Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Primary Recruitment case

চাকরি হল তিন দশক পর, কিন্তু ‘মাস্টারমশাই’ হওয়া হল না! পাওনা বুঝে নিতে পথে হুগলির সেই ‘বৃদ্ধেরা’

শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিতর্কের আবহেই ৬০ পেরোনোদের নামে, এমনকি মৃতদের নামেও, চাকরির নিয়োগপত্র যাওয়ার ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল জেলা জুড়ে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কামারকুণ্ডু শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৩০
Share: Save:

বাম আমলে ১৯৮৩ সালে প্রাথমিকের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও চাকরি মেলেনি। প্যানেলই বাতিল হয়ে গিয়েছিল। আইন-আদালত করেও তার সুরাহা হয়নি। তিন দশক ধরে অপেক্ষার পর আদালতের নির্দেশে চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছেন তাঁরা। কিন্তু ‘মাস্টারমশাই’ হওয়ার আর সুযোগ নেই। অবসরের বয়স পেরিয়ে গিয়েছে যে! এই পরিস্থিতিতে পাওনা আদায়ের দাবিতে পথে নামলেন হুগলির সেই বৃদ্ধেরা।

সম্প্রতি জেলার ৬৬ জনের নামে নিয়োগপত্র পাঠিয়েছে হুগলির প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। তাঁদের মধ্যে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিদের বয়সও ৬০ অতিক্রম করেছে। নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে তাঁদের কেউ কেউ ছুটে গিয়েছেন সার্কেল অফিসে। কিন্তু চাকরিতে যোগ দেওয়ার আর সুযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের দাবি, এত দিন ধরে লড়াইয়ের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। করতে হবে পেনশনের ব্যবস্থাও। না হলে প্রয়োজনে আবার আদালতে যাবেন তাঁরা।

শনিবার বিকেলে হুগলির কামারকুণ্ডু রেল মাঠে জমায়েত করেন সম্প্রতি প্রাথমিকের নিয়োগপত্র হাতে পাওয়া ওই প্রবীণেরা। সেখানে বৈঠক করে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করেন তাঁরা। তাঁদেরই এক জন কালীধন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা যোগ্য হয়েও তখন চাকরি পাইনি। আমাদের কথা কানে তোলেনি তৎকালীন সরকার। ফলে বার বার মামলা হয়েছে। আন্দোলন করতে গিয়ে জেল খেটেছি আমরা। শিক্ষা সংসদে গেলে খারাপ ব্যবহার জুটেছে। তবে আমরা হার মানিনি। আজ আদালত যখন রায় দিয়েছে, তখন আমাদের বয়স সবারই ষাট পেরিয়ে গিয়েছে। এখন বুঝতে পারছি না, নিয়োগপত্র পেয়েও আমরা চাকরি করতে পারব কি না। স্কুলে পড়াতে দিলে হয়ত পারব, কারণ এই বয়সেও আমরা মাঠে চাষ করি অনেকে। তবে আমরা চাই ক্ষতিপূরণ আর পেনশন। আমাদের প্রাপ্য দিয়ে দেওয়া হোক। যদি সংসদ থেকে সদর্থক কিছু না পাই, তা হলে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।’’

শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিতর্কের আবহেই ৬০ পেরোনোদের নামে, এমনকি মৃতদের নামেও, চাকরির নিয়োগপত্র যাওয়ার ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল জেলা জুড়ে। এই ঘটনায় তদন্তের দাবি জানিয়েছে বাম প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ। বিজেপির কটাক্ষ, অকর্মণ্যদের দিয়ে কাজ করালে এমনই হয়! এ নিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো না হলেও সূত্রের খবর, ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর কলকাতা হাই কোর্ট চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই মতোই নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে ৬৬ জনকে। তাঁদের চাকরিতে নিয়োগ কার্যকর হয়েছে ২০১৪ সালের ৮ অগস্ট থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Primary Recruitment Case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE