Advertisement
০২ মে ২০২৪
Dengue

জুড়ল ২ জেলা, মৃত আরও ৮

অনেক ক্ষেত্রেই দেরিতে রোগ শনাক্ত হওয়ার জন্য রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে পড়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে মৃতের আত্মীয়েরা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগও এনেছেন।

কষ্ট: কচি হাতে সুচ না ফুটিয়েও উপায় নেই। ভয় দেখাচ্ছে ডেঙ্গি। পার্ক সার্কাসের এক ক্লিনিকে রক্ত পরীক্ষা। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

কষ্ট: কচি হাতে সুচ না ফুটিয়েও উপায় নেই। ভয় দেখাচ্ছে ডেঙ্গি। পার্ক সার্কাসের এক ক্লিনিকে রক্ত পরীক্ষা। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৯
Share: Save:

ডেঙ্গি এবং জ্বরে মৃত্যুর ঘটনায় কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনার সঙ্গে এ বার যুক্ত হল দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হুগলিও।

বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জ্বরজনিত মৃত্যু মিছিলে যোগ হয়েছে আরও ৮টি নাম। এদের চার জনই উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার বাসিন্দা। দু’জন উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট এবং রাজারহাটের। বাকি দু’জনের একজন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর এবং অন্য জন হুগলির বৈদ্যবাটির বাসিন্দা। মৃত ৮ জনের মধ্যে একমাত্র রাজারহাটের লুৎফান বিবির ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি বলে লেখা হয়েছে। লুৎফান বৃহস্পতিবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে
মারা গিয়েছেন।

বাকি যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই এনএস-ওয়ান পজিটিভ নিয়ে ভর্তি হলেও এবং তাঁদের দেহে ডেঙ্গির সব রকম উপসর্গ থাকলেও ডেথ সার্টিফিকেটে কিন্তু মাল্টিঅর্গান ফেলিওর, কার্ডিও রেসপিরেটরি ফেলিওর বা রেসপিরেটরি শক উইথ মাল্টিঅর্গান ফেলিওর বলেই লেখা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশের পরে পুর দফতরের কর্মীরা আক্রান্ত এলাকায় গিয়ে বিশেষ নজরদারি শুরু করেছেন। পঞ্চায়েতগুলিকেও ডেঙ্গির সচেতনতা প্রচারে আরও সক্রিয় করা হয়েছে। কিন্তু তাতে ‘অজানা’ জ্বর কিংবা ডেঙ্গি সংক্রমণ থেমে নেই। অনেক ক্ষেত্রেই দেরিতে রোগ শনাক্ত হওয়ার জন্য রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে পড়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে মৃতের আত্মীয়েরা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগও এনেছেন।

বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত মৃত তিন জনই দেগঙ্গার বাসিন্দা। বেড়াচাঁপা-২ পঞ্চায়েতের যাদবপুর পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা রাবিয়া (রেহানা) বিবি (৩২), হাদিপুর ঝিকরা-২ পঞ্চায়েতের চকটাবেড়িয়া আনোয়াদহ দাসপাড়ার রিয়া দাস (৮) এবং বেড়াচাঁপা-১ পঞ্চায়েতের মির্জানগরের আমিন আলি মণ্ডল (৫৩)-রা জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। জ্বরের রোগী দেগঙ্গার বেড়াচাঁপার সর্দার পাড়ার হাসান আলি (৩২)-র মৃত্যু হয়েছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বসিরহাটের চৈতা পঞ্চায়েতের দক্ষিণ মালতিপুর গ্রামের বাসিন্দা লাইলি বিবি (২২) জ্বরে মারা গিয়েছেন।

বুধবার রাত সওয়া ন’টা নাগাদ বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হন রাজারহাট পানাপুকুরের লুৎফান বিবি (৩৬)। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত ওই মহিলার ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘মাল্টিঅর্গ্যান ফেলিওর ইন ডেঙ্গি’ লেখা হয়েছে।

জ্বরের রোগী দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ নমিতা গায়েন (২০)-এর মৃত্যু হয়েছে বুধবার রাতে। অভিযোগ, যে বেসরকারি
হাসপাতাল তাঁর রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে ডেঙ্গির উল্লেখ করেছে, তারাই কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গি লিখতে চায়নি! জ্বরেই রোগিণীর মৃত্যু হয়েছে বলে ডেথ সার্টিফিকেটে
লিখে দিয়েছে। উল্লেখই করা হয়নি ডেঙ্গি শব্দটি।

হুগলির বৈদ্যবাটি পুর এলাকায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে শ্রেয়সী বন্দ্যোপাধ্যায় (৩৯) নামে এক মহিলার। তাঁর রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে ‘এনএস ১ পজিটিভ’ হলেও ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গির উল্লেখ নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE