Advertisement
১৯ মে ২০২৪

ভাঙড়ে অধীর, আজ মিছিলে বাম-কংগ্রেসও

আজ, সোমবার কলকাতার কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মহামিছিলের ডাক দিয়েছে ‘ভাঙড় আন্দোলনের সংহতি কমিটি’ এবং ‘জমি-জীবিকা-বাস্তুরক্ষা কমিটি’।

গ্রামবাসীদের সঙ্গে অধীর চৌধুরী। ছবি: সামসুল হুদা

গ্রামবাসীদের সঙ্গে অধীর চৌধুরী। ছবি: সামসুল হুদা

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩৫
Share: Save:

পাওয়ার গ্রিড নিয়ে নকশালদের ভাঙড়-আন্দোলনের পাশে নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করতে এ বার উদ্যোগী হল কংগ্রেসও!

আজ, সোমবার কলকাতার কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মহামিছিলের ডাক দিয়েছে ‘ভাঙড় আন্দোলনের সংহতি কমিটি’ এবং ‘জমি-জীবিকা-বাস্তুরক্ষা কমিটি’। তার ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে, রবিবার সকালে ভাঙড়ের গ্রামবাসীরা যখন সেই মহামিছিলে যাওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছেন, তখন মাছিভাঙা গ্রামে গিয়ে আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

আন্দোলনকারীদের অধীর বলেন, ‘‘প্রয়োজনে আপনাদের নিয়ে দিল্লির যন্তর-মন্তরে গিয়ে ধর্না দেব। পাওয়ার গ্রিড কেন্দ্র সরকারের প্রকল্প। সেখানেই আলোচনার প্রয়োজন।’’ আন্দোলনকারীরা যাতে তাঁদের দাবির কথা রাজ্যপালের কাছে জানাতে পারেন, সে ব্যাপারেও উদ্যোগী হওয়ার কথা বলেন অধীর।

বস্তুত, শুধু কংগ্রেস নয়, ভাঙড়ের আন্দোলনের আঁচে এখন নিজেদের সেঁকতে চাইছে সব রাজনৈতিক দলই। ভাঙড় আন্দোলন থেকে ধৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং পাওয়ার গ্রিডের কাজ বন্ধের ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ সরকারি বিজ্ঞপ্তির দাবিতে আজকের মহামিছিলে যোগ দেবে সিপিএম এবং কংগ্রেস। মহামিছিলের ব্যানারে অবশ্য লেখা থাকবে— ‘প্রতিবাদের তিনটি নাম, সিঙ্গুর-ভাঙড়-নন্দীগ্রাম’। যা সিপিএমের পক্ষে অস্বস্তিকর হতে পারে। কিন্তু সিপিএম সূত্রের বক্তব্য, তারা এই আন্দোলনকে বৃহত্তর পরিসরে ছড়িয়ে দিতে চাইছে। ফলে পুরনো ‘কাঁটা’ নিয়ে তারা এখন সঙ্কীর্ণ বিভাজনে যেতে চাইছে না। আন্দোলনকারীদের আজকের মিছিলের জন্যই ভাঙড়ের কাছে সমাবেশ পিছিয়ে ২ ফেব্রুয়ারি করছে সিপিএম। এপিডিআর অবশ্য এ দিন জানিয়েছে, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম এবং লালগ়ড়ে যাঁদের ঘৃণ্য ভূমিকা ছিল, ভাঙড় আন্দোলনে তাঁদের উপস্থিতি তারা চাইছে না। ওই সময়কার ভূমিকার জন্য তাঁদের আগে ভুল স্বীকার করে ক্ষমাপ্রার্থনা করা উচিত বলে এপিডিআর-এর মত।

অধীর এ দিন স্থানীয় কংগ্রেস কর্মী শেখ নিজামুদ্দিনকে সঙ্গে করে ভাঙড়ের মাছিভাঙায় যান। গ্রামে ঢুকেই তিনি বলেন, ‘‘আমি বহিরাগত। কিন্তু আপনাদের আন্দোলনের পাশে রয়েছি।’’ ভাঙড় থেকে বেরিয়ে লাগোয়া রাজারহাটের লাউহাটিতে সভায় প্রদেশ সভাপতির বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকার পাওয়ার গ্রিড নিয়ে দালালি করছে। অবিলম্বে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসা উচিত।’’

মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘মানুষের কোনও ক্ষোভ থাকলে নিশ্চয়ই শুনব। ক্ষোভে বাইরের ইন্ধন আছে। ক্ষোভ নিরসনেরও ব্যবস্থা করব। বিভিন্ন সূত্রে ধরে ওখানে মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে। অনেকে বুঝেছেন, তাঁদের ভুল পথে পরিচালনা করা হচ্ছে।’’ আন্দোলন সামনে আসার পরে পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন তাঁর কাছে ওই প্রকল্পের সম্পূর্ণ ফাইল পাঠিয়েছে বলেও জানান শোভনদেববাবু।

তাঁর কথায়, “ওখানে ১৪১ জন উপভোক্তা আছেন। জমি কিনে পাওয়ার গ্রিড সাড়ে ১৯ কোটি টাকা দিয়েছে। এর ফলে কাঠাপিছু জমির দাম পড়েছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE