Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Bengali

বাংলাদেশি সন্দেহে পুণেতে রাজ্যের ৩ বাঙালিকে হেনস্থা  

বাংলাদেশি আছে এই অভিযোগ তুলে রাহুল গাউলির নেতৃত্বে জনা ৫০ এমএনএস কর্মী নিয়ে সেখানে চড়াও হয় শনিবার সকালে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:৪৩
Share: Save:

বাংলাদেশি সন্দেহে পুণেতে পশ্চিমবঙ্গের তিন জনকে দিনভর হেনস্থা করল রাজ ঠাকরের দল মহারাষ্ট্র নবনির্বাণ সেনা (এমএনএস)-র লোকজন। নিজেদের পরিচয়পত্র দেখানোর পরেও উদ্ধব ঠাকরে সরকারের পুলিশ তাঁদের থানায় নিয়ে গিয়ে সন্ধে পর্যন্ত আটকে রাখল। হয়রান করা হল, পশ্চিমবঙ্গে তাঁদের পরিবারের লোকদেরও। পুণের ধঙ্কবাদী এলাকার বালাজী নগরে শনিবারের ঘটেছে। কর্মসূত্রে সেখানে থাকেন পশ্চিমবঙ্গের দিলশাদ মনসুরি, রোশন শেখ ও বাপি সর্দার। দিলশাদ একটি ফুডস্টল চালান। রোশন সোনা-রুপোর গয়না পালিশের কাজ করেন। আর বাপি ইলেকট্রিশিয়ান।

ওই বাড়িতে বাংলাদেশি আছে এই অভিযোগ তুলে রাহুল গাউলির নেতৃত্বে জনা ৫০ এমএনএস কর্মী নিয়ে সেখানে চড়াও হয় শনিবার সকালে। যায় পুলিশের দলও। ওই তিন জনকে ঘিরে ধরে তাঁদের জেরা করতে শুরু করে। পরিচয়ের প্রমাণ দেখতে চায়। ভিড় জমে যায় পড়শিদের। সেখানেই বেশ কিছু ক্ষণ ধরে চলে ‘বিদেশি সন্ধান অভিযান’। পরিচয়পত্র দেখিয়ে তিন জন বারবার বোঝান, তাঁরা বিদেশি নন, ভারতেরই নাগরিক। বাংলায় কথা বলেন, কারণ তাঁরা বাঙালি এবং পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। এর পরেও শেষ হয়নি হয়রানি। পুলিশ তিন জনকে নিয়ে যায় সহকরনগর থানায়। সেখানে সন্ধে পর্যন্ত তাঁদের আটকে রাখা হয়।

হুগলির বাসিন্দা রোশন ১৯৯৮ সাল থেকে পুণেতে রয়েছেন। তিনি ওই থানায় এই হয়রানি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু কোনও এফআইআর নেয়নি পুলিশ। রোশন তাঁর অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, সহকরনগর থানায় পুলিশ তাঁর মায়ের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নেয়। হুগলিতে তাঁকে ফোনও করে। রোশনের মা ফোনে জানান, তাঁরা হুগলির বাসিন্দা। ছেলে রোশন পুণেতে কাজ করে। এর পরেও সহকরনগরের পুলিশ, রোশনের মাকে বলে, কাছের কোনও থানায় যান। তাদের বলুন, আপনার পরিচয়ের প্রমাণ দিতে। রোশনের জন্ম যে ভারতে, তা-ও নিশ্চিত করতে বলুন সেখানকার পুলিশকে। রোশনের মা হন্তদন্ত হয়ে ছোটেন পান্ডুয়া থানায়। অনুরোধ করেন, তাঁরা যেন মহারাষ্ট্রের ওই থানায় ফোন করে কথা বলেন। পান্ডুয়ার পুলিশ ফোনে সহকরনগর থানাকে জানায়, রোশনের জন্ম ভারতে। সব মিটে যাওয়ার পরেও ওই থানায় সন্ধে ৬টা পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয় রোশনদের। হুগলির বাড়িতে উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগের প্রহর গুনতে থাকেন রোশনের মা- স্ত্রী-সন্তানেরা।

আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য মিশনের অধিকর্তা বদলি, বিতর্কেরই জের?

এমএনএসের লোকজন বলছেন, শীর্ষ নেতা রাজ ঠাকরেই আদেশ দিয়েছেন মহরাষ্ট্রে বেআইনি ভাবে বসবাসকারী পাকিস্তানি ও বাংলাদেশি মুসলিমদের বার করে দিতে। পুণের এসিপি সুরজেরাও ববর বলেছেন, ‘‘ওই তিন জন ভারতেরই নাগরিক। আমরা তাঁদের ছেড়ে দিয়েছি। এটা ঠিক তিন জনের এক জন এমএনএসের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেছেন। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’’ এমএনএস নেতা সচিন কাটকর এর পরেও বলেছেন, ‘‘ওখানে অনেক অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। আমরা ওই বাংলাদেশিদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। ওরা পরিচয়পত্র দেখিয়েছে। তবে নিশ্চিত ভাবেই ওগুলি জাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bengali MNS Maharashtra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE