Advertisement
১৫ জুন ২০২৪
প্লাবিত ক্যানিংয়ের চারটি গ্রাম

মাতলার বাঁধে ভাঙন

মাতলা নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হল ক্যানিংয়ের চারটি গ্রাম। শুক্রবার রাতে ২০ ফুট বাঁধ ভেঙে প্রায় হাজার খানেক মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। দেড়শো মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। আশ্রয়হীনেরা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। ২০০-২৫০ বিঘা ধান জমিও জলের তলায় ডুবে গিয়েছে। শনিবার পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন সেচ দফতরের এসডিও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৪ ০১:০৮
Share: Save:

মাতলা নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হল ক্যানিংয়ের চারটি গ্রাম। শুক্রবার রাতে ২০ ফুট বাঁধ ভেঙে প্রায় হাজার খানেক মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। দেড়শো মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। আশ্রয়হীনেরা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। ২০০-২৫০ বিঘা ধান জমিও জলের তলায় ডুবে গিয়েছে। শনিবার পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন সেচ দফতরের এসডিও।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বাঁধ ভেঙে ওই রাতে ক্যানিং-১ ব্লকের বক্রাবনি, সন্দেশখালি, নয়াপাড়া ও তেঁতুয়া গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়েও রাতে সেচ দফতরের কেউ-ই ঘটনাস্থলে আসেননি। তবে, ওই রাতে ক্যানিং থানার ওসি সতীনাথ চট্টরাজ ইএফআর এবং পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ক্যানিং-১ ব্লকের বিডিও বুদ্ধদেব দাসও খবর পেয়ে সেখানে যান। ঘরছাড়া হাজার খানেক মানুষকে তাঁরা উদ্ধার করেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ত্রাণ শিবির খুলে তাঁদের আশ্রয়েরও ব্যবস্থা করেন তাঁরা।

শনিবার সকালে ওই এলাকার নদী বাঁধ পরিদর্শনে যান ক্যানিং সেচ দফতরের এসডিও অসীম সিংহ। সেখানে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। পরে ওসি পৌঁছে এসডিও-কে ঘেরাও মুক্ত করেন। ইটখোলা পঞ্চায়েতের প্রধান ফটিক সর্দার রাতে আশ্রয়হীনদের খাবারের ব্যবস্থা করেন। গ্রামবাসী গফ্ফর শেখ, শহিদুল ঘরামিদের অভিযোগ, “গ্রামের কয়েক জন মিলে মাতলা নদীর চরে প্রায় ১১০ বিঘা জমিতে মেছো ভেড়ি তৈরি করেন। সেখানে তাঁরা নদীর বাঁধ কেটে নোনা জল ঢোকাতেন। এর ফলে নদীর বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ে। এর আগেও ওই বাঁধ ভেঙে এলাকা দু’বার প্লাবিত হয়েছে। এই বেআইনি কাজের ব্যাপারে প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি।”

পঞ্চায়েতের প্রধান ফটিক সর্দারেরও ক্ষোভ, এলাকার কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের জন্য বারবার নদী বাঁধ ভাঙছে। সাধারণ মানুষ তার প্রতিবাদ করতে গেলে ভেড়ির মালিকেরা বোমা, বন্দুক নিয়ে গ্রামবাসীদের উপর চড়াও হচ্ছেন। সেচ দফতর ফান্ড না থাকার অজুহাতে বারবার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছে।”

এ দিকে, অসীমবাবু বলেন, “নদীর জলস্তর হঠাত্‌ বেড়ে যাওয়ায় এই বিপত্তি। জলের চাপ থাকায় কাজ শুরু করা যায়নি। ভাটা না পড়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বাঁধ মেরামতির জন্য বাঁশ, বালির বস্তা সবই মজুত করা রয়েছে। ভাটার সময় আমরা কাজ শুরু করব।”

এ দিন, মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য জানান, দুর্গতদের জন্য চাল, ডাল, বেবি ফুড ত্রিপল পাঠানো হয়েছে। সমস্ত পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। বেআইনি মেছো ভেড়ির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আগামী সোমবার জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে সেচ দফতর, মত্‌স্য দফতর, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং প্রশাসনিক আধিকারিক-সহ মেছো ভেড়ির মালিকদেরও ডাকা হবে। সেখানেই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

flood at canning matla dam crack damage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE