Advertisement
১৬ মে ২০২৪
WBBSE

নবমে ‘রেজিস্ট্রেশন’: মুচলেকা-বিতর্ক

মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রে দাবি, দীর্ঘ সময় ধরে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালানোর পরেও, অনেক ছাত্রছাত্রীর তথ্য স্কুলগুলি পরীক্ষার আগে পর্যন্ত পাঠাতে থাকে।

students

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

শান্তশ্রী মজুমদার
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:০৫
Share: Save:

দশ টাকার ‘নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারে’ হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, ‘স্কুলের সমস্ত পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে’। শুক্রবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন নিয়ে স্কুল প্রধানদের ওই নির্দেশ জারির পরে, শুরু হয়েছে বিতর্ক। অনেকে নির্দেশিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। অসুবিধা থাকলেও, তা মেনে নেবেন বলে জানাচ্ছেন অনেকে। পর্ষদ কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, ‘দায়িত্ববোধ’ বাড়াতেই এই পদক্ষেপ।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রে দাবি, দীর্ঘ সময় ধরে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালানোর পরেও, অনেক ছাত্রছাত্রীর তথ্য স্কুলগুলি পরীক্ষার আগে পর্যন্ত পাঠাতে থাকে। তাতে পরীক্ষা সঞ্চালনায় সমস্যা হয়। সে সব রেজিস্ট্রেশনে গোলমাল হলে, আইনি জটিলতাও বাড়ে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় শনিবার বলেন, ‘‘প্রত্যেকটি স্কুলকে দায়িত্ববোধে বাঁধতে চেয়েছি। তাই কি এত বিতর্ক! আপত্তি তোলা হচ্ছে? ভবিষ্যতের বিতর্ক এড়াতেই এই রাস্তা নিয়েছি আমরা।’’

উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ গ্রামীণ স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা পর্ষদের নির্দেশে চিন্তিত। তাঁদের দাবি, নবম শ্রেণিতে অনেকে ভর্তি হলেও, পরে আর মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে আসে না। দক্ষিণ দিনাজপুরের লোহাগঞ্জ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা প্রধান শিক্ষকদের একটি সংগঠনের নেতা মৃণাল কর্মকার বলেন, “মেয়েদের অনেকের বিয়ে হয়ে যায়। পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে ভিন্ রাজ্যে চলে যায় ছাত্রদের অনেকে। তাদের পাব কী ভাবে?”

এবিটিএ-র তরফেও প্রতিবাদ করা হয়েছে। সংগঠনের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তথা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সদস্য সুজিত দাসের মন্তব্য, ‘‘পর্ষদ অগণতান্ত্রিক ভাবে চলছে। মুচলেকার ব্যাপারে আমরা আন্দোলনে নামব।’’ এবিটিএ-র দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সম্পাদক অনিমেষ লাহিড়ীও বলেন, ‘‘আইনি পথে মিথ্যে কথা লিখতে বাধ্য করা হচ্ছে স্কুলগুলিকে। ‘সব পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছে’ বলে মুচলেকা দেওয়ার পরে আবার ৩০০ টাকা ফাইন দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে বলা হয়েছে, এটা স্ববিরোধী।’’ মালদহের আইহো হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ মিশ্র বলেন, “অনেক পড়ুয়াই নির্ধারিত সময়ের পরেও রেজিস্ট্রেশন করাতে স্কুলে আসে। তার আগে, সব পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে বলে যদি স্কুলের তরফে লিখিত দেওয়া হয়, তা হলে সে সব পড়ুয়াদের পরে রেজিস্ট্রেশন করাতে সমস্যা হতে পারে।”

শিলিগুড়ি লাগোয়া গোঁসাইপুর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রতীপ বসু বলেন, “পর্ষদের নির্দেশ মানতেই হবে, কিছু করার নেই। কিন্তু চরম অসুবিধা হবে কাজ তুলতে।”

তথ্য সহায়তা: অভিজিৎ সাহা, অরিন্দম সাহা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

WBBSE Students school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE