Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Noida Twin Tower

Noida Twin Tower: যমজ টাওয়ার ধ্বংসের গবেষক দলে পাঁশকুড়ার মৃণাল

বছর ছাব্বিশের মৃণাল আইআইটি-তে ‘সিভিল আর্থকোয়েক’ বিষয়ে গবেষণা করছেন। ‘প্রাইম মিনিস্টার রিসার্চ ফেলোশিপে’ তিনি নির্বাচিত হয়েছেন।

ধ্বংসস্তূপের সামনে মৃণাল (নীল জামা)।

ধ্বংসস্তূপের সামনে মৃণাল (নীল জামা)। নিজস্ব চিত্র।

দিগন্ত মান্না
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২২ ০৭:১৫
Share: Save:

‘‘প্রথমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। তার পরেই চোখের সামনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল টাওয়ার দুটো’’— দু’দিন পরেও বিস্ময় কাটেনি পাঁশকুড়ার যুবক মৃণাল ভৌমিকের। চৈতন্যপুর-১ এলাকার বাসিন্দা মৃণাল গত চার মাস ধরে নয়ডার ‘যমজ বহুতলে’ গবেষণারত আইআইটি মাদ্রাজের দলের সদস্য ছিলেন। এমন এক কর্মকাণ্ডের অংশ হতে পেরে খুশি মৃণালরা।

বছর ছাব্বিশের মৃণাল আইআইটি-তে ‘সিভিল আর্থকোয়েক’ বিষয়ে গবেষণা করছেন। ‘প্রাইম মিনিস্টার রিসার্চ ফেলোশিপে’ তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। নয়ডার ওই ‘যমজ টাওয়ার’ ভেঙে ফেলার জন্য সম্প্রতি নির্দেশ দেয় আদালত। সেই মতো প্রশাসনের তরফে শুরু হয়েছিল তোড়জোড়। আশেপাশের এলাকায় কোনও রকম ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া কুতুব মিনারের থেকেও উঁচু বহুতল দু’টি ভাঙার ক্ষেত্রে শুরু হয় নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি ওই গবেষণায় ডাক পায় মাদ্রাজ আইআইটি-র গবেষেক দল। সেই দলেরই সদস্য ছিলেন মৃণাল।

মৃণাল জানাচ্ছেন, তিনি-সহ চার জন পিএইচডি পড়ুয়াকে ওই কাজে নেন দুই অধ্যাপক তরুণ নস্কর এবং বুমিনাথন। মৃণাল জানালেন, বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট কম্পনে আশেপাশের ঘরবাড়ি, মাটির নীচের পাইপলাইনের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তাঁদের কাজ ছিল, বিস্ফোরণে কোন অংশগুলি থেকে বেশি কম্পন (ক্রিটিক্যাল জ়োন) তৈরি হতে পারে, তা চিহ্নিত করা এবং কম্পনের পরিমাণ অনুমান করা। কী ভাবে ওই কম্পন কমানো যেতে পারে, তা নিয়েও গবেষণা হয়েছে। মৃণাল জানান, এপ্রিলে যমজ বহুতলে ‘ট্রায়াল ব্লাস্টিং’ হয়েছিল। তখন তাঁরা কম্পনের ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করে রিপোর্ট দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত মূল সংস্থাকে।

গত রবিবার দুপুরে বিস্ফোরণের সময়ে ‘যমজ বহুতল’ থেকে ৫০০ মিটার দূরে অন্য একটি বহুতলের ছাদে দলের অন্যদের সঙ্গে ছিলেন মৃণাল। তাঁদের দেওয়া তথ্য এবং বিস্ফোরণের সময় তৈরি কম্পনের পরিমাণ সঠিক হয়েছে কি না, তা যাচাই করার জন্য যমজ বহুতলের অদূরে বসানো হয়েছিল বিশেষ যন্ত্র। বহুতল ধ্বংসের ৩০ মিনিট পর ধ্বংসস্তূপের কাছে গিয়ে মৃণালরা সেই যন্ত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। সূত্রের দাবি, মৃণালদের দেওয়া তথ্য এবং ধ্বংসের সময়ের তথ্য মিলে গিয়েছে। স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত গোটা দল।

ওই সব নথি নিয়ে মঙ্গলবার মাদ্রাজ আইআইটিতে ফিরে গিয়েছেন মৃণালরা। এ দিন ফোনে মৃণাল বলেন, ‘‘এ রকম বড় কাজে যুক্ত থাকতে পেরে সত্যি ভাল লাগছে। টানা চার মাস আমরা কাজ করেছি। যাবতীয় তথ্য আগামী প্রজন্মের স্বার্থে সংরক্ষণ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Noida Twin Tower Panskura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE