বিহারে নাচের কাজে নিয়ে যাওয়ার নাম করে নারীপাচারের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হল এক মহিলা-সহ চারজন।
মঙ্গলবার সুন্দরবন কোস্টাল থানার অন্তর্গত আমতলি থেকে গ্রেফতার করা হয় রাকেশ তিওয়ারি, রত্না সরকার, পবনকুমার গুপ্ত ও অরিজিৎকুমার মাঞ্জিকে। রত্নার বাড়ি হাসনাবাদ থানার রূপমারি গ্রামে। বাকি তিনজন বিহারের সিওয়ান জেলার জালালপুর এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, আমতলির বাসিন্দা বিবাহিতা এক তরুণীকে মোটা টাকার প্রলোভন দেখিয়ে বিহারে নাচের কাজে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোরাজুরি করে রাকেশ। স্ত্রীকে ভিন্রাজ্যে পাঠাতে চাননি স্বামী। আশপাশের এলাকা থেকে আরও কয়েকজন মহিলাকে বিহারে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে রাকেশ ও তার দলবল। সন্দেহ হওয়ায় তরুণীর স্বামী সুন্দরবন কোস্টাল থানার পুলিশকে ঘটনাটি জানান। পুলিশকর্মীরা অভিযুক্তদের আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অসঙ্গতি ধরা পড়ায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, এই চক্রের মূল পান্ডা রাকেশ। রত্নাকে নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে এলাকায় থাকছিল সে। রত্নাকেই ব্যবহার করে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের কিশোরী ও তরুণীদের ভুল বুঝিয়ে বিহারে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ছিল। ধৃত বাকি দু’জন তাদের গাড়ির চালক বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তরুণীর স্বামী বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী নাচগান ভালবাসেন। সে কারণে আমাকে ওরা অনেক টাকা দেবে বলেছিল। স্ত্রীকে বিহারে নিয়ে গিয়ে নাচের কাজে ব্যবহার করবে বলেছিল। আশপাশের গ্রামের আরও কয়েকজন মেয়েকে একই কথা বলে। আমার সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দিই।’’ পুলিশ জানতে পেরেছে, ইতিমধ্যেই সুন্দরবনের এই প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সাত-আটজন মহিলাকে বিহারে নিয়ে গিয়েছে রাকেশ।
এসডিপিও ক্যানিং গোবিন্দ শিকদার বলেন, ‘‘সুন্দরবনের এই প্রত্যন্ত এলাকা থেকে মহিলাদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ভিন্রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল ধৃতেরা। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই এলাকা থেকে আর কাউকে নিয়ে গিয়েছে কি না, তা দেখা হচ্ছে। এদের সঙ্গে অন্য কোনও পাচারচক্রের যোগ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
হ্যাম রেডিয়ো সূত্রের খবর, গত পাঁচ বছরে সুন্দরবন এলাকা থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন। অর্থাৎ, বছরে গড়ে পঞ্চাশ জন মহিলা নিখোঁজ হচ্ছেন। পাচার রুখতে বারুইপুর পুলিশ জেলার তরফে মানবপাচার প্রতিরোধ দল গঠন হয়েছিল আগেই। তাতে কতটা লাভ হয়েছে, উঠছে সে প্রশ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy