ফেনসিডিল পাচারের অভিযোগে ধৃত ডাকপিয়ন কবুল করেন, সাত-আট মাস ধরে তিনি এই চোরাচালান চালাচ্ছেন। প্রতীকী চিত্র।
মোটরসাইকেলে স্বরূপধা গ্রাম থেকে হাকিমপুরের দিকে যাচ্ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপাড়া ডাকঘরের পিয়ন তালাত মাহমুদ। সীমা চৌকি হাকিমপুরে তাঁকে থামিয়ে তল্লাশি শুরু করে বিএসএফ। সিল করা একটি পার্সেল খুলতেই বেরিয়ে পড়ে ৩৮টি ফেনসিডিলের বোতল! চোরাচালানের এই নয়া কৌশল দেখে সীমান্তরক্ষী জওয়ানদের চক্ষু চড়কগাছ! তৎক্ষণাৎ গ্রেফতার করা হয় ওই ডাকপিয়নকে।
গত মাসের ওই ঘটনায় সোনা পাচারের অভিনব কায়দা ধরা পড়ার পরে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গে হরেক কায়দায় সোনা ঢুকিয়ে পাচারের খবর প্রায়ই মেলে বিমানবন্দরে। গত বছর থেকে সীমান্ত এলাকাতেও শরীরের মধ্যে লুকিয়ে সোনা পাচারের ঘটনা সামনে আসতে শুরু করেছে বলে জানাচ্ছে বিএসএফ। চলতি মাসেই কৃষকের ছদ্মবেশে কাঁটাতারের ও-পার থেকে ট্র্যাক্টর চালিয়ে ফেরার সময় এক ব্যক্তিকে মুর্শিদাবাদের সীমা চৌকি অ্যাট্রেসিয়ায় পাকড়াও করেন সীমান্তরক্ষীরা। জানা যায়, আব্দুস সামাদ নামে মুর্শিদাবাদের ওই ব্যক্তির পায়ুদ্বারে সোনার বিস্কুট লুকোনো আছে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সামাদের পায়ুদ্বার থেকে ছ’টি সোনার বিস্কুট বার হয়।
এমনিতেই সোনা, ফেনসিডিলের মতো ছোট ছোট জিনিস লুকিয়ে নিয়ে যাওয়া সহজ। তার উপরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে চোরাকারবারিদের বিভিন্ন সামগ্রী পাচারের নিত্যনতুন কায়দা চিন্তা বাড়াচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্তাদের। বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের ডিআইজি এ কে আর্য বলেন, ‘‘গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ-পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তে শরীরের বিভিন্ন অংশে লুকিয়ে সোনা পাচারের ন’টি ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ডাকপিয়নের পার্সেলে ফেনসিডিল চোরাচালানের ঘটনা প্রথম।’’
বিএসএফ সূত্রের খবর, জেরায় ফেনসিডিল পাচারের অভিযোগে ধৃত ডাকপিয়ন কবুল করেন, সাত-আট মাস ধরে তিনি এই চোরাচালান চালাচ্ছেন। দু’-এক দিন আগে বিতরণ করা বড় বড় পার্সেলের বিবরণ তিনি লিখে রাখতেন। তার পরে বার কোড-সহ প্রেরক ও প্রাপকের বিবরণের নতুন প্রতিলিপি বার করে নকল পার্সেলে লাগিয়ে তাতে ভরতেন ফেনসিডিল। ওই ফেনসিডিলের বোতল স্থানীয় চোরাকারবারিদের কাছে বিক্রি করে মোটা টাকা আয় হত তাঁর। বিএসএফ-কর্তাদের ধারণা, আগেও তালাত এই কায়দায় চোরাচালান করেছেন। তিনি ধরা পড়ায় চোরাচালানের এই পদ্ধতি সামনে চলে এসেছে। গোটা বিষয়টিই খতিয়ে দেখছে বিএসএফ।
বিএসএফ সূত্রের খবর, গ্যাসের সিলিন্ডারে ফেনসিডিল চোরাচালান বা সাইকেলের টায়ারে লুকিয়ে সোনার বিস্কুট আনার কায়দা পুরনো বলে ধরা পড়ে যাচ্ছে। তাই চোরাচালানের নতুন নতুন পদ্ধতি আমদানি হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy